মহিপুরে সরকারি খাস জমি দখল করে নির্মাণ করা হচ্ছে পাকা আধা পাকা অসংখ্য স্থাপনা। দিনে দুপুরে ফ্রি স্টাইলে চলছে এসব স্থাপনার কাজ। অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালী ও স্থানীয় তহসিল অফিসের কর্তাদের ম্যানেজ করে কতিপয় ভ‚মি দস্যুরা এসব স্থাপনা তুলছেন। চলছে দখলের মহোৎসব। ফলে বেদখল হচ্ছে সরকারি জমি।
জানা যায়, মহিপুর বাজারে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) প্রায় ১০ একর জমি রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশ জমি বর্তমানে বেদখল রয়েছে। এদিকে ভ‚মি অফিসের রয়েছে ৯.২৩ একর জমি। এর মধ্যে বেশির ভাগই প্রভাবশালী মহলের দখলে রয়েছে। এছাড়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের শেখ রাসেল সেতুর নিচের জমি দখল করে প্রায় অর্ধশতাধিক অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ভ‚মি অফিসের একমাত্র খাস পুকুরটি দখল করে তোলা হয়েছে প্রায় অর্ধশত দোকান ঘর। তহসিল অফিসের নিজস্ব পুকুরটিও দখল করে তোলা হয়েছে প্রায় আট-দশটি দোকান। অদৃশ্য কারণে পুকুরটি রক্ষায় তহসিল অফিসের কর্মকর্তারা নিচ্ছে না উদ্যোগ। এছাড়া মহিপুর বাজারের পানি উন্নয়ন বোর্ডের কালি বাড়ি পুকুরের চার পাশ দখল করে প্রায় শ’ খানেক আবাসিক বাড়ি ঘর ও দোকান নির্মাণ করা হয়েছে। এর মধ্যে এখানে প্রভাবশালী এক জনের চার তলা ভবনও রয়েছে।
এদিকে শেখ রাসেল সেতুর সপ্তাপসহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের জায়গা দখল করে অসংখ্য অবৈধ স্থাপনা তোলা হয়েছে। শেখ রাসেল সেতুর সøপে বর্তমানে অনেক স্থাপনা নির্মাণাধীন রয়েছে। এছাড়া মহিপুর ফেরিঘাট, মধ্য বাজারসহ বেশ কয়েকটি স্থানে কয়েকশ’ পাকা আধা পাকা স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। মহিপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গেটের বিপরীতে জমি দখল করে নতুন স্থাপনার কাজ চলছে। সব মিলিয়ে মহিপুর বাজারের বিভিন্ন স্থানে সরকারি জমি দখল করে ঘর তোলার হিড়িক চলছে।
মহিপুর এস আর ও এস বি লিমিটেডের সভাপতি ওমর ফারুক আকন জানান, তাদের সমিতির সামনে সড়ক ও জনপথ বিভাগের জায়গা দখল করে একটি অবৈধ স্থাপনা তুলেছে শানু মাঝি নামে এক ব্যক্তি। এভাবে মহিপুর বাজারের বিভিন্ন স্থানে সরকারি জমি দখল করে প্রায় দুইশতাধিক অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে।
মহিপুর ইউনিয়ন ভ‚মি অফিসের উপ-সহকারী ভ‚মি কর্মকর্তা আজিজুর রহমান (তহসিলদার) বলেন, পূর্বতন ইউনিয়ন ভ‚মি কর্মকর্তারা এক বছরের বন্দোবস্ত দিয়ে গেছেন। আর এ সুযোগ কাছে লাগিয়ে বন্দোবস্ত গ্রহীতারা পাকা স্থাপনা তুলেছে। স্থানীয় প্রভাবশালীদের সহায়তায় একের পর এক নতুন স্থাপনা উঠছে। এর বিরোধিতা করায় আমার পূর্বতন কর্মকর্তাকে ন্যাক্কারজনকভাবে বিদায় নিতে হয়েছে। আমি যোগদানের পর সকল বিষয় ঊর্ধ্বতনদের অবহিত করেছি।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিবুর রহমান বলেন, মহিপুরের যে সমস্ত খাস পুকুর ও খাস জমি বেদখল হয়ে গেছে তা উদ্ধারে খুব দ্রুত এবং জোরালো পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে কোন প্রভাবশালীকে ছাড় দেয়া হবে না।
পানি উন্নয়ন বোর্ড কলাপাড়া সার্কেলের নির্বাহী প্রকৌশলী খান মো. অলিউজ্জামান বলেন, আমাদের সকল বন্দোবস্ত প্রক্রিয়া বন্ধ রয়েছে। মহিপুরে যেসব বন্দোবস্ত দেয়া হয়েছে তার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। এখন যেসব স্থাপনা রয়েছে তা সম্পূর্ণ অবৈধ। ইতোমধ্যে এসব উচ্ছেদের জন্য জেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের পটুয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী শাহ মোহাম্মদ শামস মোকাদ্দেস বলেন, যারা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নাম ভাঙিয়ে অবৈধ স্থাপনা তুলেছেন তাদের বিরূদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন