এম বেলাল উদ্দিন, রাউজন (চট্টগ্রাম) থেকে : দুই হাজার ২২ সালের মধ্যে রাউজানের প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ করা হবে। এই সময় থেকে রাউজান ও রাঙ্গুনিয়ার মানুষ রেলে চড়ে শহরে যাওয়া আসা করতে পারবে। মহানগরের মোহরার ওয়ার্ডের কাজীর হাট রেল স্টেশন থেকে প্রস্তাবিত স্টেশন মদুনাঘাট (হালদা)-নোয়াপাড়া হয়ে রেল যাবে চুয়েট পর্যন্ত। রেলের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা যায়, দক্ষিণ রাউজান রেললাইন সম্প্রসারণের এই প্রকল্পটি এখন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। আশাবাদ করা হচ্ছে সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ’২২ সাল নাগদ রাউজানের মানুষ ও চুয়েট শিক্ষার্থীসহ সকলেই রেলে চড়তে পারবে।
সূত্র মতে, কাপ্তাই সড়কে যানবাহন স্বল্পতায় মানুষের সার্বক্ষণিক দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এই সমস্যায় আক্রান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে পরিবহন শ্রমিকদের বিভিন্ন সময় অনাকাংঙ্খি ঘটনা ঘটে। এই সড়ক পথে মানুষের চাপ ও দীর্ঘদিনের যানবাহন সংকটের কথা বিবেচনায় নিয়ে রেলপথ সম্প্রসারণের এই উদ্যোগ নিয়েছেন রেলপথ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি। জনস্বার্থে নেয়া এই গুরুত্ব প্রকল্পটি তিনি এখন দ্রুত বাস্তবায়নের উপর জোর দিয়ে কাজ করছেন। প্রস্তাবিত প্রকল্প পরিকল্পনায় রাউজানের রেলপথের জন্য প্রায় একশ’ ৪০ একর ভূমি রেলওয়েকে অধিগ্রহণ করতে হবে। এছাড়া প্রকল্পের অন্যান্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়নে (বর্তমান সময়ে বাজার দর হিসাবে) প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১৮শ’ কোটি টাকা।
সূত্রে জানা যায়, ইতিমধ্যে এই প্রকল্পের জরিপ কাজ চূড়ান্ত করে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এখানে থেকে অনুমোদন পাওয়ার পর অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের প্রয়োজনীয় কাজ শেষে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে।
জানা যায়, চুয়েট কর্তৃপক্ষও রাউজানে রেল লাইন সম্প্রসারণের প্রকল্পটি দ্রুততার সাথে বাস্তবায়ন প্রত্যাশা করে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, চুয়েট-এর সাথে সংশ্লিষ্ট রয়েছে ত্রিশ হাজার লোক। এছাড়া রয়েছে রাউজান ও রাঙ্গুনিয়ার মানুষজন। এই এলাকার জনসাধারণের অনুপাতে সড়কে যানবাহনের সংখ্যা অপ্রতুল। মদুনাঘাট পর্যন্ত মহানগরের আওতাভুক্ত হবে। মহানগরের সাথে রাউজানের সীমান্ত হওয়ায় এখানে প্রতিদিন বাড়ছে জনসংখ্যার চাপ। সৃষ্টি হচ্ছে নতুন নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠান। আগামী দু’এক বছরের মধ্যে রাউজানের পাহাড়তলীতে ও নোয়াপাড়ার আশেপাশ এলাকায় প্রতিষ্ঠা পাচ্ছে ছোট ও মাঝারী ধরনের পোশাক কারখানা।
এছাড়া রাউজানের এমপিদের বিশেষ প্রচেষ্টা রয়েছে পাহাড়তলীতে আই ভ্যালেজ করার। চুয়েট এলাকায় প্রতিষ্ঠা পাচ্ছে আইটি পার্ক। এসব বিবেচনায় তিনি রাউজান পর্যন্ত রেলপথ সম্প্রসারণ খুবই জরুরী ও অতিদ্রুত বাস্তবায়ন করা দরকার বলে মনে করছেন। রাউজানের এই প্রকল্প নিয়ে কথা বললে রেলপথ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি বলেন রাউজানে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে এদিকে রেলওয়ের জন্য লাভবান হবে, অন্য দিকে চুয়েটসহ এ অঞ্চলের মানুষের যানবাহন ভোগান্তি দূর হবে। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম-ঢাকা রেল পথ সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। স্থাপন করা হচ্ছে আধুনিক প্রযুক্তিতে রেল চালানোর সবকিছু। কাজ শেষ হলে এই লাইনে ভারতের মত বৈদ্যুতিক সংযোগে দ্রুতগতির রেল চলানো হবে। এই পথে ভ্রমণকারীগণ দুই ঘন্টার মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম যাতায়াত করে দৈনন্দিন কাজ সেরে নিতে পারবে। এছাড়া রেলওয়েতে নতুন নতুন কোচ ও ইঞ্জিন সংযুক্ত হচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন