নরসিংদী থেকে স্টাফ রির্পোটার : গোপন বা গুপসি টেন্ডারের আখড়া হিসেবে পরিচিত নরসিংদীর গণপূর্ত বিভাগের অভ্যন্তরে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। উন্নয়নের টাকা ভাউচারে খরচ দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা পকেটস্থ করার অভিযোগ উঠেছে উপ-বিভাগতীয় প্রকৌশলী স্বদেশ রঞ্জন বড়–য়ার বিরুদ্ধে। অভিযোগ উঠেছে মোটা অংকের টাকা ঘুষ নিয়েও ঠিকাদারদের হয়রানী করার। ভয়াবহ অভিযোগ হচ্ছে উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী নরসিংদী নির্বাহী প্রকৌশলীর ছত্রছায়ায় থেকে নিজেই লোক দিয়ে কাজ করিয়ে নামধারী ঠিকা প্রতিষ্ঠানের নামে বিল ভাউচার করে সরকারী টাকা আত্মসাৎ করার। ক্ষতিগ্রস্ত ঠিকাদাররা গণপূর্ত অধিদপ্তর, ঢাকার প্রধান প্রকৌশলী এবং গণপূর্ত সার্কেল ঢাকার তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলীর বরাবর অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে ‘মেসার্স পারুল এন্ড ব্রাদার্স’ এবং ‘রূপা এন্টারপ্রাইজ’র পক্ষে পারুল এন্ড ব্রাদার্স’র স্বত্বাধিকারী মো: খোরশেদ মৃধা প্রধানমন্ত্রীর নিকট স্বদেশ রঞ্জন বড়–য়ার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছে। ভুয়া ও কাগুজে প্রকল্পের নামে এক শ্রেণীর প্রকৌশলী ও ঠিকাদারদের পকেটে যাচ্ছে লাখ লাখ টাকা।
অভিযোগে বলা হয়েছে, গত অর্থ বছরে নরসিংদী কালেক্টটরেট ভবনে বিভিন্ন সেকশনের এসি সার্ভিসিং, নরসিংদী ফায়ার সার্ভিস কার্যালয়ের জরুরী মেরামত, গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী দপ্তরে ইন্টারনেট কানেকশন ও আইপিএস সরবরাহ, পাম্প মোটর মেরামত, জেলা কারাগারে দৈনন্দিন ইলেকট্রিক কাজসহ বিভিন্ন কার্যসম্পাদন করে ঠিকাদাররা যথাসময়ে বিল জমা দেয়। কিন্তু উপ-প্রকৌশলী স্বদেশ রঞ্জন বড়–য়া মোটা অংকের ঘুষের দাবী করে তাতে স্বাক্ষর করতে তালবাহানা শুরু করে। ঠিকাদাররা নিরূপায় হয়ে গত বছর প্রথমে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দিলে স্বদেশ বড়–য়া কয়েকটি বিলে স্বাক্ষর করে তা নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তরে পাঠায়। পরবর্তীতে গত বছরের ২৯ জুন তারিখে আরও ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দেয়ার পর আরো কয়েক বিলে স্বাক্ষর করে স্বদেশ বড়–য়া।
একই অর্র্থবছরে (২০১৪-১৫) উল্লেখিত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের আংশিকভাবে সম্পন্ন করা বেশ কিছু কাজ মোটা অংকের ঘুষের বিনিময়ে উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী স্বদেশ রঞ্জন বড়–য়া অন্য ঠিকাদারকে দিয়ে দেয়। এছাড়াও নরসিংদী গণপূর্ত বিভাগে নিয়মিত কর্মরত বিভিন্ন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মালিকগণ তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতিসহ নানা অপকর্মের ফিরিস্তি তুলে ধরে অনতিবিলম্বে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেছেন।
এব্যাপারে উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী স্বদেশ রঞ্জন বড়–য়া’র সাথে সাংবাদিকরা যোগাযোগ করলে তিনি প্রধান প্রকৌশলী মাসুদুল আলম’র অনুমতি ছাড়া সাংবাদিকদের সাথে কোন কথা বলবেন না বলে জানান।
গণপূর্ত বিভাগের অধীনস্ত সরকারী বিভাগগুলোর রুটিন উন্নয়ন ও রুটিন মেরামত কাজও লাখ লাখ টাকার দুর্নীতিবাজ প্রকৌশলী ও ঠিকাদারদের পকেটে যাচ্ছে। অনেক ঠিকাদার জানিয়েছেন, বহুসংখ্যক ভুয়া কাগজে প্রকল্প দেখিয়ে লাখ লাখ সরকারী টাকা আত্মসাৎ হচ্ছে। এসব খবর কেউ রাখছে না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন