৫০ কেজির বস্তায় ৩০ কেজি চাল ভর্তির অভিযোগে কক্সবাজার সদর খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন ও দারোয়ান মোঃ রিদওয়ান আলীকে আটক করেছে র্যাব।
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে খাদ্য গুদামে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। এ সময় গুদামটি সিলগালা করে দেয়া হয়েছে। অভিযানকালে কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এএইচএম মাহফুজুর রহমানসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অভিযোগ উঠেছিল সদর খাদ্য গুদামে অনিয়ম দুর্নীতির। এজন্য প্রশাসন অভিযান চালিয়েছিল ২০ অক্টোবর। বিষয়টি তদন্তে গঠিত হয় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি। কমিটি রিপোর্ট জমা দিতে না দিতেই আবার জালিয়াতি ধরা পড়লো সদর খাদ্য গুদামে। বারবার অভিযানের পরও খাদ্যগুদামে অনিয়ম-দুর্নীতি কেন থামছে না? তা ভাবিয়ে তুলেছে কক্সবাজারবাসীকে। এতে বড় কর্তার হাত থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আটক দুুুুুুই জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কক্সবাজার র্যাব ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে, অভিযানের খবর পেয়ে পালিয়ে গেছেন জালিয়াতি ও অনিয়মের অন্যতম হোতা উপখাদ্য পরিদর্শক কামরুল ইসলাম।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক দেবদাস চাকমা বলেন, বস্তায় অনিয়মের অভিযোগে দুইজনকে আটক করা হয়েছে শুনেছি। তবে, কেমন জালিয়াতি করেছে? তা আমি নিশ্চিত নই। অনেক সময় ভেজা চাল শুকাতে বস্তা থেকে বের করতে হয় বলেও দাবি করেন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক। তবে তিনি দুঃখ করে এও বলেন, হাতে অস্ত্র থাকলে যেমন তেমন করা যায়। আমাদের তো অস্ত্র নাই। দেবদাস চাকমা আক্ষেপ করে বলেন, মনে হয় আমাদের কাজকর্মের তথ্যগুলো এখানকার কেউ পাচার করছে।
খাদ্য গুদামে অভিযানের বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এএইচএম মাহফুজুর রহমান বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাবের একটি দল গুদামে অভিযান চালায়। এসময় চাল নিয়ে জালিয়াতির বিষয়টি হাতেনাতে ধরা পড়ে। গুদাম কর্মকর্তাসহ দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। গুদামটি সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে।
ইউএনও বলেন, গুদামটিতে ৫০ কেজির চালের জায়গায় ৩০ কেজির বস্তা পাওয়া গেছে। তাই সিলগালা করা হয়েছে। পরবর্তীতে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এর আগে গত ২০ অক্টোবর অভিযান চালিয়ে চাল নিয়ে জালিয়াতিকালে হাতেনাতে দুই শ্রমিক আটক ও সিলগালা করা হয়েছিল ৫ নং গুদামটি। কক্সবাজার সদর সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোঃ শাহরিয়ার মুক্তার ওই দিনের অভিযান পরিচালনা করেছিলেন।
জানাগেছে, এসব জালিয়াতির প্রধান হিসাবে চিহ্নিত উপখাদ্য-পরিদর্শক কামরুল ইসলাম ওই দিনের অভিযানেও ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। ওই ঘটনায় গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির রিপোর্ট জমা দিতে না দিতেই আবার জালিয়াতি ধরা পড়লো সদর খাদ্য গুদামে। বারবার অভিযানের পরও খাদ্যগুদামে অনিয়ম-দুর্নীতি কেন থামছে না? তা ভাবিয়ে তুলেছে কক্সবাজারবাসীকে। এতে বড় কর্তার হাত থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জড়িত কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সকলের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তুলেছে স্থানীয়রা।
এদিকে খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, শ্রীমন্ত পাল সাগর নামের একজন চাল ব্যবসায়ীর সাথে এসব জালিয়াত চক্রের গভীর সম্পর্ক রয়েছে । তার নেতৃত্বে গড়ে উঠেছে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। যাদের সাথে খাদ্যগুদামের কয়েকজন কর্তা ব্যক্তির হাত রয়েছে।
শহরতলী লিংক রোড সংলগ্ন বিসিকে সাগরের মালিকানাধীন সাগর কোল্ড স্টোরেজে অবৈধভাবে খাদ্যপণ্য মজুদের অভিযোগে গত বুধবার ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করেছে জেলা প্রশাসনের মোবাইল কোর্ট।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন