ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মো. ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই বলেছেন, রাসূল (স.) এর আগমনের সাথে সাথে প্রচলিত জাহেলী সমাজের ভিত নড়ে গিয়েছিল। নবী (স.) এর দাওয়াত ছিল- জাহেলিয়াকে অস্বীকার করে ইসলামের ঝান্ডাকে উড্ডীন করা। অথচ- আজকে আধুনিক কায়দায় পশ্চিমাদের সংস্কৃতি আমদানী করা হয়েছে। ইসলামের বৃহৎ স্বার্থেই এদের সাথে কোন আপোষ করা যাবেনা। হাদিসের উদ্বৃতি দিয়ে তিনি বলেন, রাসূল স. বলছেন যে ব্যক্তি জাহেলিয়াতের দিকে মানুষকে ডাকবে সে জাহান্নামের লাকড়ি হবে। চাই সে নামাজ পড়–ক, রোজা রাখুক এবং বড় দ্বীনদার মুসলমান বলে মনে করুক না কেন? মুসলিম শরীফ। তাই হাদীস থেকে জানা গেল- মুসলমান হয়েও যারা জাহেলিয়াতের দিকে আহŸান করে তারা ক্ষতিগ্রস্থ হবে। গত শুক্রবার বাদ এশা ও ১৬ নভেম্বর শনিবার বাদ ফজর পৃথক বয়ানে শায়খে চরমোনাই উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
মাহফিলে উপস্থিত লাখো জনতার উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমি আজ কোরআন হাদিসের কথা বলার জন্য আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। শুধু বলেই যাবো কোরআন হাদিসের কথা। মানানোর জন্য আমি আসি নাই। এ দায়িত্ব আমার নয়। আমার দায়িত্ব হল কোরআন-হাদীসের বাণী আপনাদের কাছে পৌছে দেওয়া। তিনি কোরআনের উদ্বৃতি দিয়ে বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তার রাসূলের পূর্ণ আনুগত্য করবে আল্লাহ পাক তাকে তলদেশের নহর প্রবাহমান জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। তারা অনন্তকাল তাতে অবস্থান করবে- সূরা ফাতাহা ১৭। অন্যত্র এরশাদ হচ্ছে- যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তার রাসূলের কথা অমান্য করে চলবে আল্লাহ তাকে জাহান্নামে প্রবেশ করাবেন- সূরা নিসা ১৪। এখন মুসলমানদেরকে নেতা নির্বাচনের ক্ষেত্রে গভীরভাবে চিন্তা করতে হবে। সে কি রাসূল সা.কে নেতা মেনে নিবে, তার নেতৃত্ব আদর্শ মেনে নিবে নাকি গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, পুজিবাদ, জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা প্রবক্তাদের নেতা মেনে নিবে। রাসূল সা. এর মৌলিক ৪টি বিষয়ের উপর মুসলমানদেরকে আমল করতে হবে। এর কোন একটিকে বাদ দেওয়া যাবেনা। দাওয়াত, তালিম, তাসকিয়ায় নাফ্স ও জিহাদ।
তিনি বলেন, আল্লাহ মানব জাতিকে সৃষ্টি করেছেন মানুষের উপকার করার জন্য। তোমরা ভাল কাজের আদেশ দিবে। অন্যায় কাজে বাধা দিবে। আসলে ইসলামের শত্রুরাই সন্ত্রাসী আর জঙ্গিবাদী সৃষ্টি করে এবং অজ্ঞ মুসলমানদেরকে জঙ্গি হওয়ার পরিবেশ সৃষ্টি করে দিয়ে মুসলমান ও মুসলমান দেশের ক্ষতি করছে।
মাহফিলে বিশেষ মেহমান হিসেবে দারুল উলূম দেওবন্দের সিনিয়র মুহাদ্দিস হযরত মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ আমীন পালনপুরী বলেন, চরমোনাইয়ের সিলসিলা রশীদ আহমদ গঙ্গুহী (র.) সিলসিলা, দেওবন্দের সিলসিলা। আমি দোয়া করি আল্লাহ পাক যেন এই সিলসিলাকে কবুল করেন এবং এই সিলসিলায়ে যারা আছে, থাকবে তাদেরকে যেন আল্লাহ কবুল করেন। বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটি সিলেট বিভাগীয় কাম অডিটর মাওলানা রেজওয়ানুল হক চৌধুরী রাজুর সভাপতিত্বে আরো বয়ান পেশ করেন পীর সাহেব চরমোনাই (রহ.) খলিফা অধ্যক্ষ হাফিজ মাওলানা ইউনুছ আহমদ, আল্লামা আহমদ শাহ শফীর খলিফা হযরত মাওলানা ওমর ফারুক সদ্বিপী, বাংলাদেশ কোরআন শিক্ষা বোর্ডের সহকারী প্রশিক্ষণ সচিব হযরত মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক জেহাদী, মাওলানা আব্দুল মালেক বিবাড়িয়া, কাজিরবাজার মাদ্রাসার শায়খুল হাদীস হযরত মাওলানা আহমদ আলীসহ স্থানীয় ওলামায়ে কেরাম।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন