মিথ্যা ঘোষণাসহ নানা কৌশলে দেশে ক্যাসিনো সরঞ্জাম আমদানি করেছে এমন ২০টি প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত করা হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর এর নির্দেশে বিষয়টি তদন্ত শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। প্রাথমিকভাবে পাঁচ আমদানিকারকের নাম জানা যায়। পরে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসসহ বিভিন্ন কাস্টম হাউসের রেকর্ড থেকে আরও ১৫ আমদানিকারককে চিহ্নিত করা হয়। গত কয়েক বছরে ক্রীড়া সামগ্রীর নামে কিংবা মিথ্যা ঘোষণায় এসব সরঞ্জাম আমদানি করেছে এমন আমদানিকারকের নথিপত্র যাছাই-বাছাই করা হচ্ছে। ফলে এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানান চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস এবং শুল্ক গোয়েন্দার কর্মকর্তারা।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কর্মকর্তারা জানান, দেশে জুয়া নিষিদ্ধ হলেও ক্যাসিনো বা জুয়ার সরঞ্জাম আমদানিতে কোন নিষেধাজ্ঞা নেই। নির্ধারিত শুল্ক কর পরিশোধ করেই এসব সামগ্রী আমদানি করা যায়। প্লেয়িংকার্ড ছাড়া বেশির ভাগ সামগ্রীর আমদানিতে শুল্ক করও তেমন বেশি না। শুল্ক গোয়েন্দা ও কাস্টম হাউসের কর্মকর্তারা জানান, ক্রীড়া সামগ্রীর আড়ালে বেশির ভাগ জুয়ার সরঞ্জাম দেশে আসছে। জুতা, কম্পিটার, মোবাইল ফোনের যন্ত্রাংশ কিংবা ফার্নিচারের আড়ালেও আমদানি হয়েছে ক্যাসিনো সরঞ্জাম।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আমদানি নীতির সুযোগ নিয়ে এসব সরঞ্জাম আমদানি করা হয়েছে। জুয়ায় ব্যবহৃত প্রতিটি মেশিন ও সরঞ্জামের দাম সর্বনিন্ম লাখ টাকা থেকে সর্বোচ্চ তিন কোটি টাকা। মিথ্যা ঘোষণায় কোটি কোটি টাকার শুল্ক-কর ফাঁকি দেয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের একজন কর্মকর্তা জানান, এনবিআর এর নির্দেশনায় যারা এসব সরঞ্জাম আমদানি করতে পারে তাদের ফাইলপত্র খুঁজে বের করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি আমদানিকারক চিহ্নিত করে তাদের তালিকা এনবিআরএ পাঠানো হয়েছে। অনুন্ধান চলছে, আরও যাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যাবে তাদের তালিকাও পাঠানো হবে। ওই কর্মকর্তা জানান, চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে এমন বেশ কয়েকটি চালান এসেছে। তবে মিথ্যা ঘোষণায় আনা ক্যাসিনোর কোন চালান গেল কয়েক বছরে ধরা পড়েনি। সম্প্রতি মিথ্যা ঘোষণায় শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আনা কয়েক কোটি টাকার প্লেয়িং কার্ড ধরা পড়েছে। ক্যাসিনোর বড় কয়েকটি চালান ঢাকায় খালাস হয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে ক্যাসিনো সরঞ্জাম আমদানির সাথে জড়িত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে। শুরুতে যে পাঁচটি প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত করা হয় তাদের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। জানা গেছে ক্যাসিনোর মেশিনসহ খেলার বেশিরভাগ সামগ্রী চীন থেকে আমদানি হয়েছে। গত ১০ বছরের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম খুঁজে পাওয়া যায়। তাদের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের তথ্যও রয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো আইন লংঘন করেছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অনিয়ম পেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন