তরল বর্জ্য ফেলে হালদা নদী দূষণের দায়ে চট্টগ্রামের হাটহাজারীর ১০০ মেগাওয়াট পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্টকে ২০ লাখ টাকা জরিমানা করেছে পরিবেশ অধিদফতর। একইসঙ্গে তরল বর্জ্য পরিশোধনাগার (ইটিপি) ও অয়েল ওয়াটার সেপারেটর স্থাপন না করা পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ রাখারও আদেশ দেয়া হয়েছে।
গতকাল বুধবার পরিবেশ অধিদফতর চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসাইন নিজ দফতরে বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের সহকারি পরিচালক (কারিগরি) মুক্তাদির হাসান বলেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রের তরল বর্জ্য ফেলে মরছড়া খাল হয়ে হালদা নদীর পানির সঙ্গে মিশে যাওয়ার প্রমাণ পাওয়ার পর তাদের শুনানিতে হাজিরের নোটিশ দেয়া হয়েছিল। শুনানি শেষে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ এর ৭ ধারায় ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ভারি বর্ষণের মধ্যে গত ৮ জুলাই হাটহাজারী উপজেলার এগারো মাইল এলাকায় বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে তরল বর্জ্য ছেড়ে দেয়া হয়। খবর পেয়ে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুহুল আমীন সেখানে যান এবং পরিবেশ অধিদফতরে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। ওইদিনই পরিবেশ অধিদফতরের একটি টিম ঘটনাস্থলে যায়। তারা দেশের কার্প জাতীয় মাছের একমাত্র প্রজননক্ষেত্র হালদায় বর্জ্য আসার প্রমাণ পান। এ বর্জ্য পানির সঙ্গে মিশে হালদায় মা মাছের বিচরণ ও প্রদজননকে হুমকির মুখে ফেলছে বলে অভিযোগ পরিবেশ অধিদফতরের কর্মকর্তাদের।
২০১২ সালের মার্চের শেষ সপ্তাহে ফার্নেস অয়েলচালিত সরকারি এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চালুর পর ওই বছরই দুই দফা কেন্দ্রটিকে পরিবেশ দূষণের অভিযোগে নোটিশ দেয়া হলেও কোনো কাজ হয়নি।
জানা গেছে, ওই সময় দূষণের অভিযোগে প্ল্যান্টটিকে ১০ লাখ টাকা জরিমানাও করা হয়েছিল। পরবর্তীতে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ইটিপি নির্মাণের শর্তে জরিমানা মওকুফ করা হয়। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইটিপির নকশার অনুমোদন নেয়া হলেও তা এখনও নির্মাণ করা হয়নি। ইটিপি এবং অয়েল সেপারেটর না থাকায় পাওয়ার প্ল্যান্টটির বর্জ্য মরা খালের মাধ্যমে হালদা নদীতে মিশছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন