স্টাফ রিপোর্টার : রোজার সময় রাজধানীর দোকান ও রাস্তায় হরেক রকমের ইফতরি খাবার দিয়ে সাজানো থাকে। অনেকে ইফতারির জন্য মাথাপিছু হাজার টাকার বাজেটের বরাদ্দ রাখে। অনেকে ১০ টাকার মধ্যে ইফতারি শেষ করে। আবার অনেকের এটারও সামর্থ্য নেই। ফুটপাতের ইফতারের দোকান থেকে ৫-১০ টাকার ইফতারি কিনেই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে রাজধানীর হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীকে। রাজধানীর বস্তিগুলোয় কয়েক লাখ মানুষকে খানিক চিঁড়া-মুড়ি দিয়ে ইফতার সারতে হয়। পলিথিনের প্যাকেটে ছোলা, মুড়ি, একটি করে বেগুনি, জিলাপি এবং খেজুর। সব মিলিয়ে তাদের ইফতারির বাজেট ১০ টাকা।
রমজানের বিকাল থেকেই কারওয়ান বাজারের রেললাইন বস্তিতে বসে ইফতারির পসরা। ইফতারে কী আয়োজন রয়েছে তা জানতে চাইলে রেললাইন সংলগ্ন বস্তির বয়স্ক এক ব্যক্তি বলেন, আইজ পাঁচ ট্যাহার চিঁড়া আর মুড়ি কিনছি। যেদিন কিছু আনতে না পারি, হেইদিন পান্তাভাত খাইয়া রোজা ভাঙি। অপর একজন মহিলা বলেন, মানুষের বাসায় কাম করি, তারা যা ইফতারি করে, সেখান থেইক্যা একটু দেয়। মাঝে মইধ্যে ভালোমন্দ খেতে দেয়। সেই ইফতার এনে ৮ বছর বয়সী ছেলে ও ৬ বছর বয়সী মেয়েকে খেতে দিই। নিজে কোন রকম মুড়ি, পানি খেয়েই পার করে দিতে হয়।
রাজধানীর উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোয় ইফতারের আয়োজনে রকমারি আয়োজন থাকে। এরই ঠিক উল্টোচিত্র হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর ইফতারের তালিকা। রাজধানীর এসব বস্তিবাসীর কাছে ধবধবে সাদা মুড়ি, জিলাপি, পেঁয়াজু, বেগুনি, ছোলা, হালিম এবং আলুর চপ অনেক দূরের ব্যাপার। রোজা ও অনাহার-অর্ধাহার তাদের জীবনে একাকার।
দরিদ্র, ছিন্নমূলসহ লাখো মানুষ ইফতারি না কিনতে পেরে প্রতিদিন মাগরিবের আজানের আগে আগে মসজিদ, দোকান ও মানুষের বাসার দরজায় ভিড় জমান। সারাদিন রোজা শেষে ইফতারির জন্য এই রাজধানীর অসংখ্য মানুষ এক গøাস বিশুদ্ধ পানি জোগাড়ের জন্যও সংগ্রামে নামেন। এভাবেই কেটে যাচ্ছে তাদের রমজান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন