স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন পবিত্র মাহে রমজান মাসে খাদ্যে ক্ষতিকর রঙ না মেশানোর জন্য দোকানিদের প্রতি আহŸান জানিয়ে বলেছেন, যারা খাদ্যে ভেজাল কিংবা ক্ষতিকর রঙ মেশানোর সাথে জড়িত থাকবেন তাদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। অভিযুক্ত দোকানিদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর চকবাজার শাহী মসজিদের সামনের ইফতার বাজার পরিদর্শনকালে মৌসুমি ইফতার বিক্রেতা ও স্থানীয় ইফতার বিক্রেতাদের উদ্দেশ্যে এ কথা বলেন। এময় তিনি দোকানে সাজানো হরেক রকমের ইফতার সামগ্রীর গুণগত মান পরীক্ষা ও যাচাই বাছাই করে দেখেন এবং মেয়র দোকানিদের সাথে নানা বিষয়ে কথা বলেন।
দোকানিদের বিশুদ্ধ খাবার সরবরাহের ফজিলত বর্ণনা করে সাঈদ খোকন বলেন, পবিত্র রমজান মাসে খাদ্যে ক্ষতিকর রঙ মেশানো ও ভেজাল খাদ্য বিক্রি করা কোনো মানুষের কাজ হবে না। খাদ্যে ভেজাল এবং ক্ষতিকর রঙ মেশানোর দায়ে অভিযুক্ত দোকানিদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
রাজধানীর পুরান ঢাকায় বরাবরের মতো এবারও রমজানের প্রথম দিনের চোখে পড়েছে ইফতারের নানা আয়োজনের চিত্র। চকবাজার এলাকায় একবার না ঘুরে গেলে বাস্তব দৃশ্যটা বুঝা যায় না।
জানা গেছে, ঐতিহ্যবাহী চকবাজার এলাকায় ইফতারি নিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোকজন আসে। তবে এই ইফতার বাজারের বেশিরভাগ ক্রেতা আশপাশে এলাকার বাসিন্দারাই। এই বাজার থেকে ইফতার না নিলে যেন কেমন অপূর্ণতা থেকে যায় তাদের মধ্যে।
স্থানীয় বাসিন্দা হাজী ইসমাইল হোসেন জানান, ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ইফতারির জমজমাট বাজার বসে চকবাজারের শাহি মসজিদের সামনের সড়কে। শাহ বা রাজাদের আমল থেকেই শুরু হয়েছে এই ইফতারির বাজার। দেশের দূর-দূরান্ত থেকে অনেকেই এই বাজারে ইফতার নিতে আসে। এবারও নতুন সাজে সেজেছে ইফতারির বাজার। এই বাজারের ইফতারের কদর দিন দিন বাড়ছে বলে জানান তিনি।
অস্থায়ী ব্যবসায়ী জানে আলম বলেন, আমার বাপ-দাদারা এই বাজারে ইফতারি বিক্রি করেছে। সেই সুবাদে আমি এই বাজারে ২০ বছর ধরে ইফতার সামগ্রী বিক্রি করি আসছি। সারা দেশে আমাদের চকবাজারের ইফতারির সুনাম আছে। তাই মানুষ এ বাজার থেকে ইফতারি নিতে আসে।
তিনি বলেন, আমরা একমাস ব্যবসা করি। যা আমাদের সারা বছর চলে। তবে রমজান মাসে অনেক সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে দুই একজন ব্যবসায়ীকে জরিমানা করা হয়। এতে সবার বদনাম হয়।
ইফতার কিনতে আসা কয়েকজন ক্রেতার সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, আসলে বাসায় তৈরি করার চেয়ে চকবাজার থেকে ইফতার কিনে নিতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন তারা। এটা একটা ঐতিহ্যে পরিণত হয়ে গেছে। ইফতার কেনার জন্য প্রত্যেকের আলাদা বাজেটই থাকে। তাছাড়া প্ল্যান পরিকল্পনাও থাকে কবে কোনো আইটেম দিয়ে ইফতার করা হবে। ইফতার কিনতে এসেছেন নাজিরা বাজারের এমরান হোসেন। তিনি বলেন, আসলে এখানকার শাহী জিলাপির জন্য এসেছি। ইফতার আইটেমে শাহী জিলাপি হলে তার মজাটাই আলাদা।
বিভিন্ন ইফতার সামগ্রীর আইটেমের মধ্যে ঐতিহ্যবাহী বড় বাপের পোলায় খায়, পেঁয়াজু, শাহি জিলাপি, সুতি কাবাব, জালি কাবাব, টিকিয়া, মুরগি, খাসির রোস্ট আরো বাহারি নামের ও স্বাদের কাবাব উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও রয়েছে বেগুনি, আলুর চপ, ডিমের চপ, ছোলা ও ঘুগনি।
দুপুরের পর থেকে বাজারে বেচাকেনা শুরু হয়ে যায়। চলে ইফতারের পর পর্যন্ত। চকবাজারে এবার ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় ২৫০ থেকে ৩০০টি দোকান ইফতার সামগ্রী বিক্রি করছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন