শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহানগর

নরসিংদীতে নকল হিজড়া সেজে বাতেন বাহিনীর চাঁদা ও তোলাবাজী

প্রকাশের সময় : ২১ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

সরকার আদম আলী, নরসিংদী থেকে : হোটেল বাবুর্চি বাতেন এখন হিজড়া সেজে অবাধে তোলাবাজী আর চাঁদাবাজীতে লিপ্ত হয়েছে। নকল হিজড়া এই বাতেন ও তার বাহিনী বেপরোয়া তোলাবাজী ও চাঁদাবাজীর মুখে হাট বাজারের খুদে ব্যবসায়ীরা জিম্মি হয়ে পড়েছে। প্রতিদিন নরসিংদী শহরের ব্রাহ্মণদী নয়াবাজার সহ বিভিন্ন বাজারে হানা দিয়ে বাতেন ও তার বাহিনী লুটে নিচ্ছে হাজার হাজার টাকার মালামাল ও টাকা পয়সা। তার পিছনে নকল হিজড়াদের দল থাকায় কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। বাবুর্চি বাতেনের তোলাবাজীর কারণে ভিক্ষুকরা ভিক্ষা পাচ্ছে না। উপরন্তু এই তোলাবাজীর ভর্তুকি দিতে হচ্ছে সাধারণ গ্রাহকদেরকে।
জানা গেছে, নরসিংদী জেলা শহরের বানিয়াছল এলাকার বাসিন্দা এই বাতেন বাবুর্চি হিসেবে কাজ করতো নরসিংদী রেলস্টেশনের কয়েকটি হোটেলে। তখন সে লুঙ্গী ও শার্ট পরিধান করতো। হঠাৎ নরসিংদী শহরে বহিরাগত হিজড়াদের উপদ্রব বেড়ে যায়। তারা বিভিন্ন বাজারে ও বাসায় চাঁদাবাজী করে মোটা অংকের টাকা লুট করে বিনা বাধায় চলে যায়। হিজড়াদের এই চাঁদাবাজী ও তোলাবাজীর লাভ দেখে বাবুর্চি বাতেন তার পেশা পরিবর্তন করে ফেলে। সে হঠাৎ শাড়ী ও বøাউজ পরে নকল হিজড়া সেজে যায়। তার সাথে নেয় স্থানীয় ভাষায় মাইগ্যা হিসেবে পরিচিত আরো কিছু নকল হিজড়া। সে সপ্তাহে প্রতিদিন ২/৩ জন নকল হিজড়া নিয়ে ব্রাহ্মণদী নয়াবাজার সহ বিভিন্ন বাজারে হানা দেয়। বাজারের দোকানদাররা কিছু বোঝার আগেই নিজ হাতে খাবলা মেরে তরি তরকারী, শাক-সবজী, পেয়াজ, মরিচ, রসুনসহ বিভিন্ন মসলা লুট করতে থাকে। তার সাথের হিজড়ারা তার পাশে বড় ছালা ধরে রাখে। আর বাতেন খাবলা মেরে মেরে মালামাল নিয়ে ছালায় ভরে। এসময় কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে বাতেন। তার সাথী নকল হিজড়ারা দোকানদারদেরকে মারধোর করতে থাকে। বাতেন এভাবে দোকানদারকে গালাগাল, মারধোর করার পর সে এখন হিজড়াদের দলপতি হয়ে গেছে। শহরের হাটবাজারগুলোতে লুটপাট করার পর সে হানা দেয় শহরের আশেপাশে গ্রামগুলোতে। যেখানেই বিয়ের অনুষ্ঠান হয়, যেখানেই নবজাতকের জন্ম হয় এবং মুসলমানদের সুন্নতে খাতনা হয়, হিন্দুদের মুখে ভাত অনুষ্ঠান হয়, সেখানেই হানা দেয় বাতেন ও তার নকল হিজড়া বাহিনী। বাড়ী বাড়ী গিয়ে সে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে কেউ অস্বীকৃতি জানালে শুরু হয় অশ্লীল গালাগাল আর অশালীন আচরণ। তারা মেয়ে মানুষের সামনে শরীর থেকে কাপড় খুলে নগ্ন হয়ে যায়। শুধু তাই নয় নবজাতকদের বাড়ীতে গিয়ে আতুড় ঘর থেকে নবজাতককে জোরপূর্বক কেড়ে নিয়ে হ্যান্ড বলের মত হাত থেকে হাতে ছুড়ে মেরে লুফালূফি করতে থাকে। এসময় অনেক মায়েরা জ্ঞানও হারিয়ে ফেলে। খাতনা অনুষ্ঠানের বাড়ীতে গিয়ে শিশুদেরকে জোর পূর্বক নিয়ে তাদের লজ্জাস্থানে ধরে পিতা-মাতার কাছে টাকা দাবি করে। অন্যথায় লজ্জাস্থান ছিড়ে ফেলার হুমকি দেয়। এ অবস্থায় মানুষ অসহায় হয়ে টাকা দিতে বাধ্য হয়। অনেক জায়গা থেকে পুলিশকে জানিয়েও মানুষ কোন সুফল পাচ্ছে না।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন