বিরলে মধ্যযুগীও কায়দায় এক যুবককে গাছের সাথে বেঁধে দিনভর নির্যাতন করা হয়েছে। পূর্বের একটি তুচ্ছ ঘটনা কেন্দ্র করে তাঁকে গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতন করা হয়। নির্যাতিত যুবক উপজেলার শহরগ্রাম ইউপি’র চাপাই নওদাপাড়া গ্রামের মৃত কান্দুড়া চন্দ্র রায়ের পুত্র দিলীপ চন্দ্র রায় (৩০) বলে জানা গেছে। শুক্রবার সারাদিন তাঁকে নির্যাতন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা ।
প্রত্যক্ষদর্শী রাণী, মণি বালা, বৃষ্টিসহ অনেকে জানান, গত ৬ মাস আগে নির্যাতিত যুবক দিলীপের সাথে পাশের বাড়ির নিতাই চন্দ্র রায়ের কন্যা টেপেরী রাণী (১৩) এর সাথে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠার গুজবে উভয় পরিবারের সাথে মনমালিন্য সৃষ্টি হয় এবং ঐ ঘটনায় দিলীপ ভয়ে গত ৬ মাস ধরে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র পলাতক ছিল। দিলীপের পরিবারের লোকজন জানান, গত ১ মাস পূর্বে দিলীপ বাড়ি ফিরে এসে স্ত্রী-সন্তানদের সাথে নিয়ে সংসার পরিচালনা করে আসছিল।
শুক্রবার সকালে দিলীপ বাড়ি থেকে বের হয়ে আসলে পূর্বপরিকল্পিতভাবে পাশের বাড়ির নিতাই চন্দ্র রায়ের পুত্র শমেষ চন্দ্র রায়ের নেতৃত্বে তার ভাই বাবলু চন্দ্র রায়, নির্মল চন্দ্র রায় ও তার মামা একই উপজেলার ধামইড় ইউপি’র দারইল গ্রামের মৃত আন্ধারু চন্দ্র রায়ের পুত্র মন্টু চন্দ্র রায় মিলে দিলীপকে তুলে বাড়ি নিয়ে যায় এবং দিলীপকে বাড়ির ভিতরে থাকা কাঁঠাল গাছের সাথে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করে। খবর পেয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য রঞ্জন চন্দ্র রায় ও ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা অরুণসহ এলাকার লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে নির্মম নির্যাতনের প্রতিবাদ জানালে মেয়ের ভাই শমেষ ও তার লোকজন তাদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। বিকালে খবর পেয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান (মুরাদ) ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনিও ঐ যুবককে শারিরিক নির্যাতন করে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করে তাঁর কাছে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে ছেড়ে দেয়। এ ব্যাপারে তাঁর কাছে জানতে মুঠোফোনে বার বার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। নির্যাতনকারি শমেষ চন্দ্র রায়, বাবলু চন্দ্র রায়, নির্মল চন্দ্র রায় ও মন্টু চন্দ্র রায়ের নিকট জানতে চাইলেও তারা কোন কথা বলতে রাজি হননি।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সন্ধ্যায় যুবক দিলিপকে নির্যাতনের ব্যাপারে বিরল থানার ওসি এটিএম গোলাম রসূলের নিকট জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, বিষয়টি আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকের মাধ্যমে অবগত হয়েছি। অভিযোগ পেলে আমি এ বর্বর নির্যাতনের অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবো। তারপরেও ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠাচ্ছি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন