অর্থনৈতিক রিপোর্টার : সস্তা সিগারেটের মূল্যস্তর কমাতে তোড়জোড় শুরু করেছেন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। এ জন্য সরকারের উচ্চ পর্যায়ে তদবির চলছে। এছাড়া বাজেট পরবর্তী সময়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তাদের কাছে টেলিফোনে তদবির করছেন এসব কোম্পানিগুলোর ঊর্ধ্বতনরা। অথচ তামাক বিরোধী জোটগুলো বলছে, সস্তা সিগারেটের ভোক্তা বেশি। প্রায় ৭৯ শতাংশ ভোক্তা সস্তা সিগারেট সেবন করছে। তাই সস্তা সিগারেটের মূল্য স্তর ও সম্পূরক শুল্ক হার বাড়িয়ে তামাককে নিরুৎসাহিত করা উচিত। না হলে তামাকমুক্ত দেশ গড়া অসম্ভব হবে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে নি¤œমানের সিগারেটের মূল্যস্তর ১৮ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৩ টাকা এবং সম্পূরক শুল্ক ৪৮ থেকে বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করা হয়েছে। এনবিআরের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, প্রায় প্রতিদিনই সিগারেট কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সস্তা সিগারেটের মূল্যস্তর কমাতে তদবির করছেন। নিজেরাতো সরাসরি তদবির করছেনই; একাধিক সংসদ সদস্যও তাদের হয়ে তদবির করছেন। যদি সস্তা সিগারেটের মূল্যস্তর ১ টাকা কমানো হয় তাহলে কয়েকশ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় কম হবে। আগামী বাজেটে ভ্যাটের বিশাল লক্ষ্য ধরা হয়েছে। নতুন ভ্যাট আইন কার্যকর হবে এ চিন্তা মাথায় রেখে লক্ষ্য দেয়া হয়েছিল। কিন্তু আইন বাস্তবায়ন এক বছর পিছিয়ে দেয়ায় বিশাল লক্ষ্য অর্জনে হিমশিম খেতে হবে। তার ওপর সিগারেটে মূল্যস্তর ও সম্পূরক শুল্ক কমিয়ে দেয়া হলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন দুরূহ হয়ে পড়বে।
চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সস্তা সিগারেটের মূল্য স্তর ১৯ টাকা করার প্রস্তাব দেয়া হয়। পরে উৎপাদকদের চাপে সেটিকে কমিয়ে ১৮ টাকা করা হয়। এর ফলে শত কোটি টাকা কম রাজস্ব আদায় হয়েছে। কারণ এনবিআর সিগারেটের মূল্য স্তরকে (১০ শলাকার জন্য) খুচরা মূল্য ধরে তার ওপর ৪৮ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক, ১৫ শতাংশ ভ্যাট ও ১ শতাংশ সারচার্জ যোগ করে রাজস্ব আদায় করে। উদাহরণস্বরূপ মূল্যস্তর ১৯ টাকা রাখা হলে সরকার রাজস্ব পেত ১২ টাকা ১৬ পয়সা। আর ১৮ টাকা হওয়ায় সরকার রাজস্ব পেয়েছে ১১ টাকা ৫২ পয়সা। অর্থাৎ ১ টাকা মূল্যস্তর কমানোর কারণে প্রতি ১০ শলাকা প্যাকেটে ৬৪ পয়সা কম রাজস্ব পেয়েছে সরকার।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন