গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ভিসি সমর্থকদের হামলার ঘটনায় ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের ৬ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৫ জনকে স্থায়ী একাডেমিক ও ১ জনকে ২ সেমিস্টার বহিষ্কার করা হয়েছে। স্থায়ী একাডেমিক বহিস্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের রাফিজুল ইসলাম আইডি নং ২০১৫১১০৫০৩৪, নূরুদ্দিন নাহিদ ২০১৫১২০৫০৬০, আরিফুল ইসলাম সাকিব আইডি নং ২০১৪১২০৫০২৯, মো. মাজহারুল ইসলাম মিশন আইডি নং ১৬ এমজিটি ০৪৮ ও রাহাত আল হাসান আইডি নং ১৭ এমজিটি ০৪৩। জুলাই-ডিসেম্বর ২০১৯ ও জানুয়ারি-জুন ২০২০ এ দুই সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থী ইসমাইল শেখকে আইড নং ১৬ এমজিটি ০৬০। গতকাল রোববার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড.মো. নূর উদ্দীন আহমেদ স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ আদেশ দেয়া হয়।
উল্লেখ্য গত ১৯ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, নারী কেলেঙ্কারীসহ নানা অভিযোগ এনে শিক্ষার্থীরা তার পদত্যাগের এক দফা আন্দোলন শুরু করেন। আন্দোলনের তৃতীয় দিনে ২১ সেপ্টেম্বর কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা কর্তৃপক্ষের আদেশ অমান্য করে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।ওই দিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে আসার পথে ভিসি সমর্থক শিক্ষার্থী ও বহিরাগতদের হামলার শিকার হয় । এতে ২০ শিক্ষার্থী আহত হন।
এ ঘটনায় বিজ্ঞান অনুষদের সাবেক ডিন প্রফেসর ড. আব্দুর রহিম খানকে সভাপতি ও আইন অনুষদের সাবেক ডিন মো. আব্দুল কুদ্দুস মিয়াকে সদস্য সচিব করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন পদত্যাগী সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসির উদ্দিন। ২৯ সেপ্টেম্বর ওই কমিটি রেজিস্টারের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। তদন্ত প্রতিবেদনে হমলার ঘটনায় কোন স্বাক্ষ্য প্রমান নেই এই মর্মে প্রতিবেদন দাখিল করে আইনের আশ্রয় নেয়ার সুপারিশ করা হয়। কিন্তু ওই প্রতিবেদনের সুপারিশ অনুযায়ী কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
সাবেক ভিসি পদত্যাগের পর এ ঘটনায় পুনঃতদন্ত কমিটি গঠনের দাবি করে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে ২১ সেপ্টেম্বর হামলার প্রকৃত কারণ উদঘাটন, তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ ও সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য গত ২০ অক্টোবর সিএসই বিভাগের সভাপতি ও সহকারী অধ্যাপক ড. সালেহ আহমেদ, প্রক্টর ড. মো. রাজিউর রহমান, বাংলা বিভাগের সভাপতি ও সহকারী অধ্যাপক আব্দুর রহমান, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রভাষক মাহবুবা উদ্দিন ও প্রফেসর ড. মো. নূরউদ্দিন আহমেদকে সদস্য করে ৫ সদস্যের পুনঃতদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড, মো. নূরউদ্দিন আহমেদ জানান, ‘চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে তদন্ত কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃংখলা বোর্ডের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। এরপর গত ১৩ ও ১৪ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বোর্ড সভা করে ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের ৬ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত গ্রহন করে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন