মেয়াদ শেষ হলেও ৪ লাখ ৫৮ হাজার ৩৬৯টি গাড়ির লাইসেন্স নবায়ন করেনি বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ)। তবে দেশে ফিটনেসবিহীন গাড়ি এবং লাইসেন্সবিহীন ড্রাইভারের সঠিক সংখ্যা নেই প্রতিষ্ঠানটির কাছে। হাইকোর্টে হাজির হয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন বিআরটিএ’র পরিচালক ( রোড সেফটি) শেখ মোহাম্মদ মাহবুব-ই রাব্বানি। গতকাল সোমবার বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার এবং বিচারপতি কেএম হাফিজুল আলমের ডিভিশন বেঞ্চে তিনি এ তথ্য উপস্থাপন করেন। গত ২৭ মার্চ একই বেঞ্চ এ কর্মকর্তাকে হাজির হয়ে তথ্য প্রদানে রুল জারি করেন। তবে গতকাল পূর্ণাঙ্গ তথ্য প্রদানে ব্যর্থ হওয়ায় আদালত তাকে ভর্ৎসনা করেন। রাজধানীসহ সারাদেশে ফিটনেসহীন গাড়ী এবং ড্রাইভিং লাইসেন্সবিহীন চালকের বিরুদ্ধে বিআরটিএ কি ব্যবস্থা নিয়েছে এ কর্মকর্তার কাছে আদালত সেটি জানতে চান। লাইসেন্স নিয়ে নবায়ন না করা গাড়ী ও চালকের বিস্তারিত তথ্য আগামি ২৩ জুলাইয়ের মধ্যে প্রতিবেদন আকারে দাখিল করতে বিআরটিএ’কে নির্দেশ দেন।
আদালত বিআরটিএ পরিচালকের উদ্দেশ্যে বলেন, আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি কি দেশের সড়কে বেহাল দশার জন্য। সিঙ্গাপুরের দিকে তাকান। আমাদের কাছাকাছি সময়ে স্বাধীনতা অর্জন করার পরও তারা কত উন্নতি করেছে। সিঙ্গাপুরে কি বাংলাদেশের মতো দুর্ঘটনা ঘটে? বাংলাদেশে কেন এত দুর্ঘটনা ঘটছে? আমেরিকায় কি এমন দুর্ঘটনা ঘটছে? ইংল্যান্ডে কি ঘটছে? আদালত আরো বলেন, বিআরটিএ ছাড়াও দেশে পুলিশ আছে, পুলিশের নাকের ডগার ওপর দিয়ে এসব অনিয়ম হচ্ছে। পরিচালককে বলেন, অফিসে বসে বসে মিটিং আর শুধু কি চা খাইলে হবে? দেশপ্রেম থাকতে হবে। বিআরটিএ কি করে? আমরা কেন ডাকবো ? ডাকতে হবে কেন? তারা (বিদেশিরা) পারছে, আমরা পারছি না কেন? আমরা সোনার বাংলা গড়তে চাই। কিন্তু কোনো পরিবর্তন লক্ষ্য করছি না। গতকাল আদালতে সরকারপক্ষে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল একেএম আমিনউদ্দিন মানিক। বিআরটিএ’র পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মঈন ফিরোজী।
প্রসঙ্গত: গত মার্চে দেশের ফিটনেসবিহীন গাড়ি ও সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে একটি জাতীয় দৈনিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেটি আমলে নিয়ে হাইকোর্ট গত ২৭ মার্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে সরকারের প্রতি রুলনিশি জারি করেন। রুলে সংবিধানের ৩২ নম্বর অনুচ্ছেদের আলোকে বেঁচে থাকার অধিকার বাস্তবায়নে কেন মোটর ভ্যাহিকল অধ্যাদেশ-১৯৮৩ এর বিধানসমুহ প্রতিপালনের নির্দেশনা দেয়া হবে না-জানতে চাওয়া হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন