স্টাফ রিপোর্টার : তাহরিকে খাতমে নবুয়্যাতের আমির আল্লামা ড. এনায়েত উল্লাহ আব্বাসী বলেন, মানব জাতির ইহকালীন কল্যাণ পরকালীন সফলতা ও মুক্তির জন্য আল্লাহ প্রদত্ত মনোনীত স্বীকৃত একমাত্র জীবন বিধান বা দ্বীন হল ইসলাম, দ্বীনের দাওয়াতে আল্লাহ তায়লার পক্ষ থেকে যুগে যুগে লক্ষাধিক নবী ও রাসূল পৃথিবীতে এসেছেন। সবার পরে এসেছেন আখেরী নাবী নাবীকূলের সম্রাট নূরনবী হজরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ তায়ালা থেকে আজ থেকে দেড় হাজার বছর আগে সব শ্রেষ্ঠ নবী ও রাসূল হিসেবে প্রেরণ করে নবুওয়্যাত ও রিসালাতের দরজা চির তরে বন্ধ করে দিয়েছেন। ওনার পরে আজ পর্যন্ত পৃথিবীতে অবশ্যই কোন প্রকারই নবী কিংবা রাসূল আসে নাই। অবশ্যই এখনো নাই অবশ্যই কিয়ামত পর্যন্ত আসবেনা। এ আকীদা বা বিশ্বাসকেই বলা হয় আকীদা খাতমে নবুয়্যাত। এ আকীদায় যার বিশ্বাস থাকবে না নিঃসন্দেহে যে কাফেরে পরিণত হয়ে যাবে এবং তার পরিচয় হবে অমুসলিম। তাকে যে কাফের মনে করে না সেও কাফের হয়ে যাবে। ইসলাম গতানুগতিক কোন ধর্ম নয় বরং ইসলামের মূল হল ঈমান আর আকীদা। বিশ্বাসে সামান্যতম কুফর বা শিরক থাকলে তার মুসলমান হওয়ার পরিচয় দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। নিশ্চয়ই তার পরিচয় হবে কাফের, মুশরিক বা মুনাফেক। খাতমে নবুওয়্যাতের আন্দোলন বা খতমে নবুয়্যাতের জিহাদ সবচেয়ে বড় আন্দোলন, সবচেয়ে বড় জিহাদ।
গতকাল ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে তাহরিকে খাতমে নবুয়্যাত আন্দোলনের উদ্যোগে আয়োজিত সভাপতির বক্তব্যে কথা বলেন। ইফতার মাহফিলে আরো বক্তব্য রাখেন দৈনিক ইনকিলাবের সহকারী সম্পাদক মাওলানা উবায়েদুর রহমান খান নদভী, মাওলানা এটিএম হেমায়েত উদ্দিন মাওলানা ড. মুহাম্মদ ইছা শাহেদী, শাহ মুহাম্মদ রুহুল আমিন, মাওলানা আরিফ বিল্লাহ, মাওলানা মাসুদুর রহমান বিক্রমপুরী, এহসান উল্লাহ আব্বাসী, মাওলানা নেমায়ত উল্লাহ আব্বাসী, মাওলানা ওবায়েদ উল্লাহ আব্বাসী, মাওলানা আলমগীর হোসেন আনসারী।
পীর সাহেব জৌনপুরী বলেন, ইসলামের ইতিহাসের পর্যালোচনা করলে দেখা যায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সোনালীযুগ দেড় হাজার বছর আগে দ্বীনের পক্ষে কাফের ও মুশরেকদের পরিচালিত সম্মিলিত যুদ্ধে দশ বছরে ইসলামের পক্ষে ও বিপক্ষে মোট মানুষ নিহত হয়েছিল মাত্র ১০১৮ জন অথচ আবুবক্কার সিদ্দিক (রা:) খিলাফত কালে মুসায়লামাতুল কাযযাবের বিরুদ্ধে পরিচালিত যুদ্ধে একদিনে ২৪০০ সাহাবী শাহাদাত বরণ করেছেন যার মধ্যে সাতশত সাহাবী কুরআনের হাফেজ ছিলেন। ভÐ মুসায়লামা ও তার অনুসারীদের ধ্বংসের মাধ্যমে হযরত আবুবকর (রা:) সে সময় উম্মাতকে আকীদা খাতমে-নবুওয়্যাত বিরোধী চক্রান্ত থেকে উম্মাতে মুসলিমাকে রক্ষা করেছিলেন। যুগে যুগে যখনি আকীদা খাতমে নবুওয়্যাতের বিপক্ষে চক্রান্তের জন্য মিথ্যা নবুওয়্যাতের দাবীদার ভÐ মুসায়লামাদের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে উম্মাতের মুসলমানগণ তাদের ব্যাপারে এক মুহূর্তের জন্যেও আপোষ করেন নি, তাদের সকল চক্রান্তসহ তাদেরকে নির্মূল করেছেন। ইসলামের মূল ভিত্তি আকীদায় খাতমে নবুয়্যাতের বিপক্ষে সচচেয়ে জঘন্য চক্রান্ত করেছে কুখ্যাত ইংরেজ বেনিয়ারা। তারা বেছে নেয় কাদিয়ানিদের কুখ্যাত কাফের কাজজাব মীর্জা গোলাম কাদিয়ানীকে তার বিরুদ্ধে সমসাময়িক আলেম ওলামাদের মেহেনত ও প্রচার প্রচারণার কারণে ইংরেজদের মদদ পুষ্ট হয়েও মীর্জা গোলাম কাদিয়ানীর সকল চক্রান্ত নস্যাত হয়ে যায়। কাদিয়ানের কাজ্জাব মীর্জা গোলাম কাদিয়ানী লা নাত প্রাপ্তি হয়ে জাহান্নামের কুকুরে পরিণত হয়।
তারই অনুসারী কুখ্যাত কাদিয়ানীর মার্কিন ইসরাইল ও ব্রিটেনের মদদে মুসলমানদের আকিদা খতমে নবুওয়্যাতের বিরুদ্ধে চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে।
সরকার ও বিরোধী দল, মিডিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে বসে কাদিয়ানীরা ইসলাম ও মুসলমানের বিরুদ্ধে কাজ করে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে তারা কাদিয়ানী কুফরী মতবাদ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জনগণের মাঝে ছড়িয়ে দিতে আর এফ এল প্রাণ পাবলিক স্কুল নামে ফ্রি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে। অথচ দেশের আলেম সমাজের এ বিষয়ে তেমন কোন দৃষ্টি নাই।
তাহরিকে খতমে নবুয়্যাতের পক্ষ থেকে পীর সাহেবের ৩ দফা দাবী হচ্ছে : বাংলাদেশে কাদিয়নীদের অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে সরকারীভাবে। কাদিয়ানীদের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও প্রচার প্রচারণা পুস্তক ইত্যাদি নিষিদ্ধ করতে হবে এবং জাতীয় শিক্ষানীতি ও পাঠ্য পুস্তকে যে সকল স্থানে ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক বিষয় রয়েছে তা অনতি বিলম্বে পরিবর্তন করতে হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন