স্টাফ রিপোর্টার : মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে শিশুদের জন্য পৃথক অধিদপ্তর গঠনের চিন্তা-ভাবনা করছে সরকার। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীও ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন। পৃথক অধিদপ্তর হলে শিশুবিষয়ক কাজের জন্য বাজেটপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে কাজের সমন্বয় করা আরও সহজ হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে শিশুবিষয়ক আলাদা অধিদপ্তর গঠন বিষয়ে নাগরিক সমাজের সঙ্গে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি এ কথা বলেন। ১০টি আন্তর্জাতিক ও দেশীয় সংস্থার জোট চাইল্ড রাইটস অ্যাডভোকেসি কোয়ালিশন ইন বাংলাদেশ এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল। সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাছিমা বেগম এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য কাজী রিয়াজুল হক।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, মন্ত্রণালয়ের অধীনে শিশুদের জন্য আলাদা একটি অধিদপ্তর করার বিষয়টি অনেক দিন ধরেই ভাবা হচ্ছে। শিশুদের উন্নয়ন করার অর্থই হচ্ছে দেশের উন্নয়ন নিশ্চিত করা। যুব, নারীদের জন্য আলাদা অধিদপ্তর থাকলে শিশুদের জন্য কেন নয়? শিশুদের জন্য আলাদা অধিদপ্তর চাওয়া কোনো অতিরিক্ত চাওয়া না।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে শিশুসংক্রান্ত কোনো ঘটনা ঘটলে কার কাছে যেতে হবে, তা কেউ খুঁজে পায় না। অধিদপ্তর হলে যেসব মন্ত্রণালয় শিশুবিষয়ক কাজের জন্য বাজেট পাচ্ছে, তাদের সঙ্গেও সম্পর্ক জোরদার করা সম্ভব হবে। অধিদপ্তর গঠনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন। আলাদা অধিদপ্তরের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও জনবল নিয়োগসহ অন্যান্য পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা চলছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, শিশু কোনো কারণে বিপদে পড়লে সরকার অবশ্যই পাশে থাকবে। তবে তার আগে শিশুর বিষয়ে অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে। সন্তান জন্ম দিয়ে দায়িত্ব শেষ করলে হবে না।
সভায় অন্য আলোচকেরা আলাদা অধিদপ্তর গঠনের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে বলেন, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে শিশু একাডেমী শুধু শিশুর বিকাশ নিয়ে কাজ করছে। শিশুর সুরক্ষার বিষয়টি দেখার কেউ নেই। জেলা-উপজেলা পর্যায়ে শিশুবিষয়ক দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা না থাকায় শহরকেন্দ্রিক অল্প কিছু কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
সভাপতির বক্তব্যে মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল বলেন, দেশে মোট জনসংখ্যার ৪৫ শতাংশ শিশু। দেশে এখনো ৪৭ লাখ শিশু সুযোগের বাইরে রয়েছে। তারা শ্রমজীবী, পথে বা বাসাবাড়িতে থাকা শিশু। কেন তারা এ ধরনের পরিবেশে থাকতে বাধ্য হবে? আলাদা অধিদপ্তর হলে শিশুর সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করা সহজ হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন