বরিশাল ব্যুরো : বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজে বিগত কিছুদিন ধরে ছাত্রলীগের দুটি বিবদমান গ্রুপের সংঘর্ষ ও গোলযোগের মধ্যে পরিস্থিতির আরো অবনতি রোধে মঙ্গলবার রাতে মহানগর পুলিশ ছাত্রাবাসে অভিযান চালায় কলেজ কর্তৃপক্ষের আপত্তির মুখে। দীর্ঘসময় অপেক্ষার পরে রাত ১১টার দিকে পুলিশের একজন এসির নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক ফোর্স ক্যম্পাস থেকে ফিরে আসে। দেশব্যপী জঙ্গী ও সন্ত্রাস দমনসহ বেআইনি অস্ত্র উদ্ধার অভিযানের মধ্যে মেডিকেল কলেজের মতো একটি অতি স্পর্শকাতর প্রতিষ্ঠানে সন্ত্রাসী আটক ও বেআইনী অস্ত্র উদ্ধারে পুলিশকে অসহযোগিতার বিষয়টি বরিশালের বিভিন্ন মহলে বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছে।
গত কয়েকদিন ধরেই শেরেবাংলা মেডিকের কলেজ হাসপাতালের সন্ধানী, মেডিসিন ক্লাব ও যুব রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির দখল নিয়ে ছাত্র লীগের দুটি গ্রপের মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলযোগ অব্যাহত রয়েছে।
ইতোমধ্যে ঐসব সেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর অফিস পর্যন্ত বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ফলে হাসপাতালে অনেক নিরীহ রোগী রক্ত পাচ্ছে না।
মহানগর পুলিশের কোতয়ালী থানার সহকারী কমিশনার জানান, তাদের কাছে খবর ছিল কলেজটির ১নম্বর ও দুই নম্বর হোষ্টেল বহিরাগতসহ ছাত্র লীগের দুটি গ্রুপ নানা ধরনের অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে রণপ্রস্তুতি নিচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় তারা ফোর্স নিয়ে মঙ্গলবার রাতে হোষ্টেল দুটি ঘেরাও করে কলেজ কতৃপক্ষকে খবর দেন। কিন্তু প্রিন্সিপাল ডাঃ ভাস্কর সাহা ও অন্য কয়েকজন অধ্যাপক ঘটনাস্থলে এলেও তারা ছাত্রাবাসে প্রবেশ ও তল্লাশী চালাতে পুলিশকে অনুমতি দেয়নি। পুলিশের দায়িত্বশীল মহল থেকেও পরবর্তিতে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করনে তাদের খুব কিছু করনীয় নাও থাকতে পারে বলে মঙ্গলবার রাতেই কতৃপক্ষকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
এব্যপারে গতকাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল ডা. ভাস্কর সাহার সাথে আলাপ করা হলে তিনি জানান, ‘আমরা চেষ্টা করছি ছাত্র লীগের উভয় গ্রুপের মধ্যে একটি সমঝোতা করার।’ মঙ্গলবার রাতের পুলিশী অভিযান সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘পুলিশ আসার পরে আমি একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্যদের সহ দুটি হোষ্টেলে গিয়ে বিবদমান গ্রুপকে অভিযানের কথা জানিয়েছি। তারা শিক্ষকদের নির্দেশ মেনে চলার শর্তে ঐ রাতের মত অভিযান না করতে পুলিশকে অনুরোধ করা হয়েছে’ বলে প্রিন্সিপাল জানান। একটি সম্মানজনক সমাধানের লক্ষে তিনি গতকাল একাডেমিক কাউন্সিলকে নিয়ে আবার বৈঠক করার কথা জানিয়ে সন্ধানী ও মেডিসিন ক্লাব দুটি খুলে দেয়ার চেষ্টা করছেন বলেও জানান।
এব্যাপারে গতকাল মহানগর পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কমিশনারের সাথে আলাপ করা হলে, তিনি জানান, কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঝুঁকিতে গেলে বা শান্তিশৃঙ্খলা বিঘিœত হবার আশংকায় ঐসব প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীল কতৃপক্ষের অনুরোধেই সেখানে পুলিশ যায়। আর মেডিকেল কলেজের মত একটি স্পর্শকাতর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অভিযান কতৃপক্ষের সহযোগিতা ছাড়া পুলিশের একার পক্ষে সফল হওয়া যায় না।
পুলিশ কমিশনার বলেন, আমরা আশা করি কলেজ কর্তৃপক্ষ সেখানের পরিস্থিতির উন্নয়নে সব কিছু করবে। না পারলে আমাদের ডাকলে তখন ব্যাবস্থা নেয়া যাবে। তবে শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় বিএমপি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলেও জানান তিনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন