চট্টগ্রামে সরকার দলীয় হুইপ শামসুল হক চৌধুরী তার পুত্র নাজমুল করিম চৌধুরী শারুনের নানা বিতর্কিত আচরন ও বক্তব্য নিয়ে তোলপাড় চলছে। পিতা-পুত্রকে নিয়ে নানা কথাবার্তা এখন মানুষের মুখে মুখে। এই নিয়ে দলের মধ্যেও অস্থিরতা চলছে। দলে তাকে অনুপ্রবেশকারী বলছেন কেউ কেউ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনায় ক্যাসিনো সা¤্রাজের বিরুদ্ধে অভিযান নিয়ে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে আলোচনায় আসেন পটিয়া থেকে নির্বাচিত শামসুল হক চৌধুরী। এরমধ্যে হালিশহরের আবাহনী ক্লাবে জুয়ার আসর চালিয়ে তিনি কয়েক বছরে ১৮০ কোটি টাকার মালিক হয়েছেন বলে একজন পুলিশ পরির্দশক তার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। পরে এই পুলিশ পরিদর্শককে সাময়িক বরখাস্তা করা হয়।
এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে ওই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেন তিনি। অন্যদিকে চট্টগ্রাম আবাহনী ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও মহানগর আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা দিদারুল আলম চৌধুরীকে টেলিফোনে হুইপপুত্র শারুনের হুমকি দেওয়ার অডিও ভাইরাল হয়। তিনি এর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ আর নিজের নিরাপত্তা চেয়ে আবেদনও করেন। এসব নিয়ে তোলপাড়ের মধ্যেই গতকাল শুক্রবার শারুনের ভারী অস্ত্র নিয়ে গুলি করার একটি ভিডিও ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
ভাইরাল হওয়া ১৭ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায় ভারী অস্ত্র দিয়ে পুরোপুরি সামরিক কায়দায় হুইপপুত্র শারুনর গুলিবর্ষণ করছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র সমালোচনা হচ্ছে এ নিয়ে। আলিজেহ মুরতাজা নিউজ নামে একটি ফেসবুক পেজে প্রকাশিত একে-৪৭ রাইফেল সাদৃশ্য যুদ্ধাস্ত্র থেকে গুলি বর্ষণ করছেন হুইপপুত্র। গত ১৪ ঘণ্টায় ভিডিওটি দেখা হয়েছে সাত হাজার ৯০০ বার। ঠান্ডা মাথায় এমন ভারী অস্ত্র ব্যবহার করতে দেখে এর উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। তবে কেউ কেউ বলছেন এটি কোন শুটিং ক্লাবের ঘটনা।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শারুনের ওই ভিডিও-কে পুঁজি করে সরকারের সমালোচনা করছেন কেউ কেউ। এবিষয়ে বক্তব্য জানতে রাতে শারুনকে ফোন করেও পাওয়া যায়নি, তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। ততে হুইপ শামসুল হক চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ষড়যন্ত্রকারীরা আমাদের বিরুদ্ধে লেগেছে। পরিকল্পিতভাবে বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি করা হচ্ছে।
শারুন ও মুক্তিযোদ্ধা দলের প্রবীণ নেতা দিদারুল আলমের টেলিফোন কথোপকথনের অডিও রেকর্ড ফাঁস হলে দেশজুড়ে ঝড় ওঠে। হুইপের ছেলে শারুন দিদারুল আলম চৌধুরীকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও থাপ্পর মেরে দাঁত ফেলে দেয়া এবং রাস্তায় নগ্ন করে পেটানোর হুমকি দেন।
এর প্রতিক্রিয়ায় পরবর্তীতে তিনিও গণমাধ্যমে মুখ খোলেন। আবাহনী লিমিটেডের ব্যাংক হিসাবের তিন সিগনেটরির একজন তিনি। তাকে বাদ দিয়ে সংগঠনের অর্থ নয়ছয় করার চেষ্টা হলে তিনি আবেদন করে ব্যাংক হিসাবটি বন্ধ করে দেন। এরপর তিনি নিজেই হুইপ শামসুল হক চৌধুরীর ছেলে নাজমুল হক চৌধুরী শারুনকে ফোন করে তার বাবার সঙ্গে জমি নিয়ে চলা বিরোধটি মিটিয়ে ফেলতে অনুরোধ করেন এবং দেখা করার জন্য সময় চান।
ফোনালাপের শুরুতে ব্যবহার ভালো করলেও শেষের দিকে আবাহনীর ব্যাংক হিসাব বন্ধ করার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন শারুন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন