ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে ধরা যাচ্ছে না বিষয়টা ঠিক না। তার বাইরে যাওয়ার সব পথ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সে দেশেই আছে। আর যে কোনো মুহূর্তে তাকে গ্রেফতার করা হবে। গতকাল বুধবার কারা অধিদফতরে উদ্ভাবনী মেলা ও শোকেসিং অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এ সব কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
ডিআইজি মিজান প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ডিআইজি মিজান ঘুষ কেন দিয়েছে? নিশ্চয়ই তার কোনো দুর্বলতা আছে। তা না হলে সে ঘুষ কেন দেবে? দুর্বলতা ঢাকতে সে ঘুষ দিয়েছে। ঘুষ দেয়া-নেয়া দুটোই অপরাধ। ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে আগের অভিযোগের ভিত্তিতে বিচার এখনো প্রক্রিয়াধীন। এমনিতেই ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে একটি তদন্ত চলছে। এর মধ্যে আবার ঘুষ কেলেঙ্কারি। এ কেলেঙ্কারি যাচাই-বাছাই করে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ও আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ঘুষ দেয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হলে অবশ্যই তিনি দন্ডিত হবেন।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল গত ২৭ মে পরোয়ানা জারি করেন। ৩১ মে পরোয়ানার চিঠি ফেনীর পুলিশ সুপার কার্যালয়ে পৌঁছায়। কিন্তু পুলিশ সুপার কাজী মনির-উজ-জামান বারবার বিষয়টি অস্বীকার করতে থাকেন। একপর্যায়ে ৩ জুন রাতে পরোয়ানা হাতে পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন তিনি। এর দুই দিন পর বিশেষ বার্তাবাহকের মাধ্যমে পরোয়ানা রংপুর রেঞ্জে পাঠানো হয়। এখন আবার রংপুর রেঞ্জ বলছে, কাজটি বিধি মোতাবেক হয়নি।
চট্টগ্রাম কারাগারে খুন হওয়া অমিত মুহুরির হত্যাকান্ড তদন্তে গাফলতি আছে নিহতের পরিবারের এমন অভিযোগের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তদন্তে কোনো গাফলতি নেই। এঘটনায় ডিবি এবং পুলিশ তদন্ত করছে। জড়িতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। কেউ কিন্তু আইনের বাইরে নয়। জড়িতরা কেউ পার পাবে না।
মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহানকে গত ৬ এপ্রিল পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়। এর দিন দশেক আগে মাদরাসার প্রিন্সিপাল সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ জানাতে সোনাগাজী থানায় যান নুসরাত। থানার তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন সে সময় নুসরাতকে আপত্তিকর প্রশ্ন করে বিব্রত করেন এবং তা ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। ওই ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হলে আদালতের নির্দেশে সেটি তদন্ত করে পিবিআই। পিবিআই গত ২৭ মে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিলে ওই দিনই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়।
অন্যদিকে স¤প্রতি ডিআইজি মিজানের অবৈধ সম্পদের তদন্ত শুরু করেছিল দুদক। এজন্য দুদকের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরকে তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেয়। কিন্তু এই তদন্ত করতে গিয়ে এনামুল বাছির ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন ডিআইজি মিজান। এজন্য তিনি এনামুল বাছিরের সঙ্গে কথোপকথনের অডিও রেকর্ড প্রমাণ হিসেবে হাজির করেন। অভিযোগ ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দুদক। পরে কমিশনের শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও তথ্য পাচারের অভিযোগে এনামুল বাছিরকে সাময়িক বরখাস্ত করে দুদক।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন