শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইসলামী জীবন

শিশুদের যৌন হয়রানি রোধে ইসলামে করণীয় বিষয়

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ৫:২৭ পিএম

শিশু বয়সে ইদানিং যৌন হয়রানির মাত্রা বেড়ে গেছে। অনেক অভিভাবকই বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত। তাদের সন্তান লালন পালনে সব সময় ঘুরপাক খায় বিষয়টি। তবে ইসলাম এ ক্ষেত্রে কিছু নীতিমালা পেশ করেছে। যা পালন করতে পারলে আশা করা যায় আপনার সন্তান যৌন হয়রানি থেকে অনেকটাই বেঁচে যাবে। জেনে নিন বিষয়গুলো।
১. আপনার মেয়ে শিশুকে অন্য কারো (অপরিচিত লোক) কোলে বসতে দেওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকুন, এমনটি নিজস্ব আত্মীয়-স্বজনদের ব্যাপারেও সতর্ক থাকুন। ছোটবেলা থেকে পর্দার ব্যাপারে সচেতনতা ৈ তৈরি করুন।
২. বিশেষভাবে মেয়ে সন্তানকে খেলাধুলায় সঙ্গী নির্বাচন করার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন। খেয়াল রাখুন আপনার সন্তান যখন বন্ধুদের সাথে খেলতে যায় তখন তারা কি ধরনের খেলা খেলছে? নিছক বিনোদন বা সময় কাটানো জাতীয় খেলাধুলা ছাড়া অন্য সব ধরনের খেলাধুলা থেকে বিরত রাখুন। লক্ষ্য রাখুন শিশুদের খেলাধুলার বিষয় যেন, বিয়ে-শাদি বা সংসার না হয়।
৩. সন্তানের সামনে নিজেরা কাপড় পরা/বদলানো থেকে বিরত থাকুন। জাগ্রত শিশু সন্তানের সামনে যৌন মিলন থেকেও বিরত থাকুন এবং যত্র-তত্র উলঙ্গ অবস্থায় যেতে নিষেধ করুন। ইসলাম নির্দেশিত সতর ঢেকে রাখুন এবং শিশুদের সতর সম্পর্কে জ্ঞান দান করুন।
৪. খেয়াল রাখবেন কেউ যেন দুস্টামি করেও আপনার মেয়ে সন্তানকে কখনো আমার বউ বা আমার ছেলের বউ ইত্যাদি কথা না বলে। কারণ এতে করে সন্তানের মাঝে অপরিণত বয়সেই বিয়ের মানসিকতা সৃষ্টি হতে পারে। ইসলাম বৈধ উপায়ে যথার্থ সময়ে বিয়ের আদেশ দিয়েছে। আগেও নয় এবং খুব পরেও নয়।
৫. অন্য প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ কিংবা মহিলার কাছে আপনার মেয়ে সন্তানকে পাঠানোর ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন এবং জোর করে এমন কোথায় তাকে পাঠানো থেকে বিরত থাকুন- যেখানে সে যেতে চায় না।। এমনকি আপনি যদি কখনো খেয়াল করেন, কেউ আপনার মেয়ে সন্তানকে খুব বেশি আদর-সোহাগ করছে, তাতেও সতর্ক থাকুন। কারণ মানুষ মাত্রই ভুলকারী। শয়তান যে কোনো সময় যে কোনো মানুষকে ধোকায় ফেলতে পারে, তাই সবোচ্চ সতর্ক থাকা উচিত।
৬. সাবধানতা এবং সতর্কতার সাথে আপনার মেয়েকে বয়সন্ধীকালীন সঠিক যৌন শিক্ষা প্রদান করুন এবং তাকে এই সময়কালীন বিভিন্ন অপকারিতা সম্পর্কে সচেতন করুন। আপনার মেয়ে সন্তানকে জানতে সাহায্য করুন, ইসলাম কেন এই সময় ইবাদত-বন্দেগি করতে নিষেধ করেছে।
৭. অনেক মায়েদের দেখা যায় বাচ্চাদের ঠাÐা রাখার জন্য বিভিন্ন কার্টুন ও মুভি দেখান- এটা কখনোই করবেন না। কারণ ছোটবেলাতেই এসব জিনিস বাচ্চাদের মানসিকতায় বিশেষ প্রভার বিস্তার করে। আর ইসলাম তো এসব কার্টুন ও মুভি দেখানোকে কখনোই সমর্থন করে না। বরং এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন ভালো গল্প শোনানো যেতে পারে।
৮. মেয়ে সন্তানের বয়স ৩ বছর হলে সন্তানকে টয়লেট শেষে নিজে নিজে পরিষ্কার করতে শেখান এবং তাকে ইসলামের পবিত্রতার গুরুত্বের কথা জানান। তাকে শিখতে সহযোগিতা করুন ইসলাম কীভাবে পবিত্রতা অর্জন করার নিয়ম-পদ্ধতি বাতিয়েছ।
৯. আরেকটা ব্যাপারে খুব সতর্ক থাকুন- প্রয়োজন ছাড়া মেয়েকে সন্তানের গোপনাঙ্গ স্পর্শ করা থেকে তাকে বিরত রাখুন এবং নিজেরা বিরত থাকুন। এতে করে লজ্জাহীনতা সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
১০. খারাপ কাজ, মন্দ ব্যক্তি, কুরুচিপূর্ণ বিষয় এবং নিন্দনীয় আচরণের তালিকা তৈরি করুন এবং মেয়েকে সেগুলো শিক্ষা দিন। এই ক্ষেত্রে আপনাকে মনে রাখতে হবে, তাকে যা কিছু জানাবেন বা বুঝাবেন সবগুলোর কারন ব্যাখা করতে হবে।
১১. আপনার সন্তান কখনো কারো বিরুদ্ধে নালিশ করলে তা হেলায় উড়িয়ে দেবেন না- তাতে সেই ব্যক্তিটি যেই হোক না কেন? মনযোগ দিয়ে তার নালিশ শুনুন এবং যৌক্তিক ইবচার করুন এবং মেয়ে জানান নালিশ ও বিচারের ক্ষেত্রে ইসলাম কী বলেছে।
১২. যদি কখনো দেখেন হঠাৎ করে আপনার মেয়েটি কেমন নিশ্চুপ হয়ে গেছে, সতর্কতার সাথে কারণ আবিস্কার করার চেষ্টা করুন এবং কারণ দূর করুন। আপনার কাছে কারণ যদি যৌন হয়রানি আবিস্কৃত হয় তাহলে তাকে বোঝানোর চেষ্টা করুন এটা ভুল এবং এই ভুল থেকে দূরে থাকা উচিত। আর সাথে সাথে ইসলামি বিধি নিষেধগুলো তাকে জানান। ইসলাম নির্দেশিত যৌন হয়রানির শাস্তি ও পরিণামের কথা তাকে জানান। শিশুবেলা থেকেই আপনার সন্তানকে প্রতিকুল পরিবেশে প্রতিবাদ করার জন্য অনুপ্রেরণা দিন। কীভাবে বাজে পরিস্থিতিতে আত্মরক্ষা করবে তার ধারনা ও শিক্ষা প্রদান করুন।
সূত্র: আদাবুল মোয়াশারাত

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন