শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

নূর হোসেনকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দেয়ায় ফুঁসে উঠেছে রংপুরের মানুষঃ রাঙ্গার শাস্তির দাবিতে মিছিল-মিটিং অব্যাহত

পরিবারসহ জাতির কাছে ক্ষমা না চাইলে রাঙ্গাকে প্রতিহত করার ঘোষণা

রংপুর থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৩ নভেম্বর, ২০১৯, ৪:৩৩ পিএম

৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে নিহত শহীদ নূর হোসেনকে নিয়ে মিথ্যা ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যকে কেন্দ্র করে ফুঁসে উঠেছে রংপুরের সর্বস্তরের মানুষ। প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক অঙ্গনসহ সর্বত্র। বক্তব্য প্রত্যাহার করে নুর হোসেনের পরিবারসহ জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার দাবীতে মাঠে নেমেছেন দল-মত নির্বিশেষে মাঠে নেমেছেন সর্বস্তরের মানুষ। রংপুর মহানগরী ছাড়াও বিভিন্ন উপজেলায় চলছে সভা-সমাবেশ ও মিছিল-মিটিং। এসব সমাবেশ থেকে রাঙ্গাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে আল্টিমেটাম দেয়া হচ্ছে অনতিবিলম্বে রাঙ্গাকে তার কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে এবং তাকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দিতে হবে। অন্যথায় রংপুর তার সকল কার্যক্রম প্রতিহত করা হবে।

আজ বুধবার সকালে নগরীর কাচারিবাজারে আয়োজিত মানববন্ধন ও সমাবেশ করে ৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য পরিষদসহ বিভিন্ন দল ও পেশার মানুষ। মানব বন্ধন ও সমাবেশ থেকে বক্তাগন বলেন, হঠাৎ রাজনীতিতে আসা মশিউর রহমান রাঙ্গা নিজের চরিত্রের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ বিষয়গুলি শহীদ নূর হোসেনের চরিত্রে মাখানোর চেষ্টা করে চরম ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন। তার এই কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য শুধু রংপুরবাসীকেই নয় গোটা জাতিকে অপমান করেছে। অবিলম্বে তাকে নূর হোসেনের পরিবার এবং জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। অন্যথায় তাকে রংপুরে ঢুকতে দেয়া হবে না এবং রংপুরে তার সকল প্রকার কর্মকান্ড প্রতিহত করা হবে।
বক্তাগন আরও বলেন, গণতন্ত্র মুক্তির আন্দোলনে নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন নূর হোসেন। অথচ জাতীয় পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা তাকে কটূক্তি করে গোটা দেশের মানুষকে অপমান করেছেন। শুধু তাই নয়, বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে উল্টাপাল্টা কথা বলে ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন তিনি। রংপুরে এলে তাকে সমুচিত জবাব দেয়া হবে। জাতির কাছে ক্ষমা না চাইলে রাঙ্গাকে রংপুরে ঢুকতে দেয়া হবে না।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাফিউর রহমান সফি, সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মণ্ডল ও উপ-দপ্তর সম্পাদক শফিকুল ইসলাম রাহেল, ছাত্র নেতা লিটনসহ স্বেরাচার বিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ছাত্র নেতাগন।

এর আগে মঙ্গলবার একই স্থানে মানববন্ধন ও সমাবেশ করে রংপুর সরকারি কলেজ ছাত্রলীগ। সেখানেও মসিউর রহমান রাঙ্গাকে রংপুরে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে তার কুশপুত্তলিকা পোড়ায়। একই দাবিতে বিকেলে নগরীর কাচারী বাজারে রংপুর মহানগর যুবলীগের আয়োজনে এক প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেও জাপার মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গার কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়। মহানগর যুবলীগের সভাপতি সিরাজুম মনির বাশারের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মুরাদ হোসেনের সঞ্চলনায় বক্তব্য রাখেন রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাফিউর রহমান সফি, সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মন্ডল প্রমুখ।

এছাড়া মশিউর রহমান রাঙ্গার নির্বাচনী এলাকা গঙ্গাচড়ায়ও বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। সেখানেও মসিউর রহমান রাঙ্গার কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়। সমাবেশে বক্তারা শহীদ নুর হোসেনকে নিয়ে রাঙ্গার ঐসব কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে গঙ্গাচড়ায় রাঙ্গাকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেন। পাশাপাশি অবিলম্বে রাঙ্গাকে নুর হোসেনের মায়ের কাছে স্ব-শরীরে গিয়ে ক্ষমা চাওয়া ও বাংলাদেশের সমগ্র জাতির কাছে লিখিত ক্ষমা চাওয়ার আল্টিমেটাম দেন। নইলে গঙ্গাচড়ায় তার সকল প্রকার কর্মকাণ্ড প্রতিহতের ঘোষণা দেয়া হয়। গঙ্গচড়ার স্থানীয় জিরো পয়েন্ট মোড়ে বিকালে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করে আ’লীগ।আর এ সময় আ’লীগ ও জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ মিছিল শেষে স্থানীয় জিরো পয়েন্ট মোড়ে সমাবেশে মিলিত হচ্ছিলেন নেতাকর্মীরা। ঠিক সেই সময় রাঙ্গার কয়েকজন লোক হামলা করে। শান্তিপূর্ণ সাবেশে হামলাকারীদের গ্রেফতারে ২৪ঘন্টার আল্টিমেটাম দেন স্থানীয় আ’লীগ ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতারা।
উলে­খ্য, ১০ নভেম্বর নুর হোসেন দিবসের আলোচনা সভায় নূর হোসেনকে নিয়ে মিথ্যা ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দেয়ার পর পরই তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন