বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ক্যারিয়ার

সেলসে ভালো করার উপায়

প্রকাশের সময় : ১২ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

সেলস যে কোন কোম্পানির একমাত্র বিভাগ। যে বিভাগ রেভিনিউ জেনারেট করে। অন্যরা তা ভোগ করে। সে কারণে সেলস ডিপার্টমেন্টের গুরুত্ব সর্বাধিক। বেতন, প্রমোশন, ইনক্রিমেন্ট, সুযোগ-সুবিধা সবটাতেই সেলসের লোক অগ্রাধিকার পায়। সেলসে চাকুরি খুব সহজলভ্য । আহামরি কোন যোগ্যতা লাগে না। ভালো করলে দ্রুত পদোন্নতি সম্ভব। যেটা অফিসের অন্যান্য বিভাগে সম্ভব নয়। নতুন ছেলেমেয়েরা সেলসে চাকুরী পছন্দ করছেন। খুব চ্যালেঞ্জিং পেশা সেলস। সেলস মানে পণ্য বা সার্ভিস বিক্রি করা। প্রতিযোগী কোম্পানী যেমন বেশি তেমনি পণ্যের সংখ্যা বেশি। তাই কিছু কৌশল, টেকনিক ব্যবহার করতে হবে। যা আপনার সেলস বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।
কঠোর পরিশ্রম, কৌশল অবলম্বন, লিডারশিপ, সততা থাকতে হবে। পরিশ্রমের কোন বিকল্প নেই। কারু এটা অফিসিয়াল ৯টা -৫টার জব নয়। মার্কেটে থাকতে হবে বেশিরভাগ সময়। পরিবেশকদের সাথে সুসম্পর্ক রাখতে হবে। তাদের মন মানসিকতা বুঝতে হবে। কিভাবে, কোন কৌশল অবলম্বন করলে পরিবেশক খুশী থাকবেন। সেকেন্ডারী অনুযায়ী পণ্য উত্তোলন করবেন। বিক্রি অনুযায়ী কোম্পানীকে অর্থ প্রদান করবেন। প্রয়োজনে (কখনও কখনও টার্গেট এচিভের জন্য হতে পারে) অতিরিক্ত পণ্য উত্তোলন করবেন। সেটা জানতে হবে।
মার্কেট সম্পর্কে পরিপূর্ণ জ্ঞান থাকতে হবে। কোন রুটে কয়টি দোকান, এর মধ্যে কয়টি হোলসেল, রিটেলার, মার্কেটে কোন কোম্পানীর শেয়ার বেশী, মার্কেট সাইজ এ বিষয়গুলো নখদর্পণে থাকতে হবে। বিখ্যাত হোলসেলার, রিটেলারদের সাথে ট্রেড রিলেশন থাকতে হবে। তাদের একটা প্রোফাইল রাখা ভাল। বিক্রি বৃদ্ধিতে ট্রেড রিলেশনের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দোকানদার, তার ছেলেমেয়েদের নাম, জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকীর তথ্য রাখা যেতে পারে। আপনি কোম্পানী পরিবর্তন করতে পারেন। তখনও পুরনো ট্রেড রিলেশন সাহায্য করবে।
সেলস হল টার্গেট অরিয়েনটেড জব। টার্গেট বেশী হয়ে গেছে। কখনো বলা যাবে না। এটা টপ ম্যানেজমেন্টের চরম অপছন্দ। টার্গেট ইচ্ছামত দেয়া হয় না। বিভিন্ন সময়ের সেলস ডাটা বিভিন্নভাবে ভাগ করে দেয়া হয়। টার্গেট নিয়ে আপত্তি তুলবেন। ম্যানেজমেন্ট ভাববে আপনি বিক্রি বাড়াতে চান না। টার্গেট অধীনস্থদের মধ্যে বণ্টন করে দেয়া। পাশাপাশি টার্গেট এচিভে তাদের সাহায্য সহায়তা, বুদ্ধি, পরমার্শ দেয়া আপনার কাজ। দোকান অনুযায়ী পণ্যের টার্গেট ভাগ করে দিতে হবে। দোকান অনুযায়ী এচিভমেন্ট মনিটরিং করতে হবে।
অধীনস্থদের দুর্বলতা জানতে হবে। যতজন এসপিও, এসআর আপনার অধীনে কাজ করছেন। তাদের নিয়ে মিটিং করুন। বস বলে দিলেই মিটিং করবেন তা নয়। নিজে মিটিংয়ের আয়োজন করুন। বসকে দাওয়াত দিন। অধীনস্থদের মতামত শুনুন। সমস্যা সমাধানে আপনি আন্তরিক সেটা প্রমাণ করুন। যার পারফরমেন্স খুব খারাপ। তাকে নিয়ে আলাদাভাবে বসুন। মার্কেটে তাকে বেশী সময় দিন। অধীনস্থদের কেবল বকাঝকা নয়। তাদের কে ভালোবাসুন। মাঝে মধ্যে তাদের নিয়ে বাইরে খেতে যেতে পারেন। টুকটাক গিফট দিতে পারেন। এতে তারা উৎসাহিত হবে।
সেলসে ভালো করতে হলে মার্কেট ইনটেলিজেন্স থাকা দরকার। আপনি যে পণ্য বিক্রি করছেন। তার সম্পর্কে তো বটেই। প্রতিযোগী কোম্পানী, তার পণ্য সম্পর্কে আপনার ভালো জ্ঞান থাকতে হবে। তাদের কর্মকর্তাদের সাথে পারসোনাল রিলেশন গড়ে তুলুন। এতে প্রতিযোগী কোম্পানীর পণ্যের রেট, ট্রেড অফার, কনজুমার অফার সম্পর্কে জানতে পারবেন। বসকে জানাতে পারবেন। যখন তখন বস অন্য কোম্পানীর অফার, পণ্যের রেট আপনার কাছে জানতে চাইতে পারেন।
বসের সাথে সুসম্পর্ক রাখুন। সমস্যা সম্ভাবনার কথা বলুন। পজেটিভ কথা বেশী বলুন। কমিনিকিউশনে যেন ঘাটতি না হয়। যথাযথ সময়ে রিপোর্ট প্রদান করুন। রিপোর্ট হল আয়না। আয়নায় যেমন চেহারা দেখা যায়। রিপোর্টেই আপনার পারফরমেন্স ফুটে উঠবে। রিপোর্ট চেয়ে যেন আপনার বসকে ঘুরতে না হয়। বারবার চাইতে না হয়। বসের রিপোর্ট তৈরি হবে আপনার রিপোর্ট থেকেই। এটা মনে রাখতে হবে।
মিথ্যা পরিহার করুন। মার্কেটে নেই। বললেন ওমুক মার্কেটে আছেন। কিংবা বাসায় বসে মার্কেটের নাম বলে দিলেন। পরে ধরা খেলেন। বস হয়তো বাসায় গিয়েই আপনাকে ধরলো। এখন মোবাইলে ট্রাকিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে জানা সম্ভব। আপনি কোথায় আছেন। ছুটি লাগলে বসকে জানান।
সময়ের বাঁধনে সেলসকে বাঁধা যায় না। সেলসের লোক কাজ করেন অনলিমিটেড। যখন তখন যেখানে সেখানে যেতে হতে পারে। সারাদিন মার্কেট করলেন। রাতভর রিপোর্টিং করতে হতে পারে। মধ্যরাতে বস এসএমএস করতে পারেন। ওমুক রিপোর্ট লাগবে। মাথা ঠা-া রাখুন। সকল তথ্য আপডেট রাখুন। মার্কেটে অতিরিক্ত সময় দিন। যে মার্কেটে আপনার অবস্থান দুর্বল। তবে ভালো করার ব্যাপক সম্ভাবনা আছে। সেখানে সময় দিন।
পণ্যের ডেলিভারি নিশ্চিত করুন। পণ্যের যত অর্ডার সংগ্রহ করা হয়। কমপক্ষে তার ২০ থেকে ২৫ শতাংশ ডেলিভারি হয় না। বাউন্স হয়। কেন অর্ডার বাউন্স হয় জানুন। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন। ডেলিভারির সংখ্যা বাড়লে আপনার সেলস বাড়বে। এসকিইউ (স্টক কিপিং ইউনিট) ওয়াইজ মনিটরিং করুন। ফিফো (ফাস্ট ইন ফাস্ট আউট) ম্যাথোড ফলো করুন।
সৃজনশীলতার প্রকাশ ঘটান। সব জায়গায়, সব ট্রেড অফার ভাল ফল বয়ে আনে না। প্রয়োজনে আপনি স্থানীয়ভাবে প্রোগাম ডিজাইন করুন। ট্রেড অফারে যেটা আছে (একই পণ্য বা অন্য পণ্য ফ্রি থাকতে পারে) বদলে অন্য কিছু দিতে পারেন। যেটা বেশি আকর্ষণীয় হবে। দোকানদার পছন্দ করবে। বিষয়টা বসকে জানান। তার অনুমতি নিন।

স মুহাম্মদ শফিকুর রহমান

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (18)
আনোয়ার হোসাইন ১৭ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:৩২ এএম says : 0
Right,
Total Reply(0)
Mukul ২৪ এপ্রিল, ২০১৮, ৭:২৯ পিএম says : 0
Good
Total Reply(0)
Mehedi Hasan Asad ২৩ জুন, ২০১৮, ৯:৫১ পিএম says : 0
খুব সুন্দর একটি লেখা এই নিয়ম অনুসারে চললে বিক্রয় বৃদ্ধি সম্ভব।
Total Reply(0)
মো :- জয়নাল আবেদীন ১১ নভেম্বর, ২০১৮, ১:৩৯ পিএম says : 0
লেখককে অনেক অনেক ধন্যবাদ। এখান থেকে শিখার অনেক কিছু আছে।
Total Reply(0)
আব্দুর রাকিব ৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ৮:৪০ পিএম says : 0
It's a Destination of sales
Total Reply(0)
মোঃরাকিব ১৫ জানুয়ারি, ২০১৯, ৯:০৫ পিএম says : 0
Well information but I hope you will must import more information
Total Reply(0)
Md Sirazul islam ৫ এপ্রিল, ২০১৯, ১:২২ এএম says : 0
good
Total Reply(0)
Md.Zahidul Islam ২৫ জানুয়ারি, ২০২০, ৫:২১ পিএম says : 0
চমৎকার একটি লিখা যা সেলস জবের সাথ রিলেটেড তাদের জন্য খুব ভালোহবে।
Total Reply(0)
ShopOnline bd ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ৭:০৭ পিএম says : 0
ধন্যবাদ বিক্রয় বৃদ্ধি করার উপায় বলার জন্য । তবে বর্তমানে অনলাইন যুগে অনলাইন সেবা গ্রহনের মাধ্যমে আরও বেশী বিক্রয় বৃদ্ধি বাড়ানো সম্ভব । কারন বর্তমান যুগ অনলাইন মার্কেটের যুগ । আর এই অনলাইন মার্কেটে আপনার পণ্য বা সেবাটির খুব সহজেই বিক্রয় বৃদ্ধি করতে পারেন বাংলাদেশের অসাধারন একটি বৃহৎ অনলাইন প্লাটফর্ম Sheba Binimoy এ আপনার পণ্য বা সেবার ফ্রি বিজ্ঞাপন দেওয়ার মাধ্যমে । Sheba Binimoy (সেবা বিনিময় ) একটি অনলাইন প্লাটফর্ম যেখানে আপনি আপনার ব্যবসায়ের পণ্য বা সেবা বিক্রয় এবং Product Exchange বা বিনিময় করতে পারবেন । আমাদের দক্ষ ডিজিটাল মার্কেটিং টিম ২৪ ঘণ্টা আপনার পণ্য বা সেবার বিক্রয় বৃদ্ধিতে অঙ্গীকারবদ্ধ ।
Total Reply(0)
মোঃ মাসুদ রানা ৩ জুলাই, ২০২০, ২:১৯ পিএম says : 0
অনেক অনেক সুন্দর পরামর্শ দিয়েছেন ভালো লাগলো।
Total Reply(0)
Alamgir kabir ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৭:৫৮ পিএম says : 0
GOOD COMMENTS.THANKS
Total Reply(0)
ধন্যবাদ। ১৫ মার্চ, ২০২১, ৭:০০ এএম says : 0
ভাল লাগলো।ধন্যবাদ অাপনাকে।
Total Reply(0)
আছাদ ২ আগস্ট, ২০২১, ১২:২৫ এএম says : 0
আমি ভাল
Total Reply(0)
Naim Hossain Hannan ১৮ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:৩০ এএম says : 0
খুবই ভালো লাগলো লেখাটি
Total Reply(0)
Naim Hossain Hannan ১৮ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:৩০ এএম says : 0
খুবই ভালো লাগলো লেখাটি
Total Reply(0)
দিগন্ত ১৬ মার্চ, ২০২২, ৭:৪৪ পিএম says : 0
খুবই উপকারী কথা ছিলো ধন্যবাদ
Total Reply(0)
দিগন্ত ১৬ মার্চ, ২০২২, ৭:৪৫ পিএম says : 0
খুবই উপকারী কথা ছিলো ধন্যবাদ
Total Reply(0)
Md Lokman Hossain ২১ এপ্রিল, ২০২২, ২:৪৭ পিএম says : 0
খুবেই উপকারী ও গুরুত্বপূর্ণ কথা ধন্যবাদ
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন