শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

‘বাড়িতে আসাটাই যখন ঈদ উৎসব’

চান্দিনা (কুমিল্লা) উপজেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ১১ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০০ এএম

ঈদ উপলক্ষে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ঘরমুখো মানুষের চাপ কয়েক গুণ বড়েছে। মানুষের চাপ সামাল দিতে সমহারে বেড়েছে যানবাহনের সংখ্যাও। তবে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কোথাও কোন যানজট নেই ।

প্রিয়জনের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে গ্রামের বাড়ি ছুটতে মানুষ। যানজটমুক্ত সড়কে স্বাচ্ছন্দ্যে ও নির্বিঘে্ন এবার ঈদ যাত্রা শুরু হয়েছে। সড়কে শত বাধা, ঝামেলা, আর শত কষ্টকে পাত্তা না দিয়েই ঈদ উদযাপনে নাড়ির টানে গ্রামে ফিরছে মানুষ। গতকাল শুক্রবার সকাল থেকেই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের প্রতিটি বাসস্ট্যন্ডে যাত্রীদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।

শুধু রাজধানী থেকেই নয়, দেশের অন্যান্য স্থান হতেও রেল ও সড়কপথে মানুষজন গ্রামের বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছে। এতে বাড়তি যাত্রীর চাপে কিছুটা দুর্ভোগ হলেও কুমিল্লায় পৌঁছে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন তারা। কুমিল্লার তফাজ্জল হোসেন, চাকরি করে সিরাজগঞ্জ জেলায় একটি বেসরকারি কোম্পানীতে। তিনি কোম্পানীতে মার্কেটিং অফিসার পদে কর্মরত থাকায় কর্মের কারণে তিনি বছরে একবার বাড়ি যাওয়া হয়ে উঠে না কাজের চাপে। ঈদ এলে ক’টা দিন ছুটি পাওয়া যায় তাই পরিবারের টানে ছুটে এসেছেন নিজ গ্রামে। তিনি বলেন, মা -বাবার সাথে ঈদ করার আনন্দই আলাদা। ছোট বেলায় তো গ্রামেই আমরা ঈদ করতাম। চাকরির কারণে এখন নিজ ভিটামাটি থেকে অনেক দূরে। তাই এ ছুটিতে নিজের পরিবারের সদস্যদের সাথে ঈদ করতে পারার আনন্দটা বলে বুঝাবার মত নয়।

আবার অনেক পরিবার রয়েছে যারা স্থায়ীভাবে ছেলেমেয়ে ও মা-বাবাকে নিয়ে ঢাকায় বসবাস করে। তারাও এ ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে বিশেষ করে নানা বাড়ি বা দাদা বাড়িতে ছুটে আসছে পড়শী বা নিকট আত্মীয়দের সঙ্গে ঈদ করতে। এ সময় তারা মাইক্রোবাস ও প্রাইভেট কার ভাড়া করে একদিন বা দুদিনের জন্য ছুটে আসছে কুমিল্লার বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে। একটু বেশি ছুটি পেয়ে যারা আরো তিন-চারদিন আগে কুমিল্লা এসেছে তারা তাদের বন্ধু-বান্ধব ও বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কেউবা বুক মিলিয়ে ঈদের আগাম শুভেচ্ছা বিনিময় করছে।

শহরের তালপুকুর পাড় এলাকার বাসিন্দা ও ঢাকা বিএআইবিএসের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী নাদিম ৪/৫ দিন পূর্বে বাড়িতে এসছেন বাবা-মায়ের সঙ্গে ঈদ করতে। তিনি জানান,‘পড়াশোনার চাপে বাড়িতে আসা যায় না, ঈদ উপলক্ষে ছুটি পেয়ে দীর্ঘদিন পর বাড়িতে আসাটাই আমার কাছে ঈদ উৎসব।’ শহরের অশোকতলা এলাকার ঢাকার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী সোহানুর রহমান মঙলবার ঈদের ছুটিতে বাড়িতে এসেছেন ঈদ করতে। তিনি জানান, ‘ঈদের আনন্দ উপভোগ করব দীর্ঘদিন পর বুধবার বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিয়ে রিল্যাক্স মুডে আছি।

এছাড়াও শহরের বিভিন্ন আড্ডার পয়েন্টে বেড়েছে বন্ধুদের ভিড়। কোথাও গোল হয়ে আবার কোথাও বা একসঙ্গে দাঁড়িয়ে আড্ডা চলছে শহরের টাউন হলের মাঠে, ভিক্টোরিয়া কলেজের সামনে, জিলা স্কুলের মাঠে, মসজিদের সামনে এ রকম আরো অনেক জায়গায়। সেসব জায়গায় পরিকল্পনা চলছে ঈদের দিনে কিভাবে কি করা যায়। সবমিলিয়ে ঈদের ছুটিতে কুমিল্লার সর্বস্তরের মানুষের জীবনে বয়ে আনে বাঁধভাঙা আনন্দের অনুভূতি। এদিকে শহর ও গ্রামের মুদি দোকানগুলোতে বাড়তি জায়গা নিয়ে বসানো হয়েছে ঈদের স্পেশাল বাজারের নানা ব্রান্ডের সেমাই, গরম মসলাসহ রকমারি সামগ্রী। সকাল থেকে গভীর রাত অবধি ছোট্ট শহরে মানুষের আনাগোনা। পরিচিত মুখের সঙ্গে কুশল বিনিময় আর জড়িয়ে ধরে শুভেচ্ছা বিনিময় চলছে। সব মিলিয়ে কুমিল্লার চারিদিকে বইছে ঈদের আমেজ

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন