ঈদ শেষ হলেও কুড়িগ্রামে যাত্রীদের কাছ থেকে চলছে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়। নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে দ্বিগুণ/তিনগুণ ভাড়া আদায় করছে যানবাহন কর্তৃপক্ষ। বাস মালিক-শ্রমিকদের কাছে এক প্রকার জিম্মি হয়ে পড়েছে ভুক্তভোগী যাত্রীরা।
জানা যায়, কুড়িগ্রাম থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, বরিশালসহ বিভিন্ন রুটে দিনে-রাতে মিলিয়ে প্রায় দেড়শ’টি দূরপাল্লার বাস যাতায়াত করে। ঈদ উপলক্ষে অতিরিক্ত আরো অর্ধ শতাধিক দূরপাল্লার যানবাহন যাত্রী পরিবহন করছে। গড়ে ২শ’ টি যাত্রীবাহি বাসে ৪০ জন যাত্রী হিসেবে ৮ হাজার যাত্রী ঈদের ছুটি শেষে নিজ নিজ কর্মস্থলে ফিরছেন। এ সময় যানবাহনগুলো থেকে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে প্রতিটি টিকিটে কমপক্ষে বাড়তি ৫শ’ টাকা করে আদায় করছে। এই হিসেবে দিনে ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত অর্থ আদায় হচ্ছে কমপক্ষে ৪০ লাখ টাকা। ঈদের পরদিন থেকে রোববার পর্যন্ত এক সপ্তাহে বাড়তি ভাড়া হিসেবে প্রায় ২ কোটি ৮০ লাখ টাকা লুটে নিল।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হাসিবুল হাসান জানান, দূরপাল্লার যাত্রীবাহি বাসে অভিযান চালিয়ে দেখা যায় টিকিট প্রতি অতিরিক্ত ৫শ’ থেকে ৮শ’ টাকা আদায় করা হয়েছে। এজন্য ৮টি বাসে জরিমানা আদায় করা হয় ৯৫ হাজার টাকা এবং এই বাসের দুই ড্রাইভারকে ত্রæটিপূর্ণ লাইসেন্সের কারণে আরো ১ হাজার ৩শ’ টাকা জরিমানা করা হয়।
জেলা মোটর মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান বকসী জানান, কুড়িগ্রাম থেকে প্রতিদিন প্রায় দেড় শতাধিক দূরপাল্লার বাস যাত্রী পরিবহন করছে। ঈদ উপলক্ষে বাইরে থেকে আরও অনেক বাস যাতায়াত করছে। এসব দূরপাল্লার যাত্রীবাহি বাসে কমপক্ষে ৬০ শতাংশের রুট পারমিট নেই।
জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মজিদুল ইসলাম সরদার মোবাইল কোর্টে হাজির হয়ে এ জরিমানার ব্যাপারে আপত্তি তুলে বলেন, বাসগুলো যাত্রী বোঝাই ঢাকায় গেলেও ফিরতি পথে আসতে হয় যাত্রী শূন্য ভাবে। এ কারণে লোকসান ঠেকাতে বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।
অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের শিকার হওয়া জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি একেএম সামিউল হক নান্টু বলেন, এনা পরিবহনে এসি বাসে টিকিট মূল্য ১ হাজার ৪শ’ টাকা হলেও তার কাছ থেকে ২ হাজার টাকা আদায় করা হয়েছে। সিনিয়র তথ্য অফিসার নুরন্নবী খন্দকার বাবলা একই অভিযোগ করে বলেন, তার দুটি টিকেটে অতিরিক্ত ১ হাজার ২শ’ টাকা আদায় করা হয়। অপর যাত্রী ভুরুঙ্গামারী .প্রেসক্লাবের সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম জানান, বিআরটিসি বাসের একটি টিকিটে অতিরিক্ত ৭শ’ টাকা আদায় করা হয়।
হক স্পেশাল কাউন্টারের ম্যানেজার হেলাল জানান, ফিরতি পথে যাত্রী কম হওয়ায় প্রতিটি টিকিটে অতিরিক্ত তিনশ টাকা নেয়া হচ্ছে।
মোবাইল কোর্টের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারি কমিশনার সুদীপ্ত কুমার সিংহ জানান, যাত্রীদের কাছে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক মোছা: সুলতানা পারভীন’র নির্দেশে শহরের জেলা পরিষদ মার্কেট ও ঘোষপাড়ায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন