খুলনায় বিএনপি’র বিভাগীয় মহাসমাবেশ ছিল তৃতীয় মেয়াদে আ.লীগ সরকারের শাসন ব্যবস্থার রানওয়ের প্রথম সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা। এটি যেন বিএনপি’র জন্য অন্ধকারের মাঝে নতুন আলোকবর্তিকা। এ এক অন্যরকম টার্নিং পয়েন্ট। নেতা কর্মিরা দীর্ঘদিন পরে উজ্জীবিত হয়েছে। বাধা উপেক্ষা করে বেগম জিয়ার মুক্তির বারতা নিয়ে রাজপথে নেমেছে। ¯েøাগানে মুখরিত করেছে পিঞ্জর ছেঁড়া পাখির মত।
টানা তৃতীয় মেয়াদের আ.লীগ শাসনামলে গত দু’বছর খুলনাঞ্চলে এত বড় শোডাউন হয়নি। আর বর্তমান প্রেক্ষাপটে হামলা মামলা কাধে নিয়ে বিএনপি নেতাকর্মিরা মাঠ গরম করতে পারবে কি না তা নিয়ে সংশয়ে ছিল পর্যবেক্ষক মহল। গত বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার পর খুলনা মহানগরীর দৃশ্যপট পাল্টে যায়। শহরের প্রাণকেন্দ্রে সৃষ্টি হয় জন অরণ্য। বেলা ২টার মহাসমাবেশ ২টা ৪৫ মিনিটে শুরু হলেও বৃষ্টি শুরু হয় প্রথম থেকেই। ফলে মাঠের নেতাকর্মিরা প্রথম দিকে একটু হোঁচট খেলেও চারিদিক দিয়ে মিছিল আর মিছিলে পরিপূর্ণ হয়ে যায় আশপাশের এলাকা। যেসব নেতাকর্মি কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে আসতে ভয় পেত তারাও ¯েøাগানে মুখরিত করে সভাস্থলে এসেছে বীরদর্পে।
খুলনা জেলা বিএনপি নেতা জিয়াউর রহমান জিকু ইনকিলাবকে বলেন, এ সমাবেশ নেতাকর্মিদের ভয়ভীতিকে জয় করেছে। যেসব নেতাকর্মি আওয়ামী দু:শাসনে পালিয়ে বেড়াত তারা যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে।
নাগরিক নেতা এ্যাড. সাইদুর রহমান বলেন, বিএনপি নেতাকর্মিরা সমাবেশ ঘিরে চাঙ্গা হয়েছে। কিন্তু এ চাঙ্গাভাব ধরে রাখার দায়িত্ব হাইকমান্ডের। দলের শীর্ষ নেতারা সাধারণ নেতাকর্মির মামলা মোকাদ্দমার খোঁজখবর না নিলে তারা হতাশ হয়ে পড়ে। যে কারণে ভয়কে জয় করা তৃণমূলের এসব নেতাকর্মিদের নার্সিং করা এখন খুবই জরুরি।
বৃহত্তর খুলনাঞ্চল মূলতঃ সুস্থ ধারার আঞ্চলিক রাজনীতিতে বিশ্বাসী। বিশেষ করে খুলনায় বিএনপি আওয়ামীলীগের সহাবস্থান অনেকটা শান্তিময় অন্যান্য স্থানের তুলনায়। খুলনায় শেখ পরিবারের বসবাস থাকলেও এ অঞ্চলে রাজনীতির সহিংসতা অপেক্ষাকৃত কম। সেক্ষেত্রে সমাবেশের ঢেউ গ্রামেগঞ্জে যেভাবে আছড়ে পড়েছে তা কাজে লাগানো জরুরি বলে মনে করেন সাবেক বিএনপি নেতা মো. এনামুল হক। তিনি বলেন, এ উৎসাহ উদ্দীপনাকে কাজে লাগিয়ে বেগম জিয়া মুক্তি আন্দোলন তৃণমূল পর্যায়ে বেগবান করা সম্ভব।
খুলনার সাবেক মেয়র ও মহানগর বিএনপি সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি বলেন, সরকারের চাপের মুখে অত্যাচার অনাচারে যেসব নেতাকর্মি ঘরছাড়া ছিল। পলাতক ছিল। তারা সমাবেশের মাধ্যমে যেন হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার সুরে রাজপথে আসতে শুরু করেছে। আন্দোলনের ক্ষেত্রে এটিকে একটি পজিটিভ বিজয় বলে মনে করি।
জেলা বিএনপি সভাপতি এ্যাড. শফিকুল আলম মনা বলেন, বিএনপি জনগনের দল। বেগম জিয়ার সাথে, জনগনের সাথে বিএনপি একটি অভিন্ন আত্মা। এ সমাবেশ তারই অংশ। জনগন হাজারও চাপের মুখে ফুঁসে উঠেছে। জেগে উঠেছে। আমাদের পরিশ্রম স্বার্থক হচ্ছে। বেগম জিয়ার মুক্তি আন্দোলন বেগবান হচ্ছে। খুব শিগগিরি আমরা আলোর মুখ দেখতে পাব।
মহানগর বিএনপি সভাপতি সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, বেগম জিয়ার মুক্তির জন্য লাখো মানুষ আজ রাজপথে। এ সমাবেশ ছিল খুলনাঞ্চলের মানুষের জন্য টার্নিং পয়েন্ট। প্রায় লক্ষাধিক লোকের জনসমাগম প্রমাণ করে এ সরকার ক্ষমতায় থাকার সকল অধিকার হারিয়েছে। আমরা প্রতিটি জেলা উপজেলায় কর্মসূচি পালন করব। আর বেগম জিয়াকে মুক্ত না করে কেউ ঘরে ফিরব না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন