লেগুনা চালক ও তার সহযোগী ছিনতাইকারীদের হাতেই নিহত হন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. শাহ আলম। লেগুনাটির চালক মো. ফারুককে (১৯) গ্রেফতারের পর এমন তথ্য জানান র্যাব-৭ চট্টগ্রামের কর্মকর্তারা। আলোচিত এ হত্যাকা-ের দায় স্বীকার এবং লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়ে গতকাল মঙ্গলবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে আসামি ফারুক।
বিকেলে চান্দগাঁও ক্যাম্পে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে র্যাব-৭ চট্টগ্রামের সহকারী পুলিশ সুপার তারেক আজিজ বলেন, ফারুকের জবানবন্দির মাধ্যমে ক্লুলেস ও চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন হয়েছে। যাত্রী হিসেবে ডা. শাহ আলমকে লেগুনাতে তুলে ফারুক সহযোগীদের নিয়ে তার সাথে থাকা নগদ টাকা ও মূল্যবান মালামাল ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে। ওইসময় তিনি বাধা দিলে তাকে উপর্যপুরি কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এরপর লাশ ফেলে দিয়ে তারা লেগুনা নিয়ে পালিয়ে যায়। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে বিন মনসুর পরিবহন নামে লেগুনাটি উদ্ধারের পর গতকাল ভোরে নগরীর স্টেশন এলাকা থেকে ফারুককে গ্রেফতার করা হয়।
গত বৃহস্পতিবার মহাসড়কের পাশে সীতাকু-ের বারবকু-ে গরীবের ডাক্তার হিসেবে পরিচিত শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. মো. শাহ আলমের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। কুমিরায় নিজের প্রতিষ্ঠিত ক্লিনিক থেকে নগরীর চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার বাসায় ফিরছিলেন তিনি। থানা পুলিশের পাশাপাশি আলোচিত এ হত্যাকা-ের রহস্য উদঘাটনে ছায়া তদন্ত শুরু করে এলিট বাহিনী র্যাব। লেগুনাটি উদ্ধারের পর তাতে রক্তের দাগ দেখা যায়। এ সূত্র ধরে চালককে পাকড়াও করা হয়। গ্রেফতার মো. ফারুক সীতাকু-ের বারবকু- এলাকার নতুন পাড়া গ্রামের আইয়ুব আলীর পুত্র। তার সহযোগীদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে বলে জানান র্যাব কর্মকর্তা তারেক আজিজ।
জবানবন্দীতে লেগুনা চালক ফারুক জানায়, সহযোগীদের নিয়ে ছিনতাইয়ের উদ্দেশে লেগুনা নিয়ে মহাসড়কের কুমিরায় অপেক্ষা করে তারা। রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ ছোট কুমিরায় আসার পর ডা. শাহ আলম গাড়িতে উঠার সঙ্কেত দেন। এ সময় ফারুকের সহযোগীরা গাড়িতে যাত্রী বেশে অবস্থান করছিল। ডা. শাহ আলমকে গাড়িতে তুলে নেয়া হয়। এরপর গাড়িটি কে-বাই নামক স্থানে গেলে তাদের আরো কিছু সহযোগী যাত্রী বেশে গাড়িতে উঠে।
গাড়িটি মহাসড়কের রয়েল গেইট আসতেই যাত্রী বেশী ছিনতাইকারীরা ডা. শাহ আলমের কাছ থেকে টাকা পয়সা ও মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় তিনি টাকা পয়সা ও জিনিসপত্র দিতে অস্বীকৃতি জানালে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে ছিনতাইকারীরা তাকে ছুরিকাঘাত করে নির্মমভাবে হত্যা করে। এরপর তারা গাড়িটি নিয়ে কুমিরা ঘাটঘর এলাকায় গিয়ে লাশ রাস্তার পাশে ফেলে দেয়। ফারুক ও তার সহযোগীরা নিয়মিত ওই এলাকায় যাত্রীদের তুলে তাদের মালামাল ছিনতাই করতো বলে জানান র্যাব কর্মকর্তারা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন