গরমকালের অন্যতম আদর্শ খাদ্য যা শরীরের জন্য অত্যন্ত পুষ্টিকর তা হলো টকদই। দুধে থাকে উন্নতমানের প্রোটিন, ল্যাক্টোজ নাম কার্বহাইড্রেট, ফ্যাট, ভিটামিন সি বাদে সব রকমের ভিটামিন এবং মিনারেলস। কারো কারো দুধ খেলে হজম ভালো হয় না, পাতলা পায়খানা হয়। এ ধরনের সমস্যাকে বলা হয় ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স। দুধের শর্করা ল্যাকটোজের হমজ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে দরকার ল্যাটেজ নামক এনজাইম। কোনো কোনো ব্যক্তি এই এনজাইমটি জন্মগতভাবে কম নিঃসরণ হয় বা দীর্ঘদিন দুধ পান না করলেও নিঃসরণ কমে যায়। এই ধরনের সমস্যা যাদের আছে তারা দুধকে ঘরে দই বানিয়ে খেতে পারেন। অল্প গরমে দুধে একটু দই রেখে ঘরে দই পাতা হয়। এই একটু দইকে বলা হয় সাজা। এতে থাকে দেহের পক্ষে অতি প্রয়োজনীয় একটি জীবাণু ল্যাকটোব্যাসিলাস অ্যাসিডোফিলাস, যার কাজ দুধের শর্করা বা ল্যাটোজকে ল্যাকটিক এসিডে পরিণত করা। সুতরাং যাদের ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স আছে তাদের আর ল্যাক্টোজ এনজাইমের দরকার হবে না। আমাদের অন্ত্রনালীতে থাকে এই ল্যাক্টোব্যাসিলাস যা দইয়ের ল্যাক্টোব্যাসিলাসের সঙ্গে মিশে মিশে অন্ত্রনালীতে ক্ষতিকর জীবাণু বৃদ্ধি বন্ধ করে, শর্করাজাতীয় খাদ্য হজমে সহায়তা করে, খাদ্যের পচন রোধ করে, অন্ত্রনালীতে ভিটামিন বি তৈরি করে, মাছ-মাংসের জটিল প্রোটিন ভেঙে সরল করে ফলে সহজেই হজম হয়। অনুষ্ঠান বাড়িতে অতিভোজের পর শেষ পাতে দুই খাওয়া হয় যাতে হজম ক্রিয়া ভালো হয়।
গবেষণায় দেখা গেছে, টকদই রক্তের ক্ষতিকারক কোলেস্টেরল এলডিএল বা এইচ এলডিএল কমাতে সাহায্য করে। ফলে যারা উচ্চ রক্তচাপ বা হার্টের অসুখে ভুগছেন টকদই তাদের জন্য সাহায্যকারী বন্ধুর মতো কাজ করবে তাদের অবশ্যই দৈনিক ১ কাপ টকদই খাওয়া উচিত। নিয়মিতভাবে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতেও টকদই গুরুত্বপূর্ণ। টকদইয়ের গুণের শেষ নেই। গ্রীষ্মের দুপুরে ১ কাপ টকদই খেলে দেহমনে প্রমান্তি ফিরে আসে। টকদই আমাদের শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। কোষ্ঠ-কাঠিন্য দূর করে, শিশুদের মস্তিষ্ক ও হাড়ের সুগঠন করে শারীরিক বৃদ্ধি সঠিক রাখে এবং নানা রোগ-প্রতিরোধে সাহায্য করে।
ষ ডা. জ্যোৎস্না মাহবুব খান
মুক্তগাছা, ময়মনসিংহ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন