বুধবার ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

অভিযানের মধ্যেই ক্যাসিনো নিয়ন্ত্রণে নতুন সিন্ডিকেটের পাঁয়তারা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে চলমান ক্যাসিনো বিরোধী অভিযানের মধ্যেই ক্লাবপাড়ার ক্যাসিনো নিয়ন্ত্রণ করার জন্য নতুন একটি সিন্ডিকেট গড়ে ওঠার পায়তারা শুরু হয়েছে। এই সিন্ডিকেটের সঙ্গে সরকারের কয়েকজন প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা এবং দেশের স্বনামধন্য দুটি বড় ব্যবসায়ী গ্রুপ জড়িত। সরকারের কাছ থেকে লাইসেন্স নিয়ে ঢাকা ও কক্সবাজারে বড় ক্যাসিনো এরিয়া তৈরী করার জন্য পরিকল্পনা করছে তারা।

সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে কক্সবাজারে বিদেশী পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে ক্যাসিনো এরিয়া করছে সরকার। বর্তমানে সরকার রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ক্যাসিনো বিরোধী অভিযান চালালেও অদূর ভবিষ্যতে সারা বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে পর্যটন খাতের উন্নয়নে জনসাধারনের জন্যও ক্যাসিনোর বৈধতার লাইসেন্স দেবে এমন চিন্তা ভাবনা করছে ওই ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। তারা ক্যাসিনোকে বড় একটি ব্যবসা হিসেবে দেখে প্রায় হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের পরিকল্পনা করে এগুচ্ছে। সরকারের ক্যাসিনো নীতির বিষয়ে প্রভাব বিস্তার করে তা দ্রুত বৈধতা দেয়ার জন্য চেষ্টা-তদবির ইতোমধ্যে শুরু করেছে।

সূত্র আরো জানায়, ওই ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট সরকারের উর্ধ্বতন মহলে বোঝানোর চেষ্টা করছেন, ক্যাসিনো অবৈধ থাকার কারণে এই টাকার বেশিরভাগ দেশের বাইরে হুন্ডির মাধ্যমে পাচার হচ্ছে এবং এই খেলা থেকে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। এছাড়া অনেকেই দেশের বাইরে ক্যাসিনো খেলে ফলে দেশের অর্থনৈতিক ক্ষতি হচ্ছে। যদি সরকার ক্যাসিনোর বৈধতা প্রদান করে তাহলে এখান থেকে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আসবে এবং হুন্ডির মাধ্যমে দেশের বাইরে টাকা পাচার বন্ধ হবে। এছাড়াও পর্যটন দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অনেক পর্যটক আসবে, এতে করে দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জিত হবে।

সম্প্রতি ক্যাসিনো বিরোধী অভিযান র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক ও ফকিরেরপুল ইয়ংমেনস ক্লাবের সভাপতি খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া এবং কলাবাগান ক্রীড়া চক্রের সভাপতি ও কৃষকলীগ নেতা শফিকুল আলম ফিরোজ। এছাড়া ঢাকাসহ সারা দেশেই ক্লাবগুলোতে অভিযান চালিয়ে অনেককে গ্রেফতার করেছে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী।এছাড়া প্রত্যক্ষ পরোক্ষ ভাবে ক্যাসিনোর সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতারা জড়িত।

আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর তথ্য মতে, ক্লাব ছাড়াও ব্যক্তি পর্যায়ে বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে ক্যাসিনোসহ জুয়ার আয়োজন হচ্ছে এমন সংখ্যা হাজারের উপরে। এসব জুয়া ছাড়াও অনলাইন জুয়া, ক্রিকেট, ফুটবল নিয়ে পাড়ামহল্লায় জুয়ার ব্যাপক প্রচলন শুরু হয়ে গেছে। মাদকের মত জুয়া বিস্তৃতি লাভ করেছে সর্বত্র। বিভিন্ন আকারে ষাটোর্ধ্ব বয়স থেকে শুরু করে ৫ম-৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছেলে মেয়েরাও জুয়ার সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। গণমাধ্যমসহ আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর বিভিন্ন প্রতিবেদন ও বক্তব্যে উঠে আসে দৈনিক কয়েক কোটি টাকার জুয়া খেলা হয়। এ হিসেবে বছরে হাজার কোটি টাকার জুয়া খেলা হয়।

ওই ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটটি চাচ্ছে সারাদেশের ক্যাসিনোসহ পুরো জুয়া খেলা তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিতে। সরকার ক্যাসিনো বৈধ করলে জুয়ার পরিমাণ হাজার কোটি টাকা থেকে লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। ব্যবসায়ীক হিসেবে এখান থেকে প্রচুর লাভের হিসেব কষতে ব্যবসায়ীরা। তাই হাজার কোটি টাকার বাজেট নিয়ে মাঠে নামার পরিকল্পনা করছে ব্যবসায়ীক এই সিন্ডিকেটটি।

ক্যাসিনো নিয়ে সরকারের পরিকল্পনা কী? এমন প্রশ্নে গত মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ক্যাসিনো বিষয়ে এখন হাঙ্গামা চলছে। ক্যাসিনো নীতিমালার মধ্যে এনে চালু করা হবে, নাকি একেবারেই বাদ দেয়া হবে, এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
এ বিষয়ে গত মঙ্গলবার বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মহিবুল হক জানিয়েছেন, দেশের ক্লাবগুলোতে জুয়ার আয়োজনের বিরুদ্ধে অভিযান চললেও কক্সবাজারে প্রস্তাাবিত বিশেষ পর্যটন অঞ্চলে ক্যাসিনোসহ আধুনিক সব আয়োজন থাকবে। তবে সেসব ক্যাসিনোতে দেশের মানুষরা ঢুকতে পারবেন না; শুধু বিদেশিরা পাসপোর্ট দেখিয়ে সেখানে প্রবেশাধিকার পাবেন।#

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (7)
Rahman Syed Atiur ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:০০ এএম says : 0
আমি জানিনা, কেউ কি বলবেন আমাদের সংবিধানের কোন অনুচ্ছেদে ক্যাসিনো জুয়া সম্পর্কে কিছু লেখা আছে...!
Total Reply(0)
MD Mezan Khan ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:০১ এএম says : 0
এই দেশে ক্যাসিনোর ভিতরে মদ জুয়া ও নারীর আসর যদি থেকে থাকে তাহলে ঐ নারীদের অবৈধ সম্পর্কের মাধ্যমে যে শিশু জম্ম নিয়ে ছিলো ঐ শিশু গুলোর পিতা হলো এই মন্ত্রী এম পি রাই,,,,, হাইরে দেশ হায়রে জাতি।
Total Reply(0)
Feruz Ahammad ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:০৩ এএম says : 0
সর্বপ্রথম আল্লাহ্‌র নাম স্মরণ করে ধন্যবাদ জানাই আমার দেশের প্রধান মন্ত্রীকে দেরীতে হলেও তিনি তার কথা রাখতে শুরু করেছেন লুটেরা যে দলেরই হোক কোন ক্ষমা নেই এই বার্তার প্রতি আজকের জনগন কিছুটা হলেও আস্থা রাখতে পারছে এবং সাধারণ মানুষের ভরসার জায়গা তৈরি হচ্ছে,আশা করি এর শেষ পরিণতি যারাই জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় এনে বিচার কাজ অবশ্যই সম্পন্ন করবেন,ইনশাল্লাহ।
Total Reply(0)
Mohammad Abaser ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:০৩ এএম says : 0
নেতাদের বাসভবন যেন এক একটা ব্যাংক!!! বাসাসমূহ ব্যাংক ঘোষনা করা সময়ের দাবি।।
Total Reply(0)
Manjur Alam ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:০৪ এএম says : 0
সরকার দুর্নীতি বিরোধী যে অভিযান পরিচালনা করছে এই অভিযান যদি সঠিক ভাবে পরিচালিত হয়, এবং এতে সরকার পুরোপুরিভাবে যদি সফলতা দেখাতে পারে তাহলে নিঃসনদেহে সরকারের উপর মানুষের আস্থা ফিরে আসবে বলে আমি মনে করি ।
Total Reply(0)
Sanu Sarker ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:০৫ এএম says : 0
প্রশাসন কঠোর হলে এবং বড় রাঘব বোয়ালদের আইনের আওতায় নিয়ে এলে অনেক অপরাধ কমে যাবে।
Total Reply(0)
mozammel ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ পিএম says : 0
ক্যাসিনো চালু রাখলেই ভালো হয়
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন