চট্টগ্রাম ব্যুরো : রিজার্ভারে রাখা পানি ভাসছে ঝাঁকে ঝাঁকে মরা তেলাপোকা। স্যুয়ারেজ ও নর্দমার পানি গিয়ে মিশছে সেই রিজার্ভারে। সেই পানি বোতল ভর্তি করে মিনারেল ওয়াটার হিসেবে বিক্রি করা হচ্ছে। গতকাল (মঙ্গলবার) চট্টগ্রাম নগরীর আন্দরকিল্লায় প্রিয়া ড্রিংকিং ওয়াটার কারখানায় গিয়ে এমন দৃশ্য দেখেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। কারখানার মালিক পাপড়ি রাণী ধর ঝন্টুকে দুই লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে তিন মাসের কারাদ- প্রদান করেন আদালত। এ কোম্পানির বিএসটিআইর লাইসেন্সও নেই।
অভিযান পরিচালনাকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জানান, রিজার্ভারে ওয়াসা, ডিপ টিউওয়েল ও স্যুয়ারেজের লাইনের একত্রিত সংযোগ এবং পানিতে অসংখ্য মৃত তেলাপোকা, স্যুয়ারেজের ময়লা দেখা যায়। এছাড়াও জার ওয়াশিং মেশিন থাকার কথা থাকলেও দেখা যায় সাধারণ ডিটারজেন্ট দিয়ে হাতে পরিষ্কার করা হয় পূর্বে ব্যবহৃত জারগুলো। পানি রিফিল হবার কথা অটোমেটিক ফিলিং মেশিনে কিন্তু তাও অকার্যকর অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়। জীবাণুমুক্তকরণের জন্য কোন ইউভির (অতিবেগুনী রশ্মি) কোন ব্যবস্থাও সেখানে ছিল না। পানির জারগুলোতে কোন উৎপাদন ও মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ সম্বলিত কোন ট্যাগ বা সীল কোন কিছুই খুঁজে পাওয়া যায়নি।
চট্টগ্রামে ২৯টি সম্পূর্ণ অবৈধ ও লাইসেন্সবিহীন ড্রিংকিং ওয়াটার কোম্পানি রয়েছে। এমনকি লাইসেন্সপ্রাপ্ত অনেক কোম্পানির বিরুদ্ধে সরাসরি ওয়াসার পানি ব্যবহার করে বোতলজাত করার অভিযোগ রয়েছে। জেলা প্রশাসন এ বিষয়গুলো খতিয়ে দেখছে, অভিযান অব্যাহত থাকবে।
এদিকে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ইফতারের বিভিন্ন সমগ্রী তৈরি করায় দুই হোটেলকে মোট পঁচিশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। চকবাজারের সাদিয়াস কিচেনের ফ্রিজে বাসি খাবার পাওয়া যাওয়ায় মোবাইল কোর্ট তাদের পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করে ও সতর্ক করে দেয়। পরবর্তীতে সাইমুম রেস্তোরাঁয় অভিযান চালালে সেখানে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরি করতে দেখা যায়। মোবাইল কোর্টের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা বাসি ইফতারি বাইরে ড্রেনে ফেলে দেয়। রান্নাঘরে নোংরা পরিবেশে খাবার তৈরি হচ্ছিল, ভাজার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছিল পোড়া তেল। ফ্রিজে মাছ-গোশতের সাথে ইফতার তৈরির সামগ্রী রাখা হয়। স্টোর রুমে পচা আলু ও ছোলা দেখা যায়। এ সব কারণে ঐ প্রতিষ্ঠানকে মোবাইল কোর্ট বিশ হাজার টাকা জরিমানা করে।
অপরদিকে সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ফোরকান এলাহি অনুপম খুলশী থানাধীন ষোলশহর কর্ণফুলী কমপ্লেক্সে কাঁচাবাজার, মুদির দোকানে পণ্য সামগ্রীর মূল্য তালিকা পর্যবেক্ষণ, পণ্যের মান ও দাম যাচাই করেন। এই সময় পণ্য ক্রয়ের পাইকারী রসিদ দেখাতে ব্যর্থ হওয়ায় মেসার্স ইলিয়াছ এন্ড সন্স মুদি দোকানকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে ১০ হাজার টাকা ও অবৈধ স্থানে ছাগল জবাই করে সীলবিহীন গোশত বিক্রির দায়ে সিটি কর্পোরেশন আইনে মো. কাসেমকে ৫ হাজার টাকাসহ মোট ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন