বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

স্বাস্থ্য

মেথির যতগুণ

প্রকাশের সময় : ১ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

সুগারে যারা ভুগছেন, তাদের কাছে নতুন করে মেথির গুণগান গাওয়ার প্রয়োজন নেই। শুধু সুগার বলেই নয়, হার্টের রোগী থেকে মেয়েলি রোগ, চুল পড়া থেকে খুশকি, এমনকি রোগা হতে চাইলেও মেথির তুলনা নেই। * মেদ ঝরাতে মেথি- পরিশ্রম না-করে মোটাভাব কমাতে চাইলে, নিয়মিত মেথি খান। দিনে অন্তত দু থেকে তিনবার কিছুটা করে মেথি চিবিয়ে খেয়ে ফেলতে হবে। যারা পারবেন না, সকালে খালি পেটে মেথি ভেজানো দু-গ্লাস পানি খান। এক চামচ মেথি রাতেই পানিতে ভিজিয়ে রেখে দিন। এতেই কাজ দেবে। এতেই থাকা ন্যাচারাল ফাইবার পাকস্থলিকে পরিপূর্ণ রাখে। ফলে, ঘন ঘন খিদে পায় না। শরীরে বাড়তি ক্যালোরি না-যাওয়ায়-মেদ ঝরে এবং ওজন কমে। * গলাব্যথার স্বস্তি দেয়- গায়ে জ্বর জ্বর ভাব থাকলে, সেই সঙ্গে ঠা-া লেগে গলায় ব্যথা হলে, এক চামচ মধু ও পাতিলেবুর রসের সঙ্গে মেথি খেতে পারেন। * স্তনের আকার বাড়াতে- যে মহিলাদের স্তনের বিকাশ হয়নি, তারা তেলে মেথি ফুঁটিয়ে মালিশ করলে ভালো ফল পাবেন। স্তনের টিস্যু বিকাশে মেথি সহায়তা করে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মেথিতে থাকে ফাইটো-এস্ট্রোজেন। যার কাজ হল প্রোল্যাক্টিন বৃদ্ধিতে সহায়তা করা। এই প্রোল্যাক্টিনের কারণে স্তনের আকার বড় হয়। নিয়মিত মেথি খেলে মেয়েদের পিরিয়ডস নিয়ে সমস্যাও দূর হয়। * চুল পড়া বন্ধ করে-যাদের গোছা গোছা চুল ওঠে যাচ্ছে, মেথি ব্যবহার করে দেখতে পারেন। নারকেল তেলের সঙ্গে মেথিদানা ভালো করে ফুঁটিয়ে নিয়ে, তা ঠা-া করে, চুলের গোড়ায় ভালো করে মালিশ করুন। কিছুদিনের মধ্যেই চুল পড়া বন্ধ হবে। * বদহজম ভালো দাওয়াই- প্রায়ই যারা গ্যাস-অম্বলে ভোগেন, মেথি ব্যবহার করে দেখতে পারেন। পানির সঙ্গে কয়েকটি মেথিদানা খেয়ে ফেলুন বা মেথি ভিজিয়ে রেখেও খেতে পারেন। মেথির মধ্যে ফাইবার ও অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট থাকে। এগুলো শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক টক্সিনগুলোকে বাইরে বের করে দেয়। হজমে সাহায্য করে। * মেথির উজ্জ্বল ত্বক-মেথিদানা আমাদের শরীরের ফ্রি র‌্যাডিক্যালগুলোকে ধ্বংস করে। এই ফ্রি র‌্যাডিক্যালের কারণেই মুখে কালো দাগ হয়। বলিরেখা দেখা যায়। মেথি এই ফ্রি র‌্যাডিক্যালকে নষ্ট করে দেয় বলেই ত্বক উজ্জ্বল হয়ে উঠে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে মেথির ভূমিকা নিয়ে বিশেষজ্ঞ মহলে দ্বিমত নেই। যে-কোনো ডাক্তারই ওষুধের পাশাপাশি নিয়মিত মেথি খাওয়ার পরামর্শ দেন। মেথিদানার মধ্যে অ্যামাইনো অ্যাসিড যৌগ থাকে। যার কাজ হল অগ্ন্যাশয় থেকে ইনসুলিন নিঃসরণে সাহায্য করা। যে কারণে মেথি খেলে রক্তে শর্করার পরিমাণ কমে। * খুশকিতে নাজেহাল-বেশি চিন্তা করবেন না। মেথিতেই কাজ দেবে। সেই প্রাচীনকাল থেকেই খুশকির সমস্যা দূর করতে মেথি ব্যবহৃত হয়ে আসছে। রাতে পরিমাণমতো মেথি ভিজিয়ে রাখুন। সকালে মেথি ভালো করে বেটে নিন। সেই পেস্টটি চুলের গোড়ায় ও স্কাল্পে ভালো করে লাগিয়ে নিন। আধঘণ্টা পর ভালো করে ধুয়ে নিন। খুশকির সমস্যা অনেকটাই কমবে। টক দইয়ের সঙ্গে মেথি পেস্ট মিশিয়ে লাগালে আরও ভালো কাজ হবে। * গর্ভাবস্থায় মেথি-পরীক্ষায় দেখা গেছে, মেথিদানা গর্ভধারণ সংক্রান্ত নানা জটিলতা দূর করে। যে মেয়েরা গর্ভযন্ত্রণার ভয় পান, তাদের প্রসবের সময়ের কিছু আগে থেকে রোজ সামান্য পরিমাণ মেথিদানা খাওয়া উচিত। এতে গর্ভযন্ত্রণা শুধু কমই হয় না, একইসঙ্গে প্রসবও ঝঞ্ঝাটহীন হয়। তবে, একটা কথা মাথায় রাখবেন। গর্ভাবস্থায় খুব বেশি বেশি মেথি কখনোই খাবেন না। তাতে মিসক্যারেজ বা অকাল প্রসব হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। 

ষ আফতাব চৌধুরী
সাংবাদিক-কলামিস্ট।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন