শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

বগুড়ায় টনসিল অপারেশন কালে শিশুর মৃত্যু

বগুড়া ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৫ অক্টোবর, ২০১৯, ৬:২৭ পিএম

বগুড়ায় টনসিল অপারেশন করতে গিয়ে আবারো শিশুর মৃত্যু হলো। বগুড়ায় গত ৬ মাসের ব্যবধানে এই নিয়ে একই চিকিৎসকের কাছে টনসিল অপারেশন করাতে গিয়ে দুইজনের মৃত্যু হলো। মারা যাওয়া শিশুর বাবা ও তার পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন ভুল চিকিৎসার কারণে তাওহিদ হাসানের (৯) মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে এই ঘটনার পর শুক্রবার আটক দুই চিকিৎসককে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দেয়া হয়েছে।
নিহত তাওহিদ হাসানের পরিবারের সদস্য ও বগুড়া সদর থানার পুলিশ সুত্রে জানা যায়, টনসিল অপারেশনের জন্য নিহত তাওহিদ হাসানকে বৃহস্পতিবার বিকালে তার বাবা শহরের ঠনঠনিয়া এলাকার ডক্টরস ইউনিট-২ নামের বেসরকারী ক্লিনিকে ভর্তি করান। রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাউহিদ হাসানকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ডাঃ সাঈদুজ্জামান শিশুটির টনসিল অপারেশন করেন। তারপর থেকে শিশুটির জ্ঞান আর ফিরে আসেনি। ধারণা করা হচ্ছে অপারেশন থিয়েটারেই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি জানাজানি হলে রাতেই জনতার তোপের মুখে পড়ে ক্লিনিকের চিকিৎসক। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভিগীয় প্রধান (নাক কান ও গলা ) ডাঃ সাঈদুজ্জামান ও ডাঃ নিতাই চন্দ্রকে আটক করে থানায় নেয়। নিহত তাওহিদ হাসান সারিয়াকান্দি উপজেলার নারচী গ্রামের ফিরোজুল ইসলামের ছেলে। সে বর্তমানে শাজাহানপুর এলাকার শাহীন একাডেমিতে তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী। ছেলের লেখাপড়ার জন্য পরিবার নিয়ে শাজাহানপুর উপজেলার মাঝিড়া এলাকায় বসবাস করছিলেন।
নিহতের বাবা ফিরোজুল ইসলাম অভিযোগ করে জানান, অপারেশনের পর মিথ্যা কথা বলে তাদের বাচ্চাকে অতিরিক্ত সময় অপারেশন থিয়েটারে রাখার পর তাকে একটি আলাদা রুমে রাখা হয়। এ সময় সেখানে কাউকে যেতে দেয়া হয়নি। শিশুর পরিবারকে জানানো হয় এখন সেখানে যাওয়া যাবেনা। এভাবে কয়েক ঘন্টা যাওয়ার পর জোর করে রুমে ঢুকে শিশুটির শরীরে হাত দিলে শরীর বরফের মত হিম শীতল অবস্থায় দেখতে পায়। এ সময় শিশুটির বাবা মার কান্নাকাটিতে আকাশ বাতাশ ভারী হয়ে ওঠে। নিহত শিশুর পিতা ফিরোজুল ইসলাম সংশ্লিষ্ট ডাক্তারের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসা অভিযোগ করে বলেন, তাদের দাবীকৃত টাকা আগাম পরিশোধের পরও তার সুস্থ্য ছেলেকে মেরে ফেলা হয়েছে। এমন কি ছেলের মৃত্যুর হবার পরেও ঘটনা গোপন করে রাখে।
এর আগে ৮ এপ্রিল অনুরুপ এক ঘটনায় বগুড়া শহরের মালেকা নার্সিং হোমে এক কন্যা শিশু মোছাঃ হুমাইরা মারা যায়। সেবারও একই চিকিৎসক অপারেশন করেছিলেন। ডাক্তারের ভুল অপারেশনের কারণে মৃত্যুর অভিযোগ করে ক্লিনিকে ব্যপক ভাংচুর চালায় বিক্ষুব্ধ জনতা।
বগুড়া সদর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) রেজাউল ইসলাম রেজা জানান, মৃত ছেলের বাবা এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ করেনি। নিহতের পরিবারের পক্ষে অভিযোগ করা হলে আটক দুই ডাক্তারের বিরুদ্ধে আইনব্যবস্থা নেয়া হবে। অভিযোগ না থাকায় আটক দুই ডাক্তারকে শর্ত সাপেক্ষে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। শিশুটির মরদেহ রাতেই ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়।
অভিযুক্ত ডাক্তার বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান (নাক কান ও গলা) ডাঃ সাঈদুজ্জামান বলেন, এনেসথেসিয়ার কারণে শিশুটির মৃত্যু ঘটে থাকে পারে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন