বোরো মৌসুমে চাষ উপযোগী এবং ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী উচ্চফলনশীল আগাম ধানের জাত উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান। নতুন এই জাতের ধানের নাম রাখা হয়েছে বাউ ধান-৩। গবেষক অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান বর্তমানে বিশ^বিদ্যালয়ের ভিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান বলেন, সাধারণত দেশের বোরো মৌসুমে ব্রি ধান-২৮ জাতটি খুবই জনপ্রিয়। তবে সম্প্রতি কয়েক বছরে ব্রি ধান-২৮ জাতটিতে ধানের নেকব্লাস্ট আক্রমণের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় ধান উৎপাদন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এমতবস্থায় দেশের ধানের উৎপাদন ঠিক রাখতে হলে বিকল্প জাতের উদ্ভাবন দরকার। এই লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ইরি) থেকে একটি ‘কৌলিক সারি’ এনে এসিআইয়ের সহযোগিতায় বাকৃবিসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গবেষণা করে ধানের এই জাতটি উদ্ভাবন করা হয়েছে।
উদ্ভাবিত জাতটি সর্ম্পকে অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান বলেন, উদ্ভাবিত নতুন এই ধানের জাতটি দেশে জনপ্রিয় ব্রি ধান-২৮ এর বিকল্প হতে পারে। সম্প্রতি জাতীয় বীজ বোর্ডে এ জাত নিবন্ধিত হয়েছে। এই জাতের ধানে আধুনিক উচ্চ ফলনশীল ধানের সব বৈশিষ্ট্য আছে। নতুন এ জাতের হেক্টর প্রতি গড় ফলন ৭-৮ মেট্রিক টন, যা ব্রি ধান-২৮ এর চেয়ে ১-২ মেট্্িরক টন বেশি।
তিনি বলেন, উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ এ জাতের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো দানার আকৃতি ব্রি-২৮ এর মতো। পূর্ণবয়ষ্ক একটি গাছ ১১০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। এ জাতের গড় জীবনকাল ১৪০-১৪৫ দিন যা ব্রি ধান-২৮ এর সমসাময়িক। ১০০০ টি পুষ্ট দানার ওজন প্রায় ২৫ গ্রাম। গাছের কান্ড শক্ত ও মজবুত হওয়ায় গাছ ঢলে পড়ে না। এ জাতের ধান পাকা অবস্থায় শিষ হতে সহজে ঝরে পড়ে না বলে অপচয় কম হয়। জাতের ডিগ পাতা খাড়া, প্রশস্ত ও লম্বা। পাতার রং সবুজ। রান্না করা ভাত ঝরঝরে ও খেতে সুস্বাদু। এছাড়া জাতটি আগাম এবং ফলন ব্রি ধান-২৮ এর চেয়ে বেশি হওয়ায় লবাণাক্ত এলাকা ছাড়া হাওড়াঞ্চলসহ দেশের প্রায় সকল অঞ্চলে চাষ করা যাবে বলে মনে করেন ভিসি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন