প্রতারক চাচার খপ্পরে পড়ে সর্বস্ব হারিয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন সরকারি ইডেন মহিলা কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর পাস করা রংপুরের পীরগাছার হেলেনা বেগম। বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে হেলেনার বাড়িতে গিয়ে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সরেজমিনে তদন্ত করেন।
হেলেনা বেগম (৩০) পীরগাছা উপজেলার কৈকুড়ী ইউনিয়নের মকরমপুর গ্রামের মৃত আব্দুল হামিদের মেয়ে।
সোমবার বিকেলে রংপুরের এডিসি জেনারেল (সার্বিক) এনামুল হাবিব, পীরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমীন প্রধান ও পীরগাছা থানার ওসি রেজাউল করিম হেলেনার বাড়িতে গিয়ে তার খোঁজখবর নেন এবং চিকিৎসার জন্য নগদ অর্থ প্রদান করেন। এ সময় তারা হেলেনা ও তার পরিবারের নিরাপত্তা ও আইনগত সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
হেলেনার পরিবার সূত্রে জানা যায়, হেলেনা বেগম ২০১২ সালে ইডেন কলেজে ভর্তি হন। পড়াশোনার পাশাপাশি চাকরি করতেন উদরাময় গবেষণা কেন্দ্রের স্বাস্থ্য প্রকল্পে। ২০১৪ সালে পিতার মৃত্যুর পর সংসারের হাল ধরেন হেলেনা বেগম। বাড়িতে থাকা দুই বোনকে বিয়েও দেন তিনি। ২০১৬ সালে স্নাতকোত্তর শেষে প্রতিবেশী চাচা তারা মিয়া তাকে জসিম নামের একজনের সাথে বিয়ের প্রস্তাব দেন। পরে চাচা তারা মিয়া পাত্র জসিমের চাকরির জন্য আগাম যৌতুক হিসেবে হেলেনার রোজগার ও গ্রামের বিভিন্ন এনজিও থেকে উত্তোলন করা ঋণের আট লাখ টাকা হাতিয়ে নেন।
ঐ প্রতারকদ্বয় বিয়ের নামে তালবাহানা করে হেলেনাকে কয়েক বার হত্যার চেষ্টা চালান। এতে করে মানষিকভাবে বিপর্যস্তসহ রোগে-শোকে কাতর হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন হেলেনা।প্রতিবেশীরা বিষয়টি জানতে পেরে ঢাকা থেকে হেলেনাকে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে এসে গত ১ আগস্ট রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। হাসপাতালে কয়েকদিন চিকিৎসার পর অর্থ সংকটে গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসেন হেলেনা। বর্তমানে তিনি অসুস্থতা নিয়ে তার বাড়িতে অবস্থান করছেন।
হেলেনার ফুফা ফেরদৌস আলম জানান, ‘লম্পট তারা মিয়া ও জসিম উদ্দিন হেলেনার সাথে প্রতারণা করেছেন। হেলেনা বেগম মুমূর্ষু অবস্থায় বাড়িতে অবস্থান করছেন। তার চিকিৎসার ব্যয়ভার চালানো সম্ভব হচ্ছে না।’
পীরগাছা থানার ওসি রেজাউল করিম বলেন, ‘হেলেনা তার এক প্রতিবেশী চাচার খপ্পরে পড়ে প্রতারণার শিকার হয়েছেন। তাকে আইনি সহায়তাসহ নিরাপত্তা দেওয়া হবে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
পীরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমীন প্রধান বলেন, ‘হেলেনার পরিবারের লোকজন উন্নত চিকিৎসার জন্য সহযোগিতা চাইলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বর্তমানে তার চিকিৎসার জন্য একাধিক এনজিও সহযোগিতা করছে।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন