পদ্মা নদীর পানি হু হু করে বাড়ছে এতে নাটোরের লালপুর উপজেলার বিলমাড়ীয়া, লালপুর এবং ঈশ্বরদী এই ৩টি ইউনিয়নের পদ্মার চরের সকল জমির ফসল তলিয়ে গেছে, পানিবন্দি হয়ে পড়েছে চরে বসবাসকারী তিন হাজার পরিবার সহ উপরিভাগের কয়েক’শ পরিবার। ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। ভারত ফারাক্কা বাঁধের সব কয়টি লকগেট খোলায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন চরাঞ্চলের মানুষেরা। এদিকে পদ্মার চাঞ্চলের বিলমাড়ীয়া, লালপুর এবং ঈশ্বরদী এই ৩টি ইউনিয়নের বসবাসকারী সব মানুষকে সরিয়ে নিতে খুলে দেওয়া হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্র গুলি। এখন পর্যন্ত উপজেলা কৃষি বিভাগ ২২.২৫ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি নষ্ট হওয়ার তথ্য সংগ্রহ করেছে। এছাড়াও চরের প্রায় ৫৫০ হেক্টর আখ তালিয়ে গেছে।
বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পদ্মা চরের নওসারা সুলতানপুর, দিয়াড়শঙ্করপুর, চাকলা বিনোদপুর, আরাজি বাকনাই, রসুলপুর, বাকনাই, বন্দোবস্ত গোবিন্দপুর, কাগমারি ও লালপুর চরের ঘরবাড়ি ছাড়াও নওপাড়া, পানসিপাড়া, মহারাজপুর, বাকনাই, আরাজি বাকনাই, মোহরকয়া গ্রামের শতাধিক ঘরবাড়িতে পানি উঠেছে। অধিকাংশ মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিচ্ছে। প্রতিনিয়তই নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।এসময় কথা হয় মোহরকয়া গ্রামের সুকচান আলীর সঙ্গে তিনি বলেন, তার ৫টি পুকুর পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় প্রায় ১৫ লাখ টাকার মাছ নদীতে ভেসে গেছে। এছাড়াও ঐ এলাকার আন্ত: আরো ২০টি পুকুরে মাছ নদীতে ভেসে গেছে।
লালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মুল বানীন দ্যুতি জানান, ‘বুধবার বিলমাড়ীয়া ইউনিয়নের বন্যকবলিত ১৯০টি পরিবারের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী করা হয়েছে, পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বিলমাড়ীয়া, লালপুর এবং ঈশ্বরদী এই তিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা তৈরীর কাজ অব্যাহত রয়েছে। দুই একদিনের মধ্যেই বরাদ্দকৃত ১৮ মেক্ট্রিকটন চাউল বন্যা দুর্গত পরিবারের মাঝে বিতরণ করা হবে।’ ত্রান বিতরণকালে উপস্থিত ছিলেন নাটোর জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) শরীফুন্নেছা, লালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মুল বানীন দ্যুতি, উপজেলা চেয়ারম্যান ইসাহাক আলী, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুরাজ্জাক, ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিন্টু।
রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ড এর নির্বাহী প্রকৌশলী (অঃ দাঃ) সৈয়দ সাহিদুল আলম বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত পদ্মার রাজশাহী পয়েন্টে পানির প্রবাহ ১৮.১৮ সেন্টিমিটার রয়েছে বৃদ্ধিপায়নি, তবে লালপুরে কিছুটা বৃদ্ধি পেতে পারে। তিনি আরো বলেন, ‘পশ্চিম বাংলায় ৬-৭ তারিখে ভারি বৃষ্টিপাত হওয়ার পূর্বভাস রয়েছে যদি বৃষ্টিপাত হয় তবে পানি বৃদ্ধি হবে নাছেদ পানি কমতে শুরু করবে বলে তিনি জানান।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন