রাজধানীতে স¤প্রতি বেড়েছে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ। এই রোগ প্রতিরোধে মশা নিধনের কার্যক্রমে সফল হতে না পারলে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের মেয়রকে পদত্যাগ করার আল্টিমেটাম দিয়েছে ‘গৌরব ৭১’ নামে একটি সংগঠন। গতকাল শুক্রবার রজাধানীর শাহবাগে সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনটির উদ্যোগে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে এ আল্টিমেটাম বেঁধে দেওয়া হয়।
কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, ডেঙ্গু মহামারি আকার ধারণ করেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মতে, প্রতিদিন গড়ে ১৫০ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন। সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তারা মশা মারার জন্য বরাদ্দকৃত টাকা পর্যন্ত আত্মসাৎ করেছেন। যে কারণে এখন তারা বলছেন, মশা মারার ওষুধে মশা মরে না। এমন মন্তব্য নগরপিতাদের (মেয়র) কাছ থেকে আশা করা যায় না। আমাদের দাবি মেয়ররা যদি এই একটি কাজ (মশা নিধন) সম্পাদন করতে না পারেন, তাহলে তাদের পদত্যাগ করে এমনকি ঢাকা শহর ছেড়ে চলে যেতে হবে।
বক্তারা আরও বলেন, সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তাদের দায় অস্বীকার করার ব্যাপক প্রবণতা রয়েছে। তারা বারবার বলেছেন, ডেঙ্গু জ্বরের কোনো প্রকোপ নেই। কিন্তু এ বছর ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ শুরু থেকেই ছিল। তাই তাদের অনুরোধ করবো, মশা নিধনের প্রকল্প জোরদারভাবে হাতে নিন। আমাদের দাবি, এখন থেকে এই মশা মারার ব্যাপারে কী কী পদক্ষেপ নিচ্ছেন তা জনগণকে জানাতে হবে। নইলে জনগণ ক্ষেপে গেলে পরিণতি ভালো হবে না।
প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ ছাড়া দেশে কোনো কাজ বাস্তবায়েত হয় না উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, প্রতিটা উন্নয়নমূলক কাজে দেশের প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ প্রয়োজন পড়ে। এক্ষেত্রেও প্রধানমন্ত্রীকে হস্তক্ষেপ করার অনুরোধ জানাচ্ছি। তা না হলে মনে হয় ডেঙ্গু প্রতিরোধ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব হবে না। প্রধানমন্ত্রী আপনিই মেয়দের বলেন, দয়া করে- তারা যেন মশা মারার টাকাটা কমপক্ষে আত্মসাৎ না করেন। আপনি লক্ষ্য করুন অর্থমন্ত্রী বাজেট উপস্থাপন করতে পারেননি এই রোগের (ডেঙ্গু জ্বর) কারণে। যেযজন্য বাজেট আপনাকে উপস্থাপন করতে হয়েছিল। তাছাড়া অনেক মানুষ এখন এই রোগে কষ্টে আছে। এই কষ্ট দূর করতেই আপনার হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
সংগঠনের সভাপতি মনিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস, সাংবাদিক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজাসহ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ভুক্তভোগী ও সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে সৈমি নূর নামের ৩ বছর বয়সী এক শিশু ডেঙ্গু জ্বরে মারা যায়। বিক্ষোভ সমাবেশে সৈমির মা গুলশান আরা বলেন, আমার বাচ্চা ৩ বছর ১ মাস ১৭ দিন বয়সে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। ৩০ ঘণ্টা জ্বরে ভোগার পর তাকে হাসপাতালে নিলে ৩৮ ঘণ্টা পর ডেঙ্গু চিহ্নিত হয়। আর একদিন পর সৈমিকে আইসিইউতে নেয়া হয়। ওর টাইপ-৩ ডেঙ্গু ছিল। আমাদের বাসা আগারগাঁও এলাকায়। আমার বাসায় সবসময় মশা প্রতিরোধকারী ব্যবস্থা থাকে। বাসায় এসিতেও পানি জমার কোনো সুযোগ নেই। তাহলে মশা অবশ্যই বাইরে থেকে এসেছে। এজন্যই আমরা বলছি, জনগণ যথেষ্ট সচেতন আছে, এখন শুধু দরকার সরকারের পদক্ষেপ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন