টাঙ্গাইলের সখিপুরে সাবেক স্বামীর আত্মহত্যা করার দিন থেকেই সাবেক স্ত্রী আরজিনা বেগম (৩০) নিখোঁজ থাকার ১৬ দিন পর অবশেষে আরজিনার লাশ পাওয়া গেছে। শুক্রবার বিকেলে উপজেলার পাহাড়কাঞ্চনপুর বন থেকে গলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরনের কাপড়, স্যান্ডেল ইত্যাদি দেখে মা নাছিমা বেগম ও ছেলে নাঈম হোসেন আরজিনার লাশ শনাক্ত করেন। পুলিশ বিকেলেই লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় আরজিনার মা নাছিমা বেগম ১৫ দিন আগে (১০.১০.১৯) বাদী হয়ে সখিপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। আরজিনাকে খুন করে লাশ গুম করে মেয়ের সাবেক স্বামী জাহাঙ্গীর আলম নিজেই আত্মহত্যা করেছে বলে তিনি (নাছিমা) জিডিতে উল্লেখ করেছিলেন। উল্লেখ্য, গত ৯ অক্টোবর বেলা ১১ টার দিকে আরজিনার সাবেক স্বামী জাহাঙ্গীর আলম নিজ বাড়ির পাশে কাঁঠাল গাছে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করে। ওই দিন ভোরে জাহাঙ্গীরের ফোন পেয়ে আরজিনা নিজ বাড়ি থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন। এ নিয়ে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও অনলাইন পত্রিকায় প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়েছে। সখিপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফয়সাল আহমেদ জানান, উপজেলার বহুরিয়া ইউনিয়নের খামারচালা গ্রামের কালু মিয়ার ছেলে জাহাঙ্গীর আলম আনুমানিক পাঁচ বছর আগে সখিপুর পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের খান মার্কেট এলাকার কবির হোসেনের মেয়ে আরজিনা আক্তাররের সঙ্গে প্রেম করে বিয়ে করেন। আরজিনা তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী। জাহাঙ্গীরের সংসারে দুই স্ত্রী থাকায় সব সময় ঝগড়া-বিবাদ লেগেই থাকতো। গত মাস ছয়েক আগে আরজিনা জাহাঙ্গীরকে তালাক দিয়ে বাপের বাড়িতে চলে আসেন। গত কয়েক মাস ধরে আরজিনাকে আবার বিয়ে করার জন্য জাহাঙ্গীর নানা সময়ে প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। আরজিনার মা নাছিমা বেগম জিডিতে উল্লেখ করেন, আমার মেয়ে পুনরায় বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হলে মেয়েকে খুন করে নিজে আত্মহত্যা করবে বলে হুমকি দেয়। গত ৫ অক্টোবর এ হুমকি দেয় বলে মেয়ের মা নাছিমা বেগম জানান। শুক্রবার সন্ধ্যায় নাছিমা বেগম এ প্রতিনিধিকে বলেন, গত ৯ অক্টোবর আমার মেয়ে ভোরে জাহাঙ্গীরের ফোন পেয়ে ঘর থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। অন্যদিকে জাহাঙ্গীরও ওইদিন ভোরে বাড়ি থেকে বের হয়ে সকাল বেলা ১১ টার দিকে বাড়ির ২০০ গজ দূরে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেন। সকালে দুইজনের সঙ্গে দেখাও হয়েছে বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। এতে বোঝা যায়, আগের হুমকির সঙ্গে ঘটনার মিল রয়েছে। আমার ধারণা পুনরায় বিয়েতে আমার মেয়ে রাজি না হওয়ায় তাঁকে খুন করে লাশ গুম করে জাহাঙ্গীর আত্মহত্যা করে। সখিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো.আমির হোসেন বলেন, মামলার যিনি আসামি হবেন, সেও গত ১৬ দিন আগে আত্মহত্যা করেছেন। লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে। খুন একাই করেছেন নাকি আরও কেউ জড়িত কিনা তা তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন