চট্টগ্রাম ব্যুরো : জনপ্রিয় পুলিশ অফিসার পুলিশ সদরদপ্তরে বদলি হওয়া পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খাতুন মিতুকে (৩২) গুলি করে হত্যা করেছে অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা। রোববার সকাল ৭টার কিছুটা আগে বন্দরনগরীর ও আর নিজাম রোডে এই নৃশংস খুনের ঘটনা ঘটে। শিশুপুত্রকে স্কুল বাসে তুলে দিতে বাসা থেকে বের হয়ে ওয়েল ফুডের সামনে সড়কে আসতেই তিন দুর্বৃত্ত তাকে মোটর সাইকেল দিয়ে প্রথমে ধাক্কা দেয় পরে ছুরিকাঘাত ও গুলি করে। মাথায় পরপর তিনটি গুলি করে মৃত্যু নিশ্চিত করে ঘাতকরা মোটর সাইকেল যোগে পালিয়ে যায়। নিজের সামনে মায়ের খুনের ঘটনা দেখে দৌঁড়ে বাসার সামনে চলে যায় শিশুপুত্র। চট্টগ্রাম অঞ্চলের সাধারণ মানুষের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়, সৎ দেশপ্রেমিক ও মেধাবী এই পুলিশ অফিসারের স্ত্রীকে প্রকাশে রাস্তায় গুলি করে হত্যার খবরে সর্বত্র শোকের ছায়া নেমে আসে। পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তা সেখানে ছুটে যান। বাবুল আক্তারের বাসায় স্বজনদের কান্নার রোল উঠে। মিতু এক পুত্র ও এক কন্যা সন্তানের জননী। স্ত্রীর এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সময় বাবুল আক্তার কর্মস্থল ঢাকায় ছিলেন। আজ রোববার পুলিশ সদরদপ্তরে পুলিশ সুপার হিসাবে তার যোগদানের কথা ছিলো। স্ত্রীর লাখ দেখতে তিনি দুপুরের আগেই চট্টগ্রাম ফিরে আসেন। এসময় তার কান্নায় পরিবেশ ভারী হয়ে উঠে। নিজের জীবন বাজি রেখে লাখো মানুষের জীবনের নিরাপত্তা দিয়েছিলেন বাবুল আক্তার। অথচ নিজের স্ত্রীকে এভাবে সন্ত্রাসীদের হাতে প্রাণ দিতে হলো। বাবুল আক্তার বলেছেন ব্যক্তিগতভাবে কারো সাথে তার কোন বিরোধ নেই। তার কোন শত্রুও নেই। পরপর দুই বার পুলিশের সর্বোচ্চ পদকপ্রাপ্ত এই কর্মকর্তা ব্যক্তিগত জীবন সৎ এবং সাধারণ জীবন যাবন করতেন। তবে পুলিশ কর্মকর্তাদের ধারণা বাবুল আক্তার চট্টগ্রাম মহানগরীসহ এই অঞ্চলে দায়িত্ব পালনকালে তিনি অনেক সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী চক্র, মাদক ব্যবসায়ী ও অস্ত্রধারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালন করে সফল হন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি সৎ ও সাদাসিধে হলেও সন্ত্রাসী মাদক ব্যবসায়ী ও অস্ত্রধারীদের কাছে মূর্তিমান আতংক। জঙ্গি বিরোধী অভিযানেও তার ভূমিকা ছিল। এসব কারণে কোন পক্ষ পরিকল্পিতভাবে এই খুনের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে ধারণা করছেন নগর পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা। তবে এখনও কাউকে আটক করা যায়নি। লাশ মর্গে রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন