স্টাফ রিপোর্টার : ম্যানুয়ালি গাড়ির ফিটনেস পরীক্ষার পরিবর্তে চালু হচ্ছে ডিজিটাল পদ্ধতি। এজন্য দক্ষিণ কোরিয়ার সহযোগিতায় প্রায় ২৭ কোটি টাকা ব্যয়ে মিরপুর এলাকায় ডিজিটাল ভেহিক্যাল ইন্সপেকশন সেন্টার (ভিআইসি) চালু করা হয়েছে। সেন্টারে ইতিমধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে ফিটনেস পরীক্ষা করে দেখছে বাংলাদেশ রোডস ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ)। পুরোপুরি চালু হলে ঘণ্টায় ১৫টি গাড়ির ফিটনেস এখানে পরীক্ষা করা যাবে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এটি পুরোপুরি চালু হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
গত রোববার ভিআইসি পরিদর্শনকালে ডিজিটাল এ পদ্ধতির বিভিন্ন কার্যক্রম ঘুরে দেখেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী। মনিটরের সামনে দাঁড়িয়ে একটি পরীক্ষার বিভিন্ন ধাপও পর্যবেক্ষণ করেন তিনি। বিআইসি পরিদর্শন শেষে মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানান, বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো গাড়ির ফিটনেস পরীক্ষা পদ্ধতি ডিজিটাল করা হলো। এটি শুরু হলে দালালি বন্ধ হবে অনেকটা। সরাসরি গাড়ি নিয়ে এসে কম্পিউটারের মাধ্যমে গাড়ির ফিটনেস দেখা হবে। ওয়েবপোর্টালের মাধ্যমে গাড়ি চেক করা যাবে। পর্যায়ক্রমে বিআরটিএ’র ইকুরিয়া, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও খুলনা অফিসের মোটরযানের ফিটনেস পরীক্ষা ডিজিটালাইজড করা হবে।
বিআরটিএ’র সচিব শওকত আলী জানান, একটি গাড়ির ফিটনেস চেক করতে ডিজিটাল ভেহিক্যাল ইন্সপেকশন (ভিআইসি) পদ্ধতিতে মাত্র ১০ থেকে ১৫ মিনিট সময় লাগবে। এতে দুই লেন করা হয়েছে তাই একই সঙ্গে একই সময়ে চলবে দু’টি গাড়ির ফিটনেস পরীক্ষা। ঘণ্টায় করা যাবে ৮টি গাড়ির ফিটনেস পরীক্ষা। এতে দিনে অর্ধশত গাড়ির ফিটনেস পরীক্ষা সম্ভব।
বিআরটিএ’র কর্মকর্তারা জানান, ম্যানুয়ালি ব্রেক, বডি, সিট, হেডলাইট দেখে ফিটনেস পরীক্ষা করা হয়। আর যান্ত্রিক পদ্ধতিতে প্রথমেই জ্বালানি টেস্ট, এরপর স্পিড, হেডলাইট, ব্যালেন্স চেক করা হবে। ৫ থেকে ৬টি টেস্ট সম্পন্ন হওয়ার পর মনিটর স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে ফলাফল দেখাবে। সে অনুসারে ফিটনেস সার্টিফিকেট দেখাবে।
বিআরটিএ’র সচিব জানান, আগে যেভাবে খালি চোখে গাড়ির ফিটনেস দেখা হতো, তাতে মারাত্মক ত্রুটি ছিলো যে, গাড়ির জ্বালানি (সিলিন্ডার) পরীক্ষা করা যেত না। যা দেখা হতো তা ওই খালি চোখ দিয়ে। ডিজিটাল পদ্ধতিতে শুরুতেই যে পরীক্ষা হবে সেটি গ্যাস সিলিন্ডার ঠিক আছে কি-না, তা পরীক্ষা করা হবে। পুরো প্রক্রিয়াটি বিশেষ সফটওয়ারের মাধ্যমে সম্পন্ন হবে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বিশাল ওয়ার্কশপ গ্যারেজের মতো একটি শেডের নিচে দু’টি লেন করে লাইন ধরিয়ে গাড়ি ঢোকানো হবে। অন্যদিক দিয়ে পরীক্ষা শেষে গাড়ি বের হয়ে যাবে।
বিআরটিএ’র কর্মকর্তারা জানান, কোরিয়ান এই প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন বিআরটিএ’র ১৫ জন পরিদর্শক। দেশে এবং কোরিয়াতে এ প্রশিক্ষণ হয়েছে। আরও কয়েকজনকে দক্ষ করে তুলতে ট্রেনিং দেয়া হচ্ছে। মিরপুরে বিআইসি মেশিন স্থাপনে কোরিয়ার কোইকা ব্যয় করছে ২৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা এবং বাংলাদেশ সরকার ব্যয় করছে ২ কোটি ৮৪ লাখ টাকা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন