চট্টগ্রাম লালদীঘি মাঠে জমেছে বৃক্ষমেলা। বৃক্ষ প্রেমীদের পদচারণায় মুখরিত মেলা প্রাঙ্গণ। ক্রেতাদের বেশি চাহিদা আম, লিচু, লেবু, কাঁঠাল ও ডায়াবেটিক চারার। মেলায় প্রতিদিন বিভিন্ন প্রজাতির লাখ টাকার চারা বিক্রি হচ্ছে। সর্বোচ্চ দামের চারার মধ্যে রয়েছেঃ বনসাই-বটের চারা ৩০ হাজার টাকা, মাতাকুয়া ৩ হাজার ৫শ’ টাকা এবং সর্বনিম্ন তুলসি ২০ টাকা।
মেলায় ফলদ চারার মধ্যে আমসহ ৫ হাজার টাকা, বুনাই কিং ১ হাজার টাকা, মালটাসহ ৫ হাজার টাকা, মালটা ছাড়া ২শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সবচেয়ে ভাল বিক্রি হচ্ছে ডায়াবেটিক গাছের চারা, দাম রাখা হয়েছে ১শ’ টাকা। বাহাদুর নার্সারীর সত্বাধিকারী মাইনুল হাসান জানান, প্রতিদিন মেলায় লাখ টাকার চারা বিক্রি হচ্ছে। বেশি বিক্রি হচ্ছে ফলদ ও ডায়াবেটিক গাছের চারা।
‘শিক্ষায় বন প্রতিবেশ, আধুনিক বাংলাদেশ’ এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের উদ্যোগে ১৩ জুলাই থেকে এ বৃক্ষমেলা শুরু হয়েছে। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের সহায়তায় বন বিভাগ এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যৌথভাবে বৃক্ষরোপণ অভিযান, বনজ ও ফলদ বৃক্ষমেলা-১৯ বাস্তবায়ন করছে।
চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের শহর রেঞ্জের সহকারী রেঞ্জ কর্মকর্তা ফরেস্টার অসীম কান্তি দাশ জানান, বৃক্ষমেলায় ক্রেতা দর্শকের ভিড় দিন দিন বাড়ছে। বৃক্ষমেলা শুরুর প্রথম দিকে প্রবল বৃষ্টির কারণে ক্রেতা সাধারণের ভিড় কম দেখা গেলেও এখন প্রচুর বৃক্ষের চারা বিক্রি হচ্ছে। গতকাল রোববার পর্যন্ত ৩০ লাখ টাকার বিভিন্ন প্রজাতির অর্ধ লক্ষাধিক চারা বিক্রয় হয়েছে।
নার্সারী স্টলগুলোর তথ্য অনুসারে ১৮ হাজার ২ শত বনজ, ১৬ হাজার ৮ শত ফলদ, ৪ হাজার ৮ শত ঔষধি বা ভেষজ, ১২ হাজার ৫ শত শোভাবর্ধনকারী, অন্যান্য প্রজাতির প্রায় ১১ হাজার ৭ শত চারা বিক্রয় হয়েছে। এবারের মেলায় অন্যান্যবারের তুলনায় বেশি চারা বিক্রি হচ্ছে জানিয়ে চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের সিনিয়র নকশাকার দেবাশীষ দত্ত জানান, মেলা প্রতিদিন সকাল ৯টা হতে রাত ৯টা পর্যন্ত উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। বন বিভাগের নিয়ন্ত্রণ কক্ষে ৩ শিফটে ২৪ ঘণ্টা বন বিভাগের কর্মকর্তাগণ দায়িত্ব পালন করছেন।
তিনি জানান, মেলায় বন বিভাগের আকর্ষণীয় মডেলে পাহাড়, জনপদ, ঝুম, লেক, মৎস্য চাষ, বিভিন্ন বাগান, ক্যাবল কার, বন্যপ্রাণী, বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউটের বাঁশ চাষ পদ্ধতি ও নির্মাণ কৌশল মডেল, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ফলদ প্রদর্শনী, নার্সারীতে টবের গাছে কাঁচা-পাকা ফল, ফুল, অর্কিড, ক্যাকটাস ইত্যাদি মেলায় আগত দর্শক ও ক্রেতাদের মুগ্ধ করছে। প্রতিদিন অন্তত ২ হাজার ক্রেতা ও দর্শনার্থীর সমাগম ঘটছে।
বৃক্ষমেলায় চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের নিয়ন্ত্রণ ও তথ্য কেন্দ্র, পুলিশ কন্ট্রোল রুম স্থাপনসহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউট, বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ, বনরূপা নার্সারীসহ সরকারি-বেসরকারি ৫০টি স্টল স্থান পেয়েছে। মেলা আগামী ২৭ জুলাই পর্যন্ত চলবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন