বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার : রোজায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের চিত্রটাই বদলে যায়। শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক-বর্তমান শিক্ষার্থীরাই নয়, রাজধানীর বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক কিংবা জেলা-উপজেলা সংগঠনের ইফতার আয়োজনেরও প্রিয় স্থানে পরিণত হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। পুরো রমজানেই ইফতারের সময় ক্যাম্পাসে থাকে সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের বিশেষ আয়োজন। এ যেন সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের মেলবন্ধনে অন্যরকম ভালো লাগার আয়োজন।
ইফতারের সময় হওয়ার এক-দেড় ঘণ্টা আগে নির্দিষ্ট স্থানে একত্রিত হয় সবাই। একদিকে চলে এটাসেটা নিয়ে আলোচনা-গল্প-আড্ডা। অন্যদিকে চলে সংগঠনগুলোর পার্টি। এ সব সংগঠন তাদের পরিকল্পনা-কর্মপন্থা-সমস্যা-সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করে। পবিত্র রমজানের এই মাসে অনুষদ, বিভাগ, ব্যাচ কিংবা জেলা-উপজেলা সংগঠনের ব্যানারে আয়োজন করছেন ইফতার পার্টি। এর মাধ্যমে আত্মার মেলবন্ধনের অনন্য এক সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। একত্রিত হওয়ার জন্য যেসব জায়গা নির্ধারিত করে তার মধ্যে ডাকসু ক্যাফেটেরিয়া, টিএসসি, অপরাজেয় বাংলাসংলগ্ন বটতলা চত্বর, হাকিম চত্বর, কার্জন হল চত্বর, মোকাররম ভবন এলাকা উল্লেখযোগ্য।
প্রতিদিনই ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় সংগঠনগুলোর ইফতারি আয়োজন দেখা যাচ্ছে। শুধু ইফতারি নয়, শিক্ষামূলকসহ বিভিন্ন ধরনের আলোচনার আয়োজন করে এ সব সংগঠন। এমন একটি অনুষ্ঠান গত সপ্তাহে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল সংলগ্ন মোকাররম ভবনের ফার্মেসী বিভাগের লেকচার থিয়েটারে ঢাকাস্থ ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার সংগঠন ‘হায়ার এডুকেশন ও লিডারশীপ প্রোগ্রাম’ (হেল্প) আয়োজন করে। এতে সংগ্রহণ করেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীসহ অন্যান্য পেশার ব্যক্তিবর্গ।
এই অনুষ্ঠানে ইফতার অনুষ্ঠানের পূর্বে বিকাল থেকে শিক্ষার্থীদের নিয়ে শিক্ষা সম্মেলন শুরু হয়। শিক্ষার্থীদের চাকরির ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় কিভাবে নিজেকে তৈরি করবে এই বিষয়ে লেকচার দেন সহকারী সচিব হাসান আবদুল্লাহ তৌহিদ (পররাষ্ট্র)। এরপর চাকরিতে আবেদন প্রক্রিয়া ও বিদেশে স্কলারশীপের বিষয়ে আলোচনা করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রফেসর মো: আব্দুস সামাদ।
অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী বিভাগের প্রফেসর ড. এম এ মজিদ। উপস্থাপনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো: আমিনুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মো: মোতালেব হোসেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-পরিচালক ডা. রফিবুল ইসলাম স্বপন, সিনিয়ার এএসপি মো: কলিমুল্লাহ, কর বিভাগের ডেপুটি কমিশনার সিরাজুম মনির, প্রকোশলী একে আফজালুল হক, শিল্প ব্যাংকের সাবেক এজিএম হাসান আহমেদ নূহু , নিশান গ্রুপের মার্কেটিং এন্ড সেলস বিভাগের প্রধান মো: নাসির উদ্দীন, সহকারী সচিব আবদুল্লাহ আল ফরহাদ (পররাষ্ট্র), বুয়েটের প্রভাষক মো: সুমন মিয়া।
আলোচনা একদিকে চলতে থাকে অন্যদিকে চিরচেনা খেজুর, বেগুনি, চপ, মুড়ি, আম, আঙুর, জিলাপি, জুস ইত্যাদির সমন্বয়ে প্রস্তুত হতে থাকে বহুল আকাক্সক্ষার ইফতার। কোথাও আবার এসবের পাশাপাশি থাকে তেহারি-বিরিয়ানির ব্যবস্থা। আয়োজন যেমন হোক, মুখ্য উদ্দেশ্যে একত্রিত হওয়া, পারস্পরিক সম্পর্ক আরো কাছাকাছি নিয়ে আসা। গল্প-আড্ডা-আলোচনা করতে করতে চলে আসে সেই কাক্সিক্ষতক্ষণ। সবাই মিলে একসঙ্গে খাওয়া শুরু। খাওয়ার সময়, আগে এবং পরে চলে ব্যক্তিগত কিংবা সামষ্টিকভাবে সেলফি। খাওয়ার পর আবার কিছুক্ষণ আড্ডা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন