মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

স্বাস্থ্য

শিশুদের জ্বরের কারণে খিঁচুনি

ডা: মাও: লোকমান হেকিম | প্রকাশের সময় : ২২ নভেম্বর, ২০১৯, ৫:২৭ এএম

আজকের শিশু হচ্ছে আগামী দিনের নাগরিক। এই আগামী দিনের নাগরিকটি যাতে সুস্থ দেহ-মন নিয়ে সুন্দর ভাবে গড়ে উঠতে পারে। তাই শিশুর বিকাশের প্রতি নজর রাখুন। আর এ কাজটি করতে পারেন সূচারুরূপে শিশুর জন্মদাত্রী ‘মা’। আপনার শিশু সুন্দর, সুস্থ ও সঠাম হয়ে গড়ে উঠুক। সব মা-বাবাই জ্বরের কারণে খিঁচুনিতে আক্রান্ত শিশুকে নিয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। মনে রাখবেন , এটি শিশুদের কোনো বিশেষ রোগ নয়। জ্বরের কারণে কোন কোন শিশুর শরীরের অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া মাত্র।

কেসস্টাডি: তাকিনের বয়স দুই বছর। খুব হাসিখুশি ও চঞ্চল। দুই দিন ধরে তার শরীর ভালো নেই। সর্দি, কাশি ও জ্বরে কাবু হয়ে পড়েছে। বাবা-মা ভাবলেন, ভাইরাসজনিত সাধারণ জ্বর, এমনিতেই সেরে উঠবে। আজ জ্বরের প্রকোপ আরো বেড়েছে। জ্বর ১০২ºফা ছাড়িয়ে যাওয়ার পর তাকিন যেন কেমন করতে লাগল, জ্ঞান হাড়িয়ে ফেলল, হঠাৎ শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল , দাঁত-চোয়াল শক্ত হয়ে গেল, হাত-পা বাঁকা হয়ে যেতে লাগল, সারা শরীর কাঁপতে লাগল। তাকিনের বাবা-মা এ অবস্থা দেখে অত্যন্ত ঘাবড়ে গেলেন। আতঙ্কিত হয়ে দ্রুত ডাক্তারের কাছে ছুটে গেলেন। তাকিনের এ লক্ষণটিই হলো জ্বরের কারণে খিঁচুনি। যাকে ফেবরাইল কনভালশন বলা হয়ে থাকে। আসুন জেনে নেই জ্বরের কারণে খিঁচুনি সম্পর্কে কিছু তথ্য: * সাধারণত ছয় মাস থেকে ছয় বছর বয়সী শিশুদের এটি হয়ে থাকে * মেয়েশিশুদের তুলনায় ছেলেশিশুদের এটি বেশি হয়ে থাকে। * সাধারণত পারিবারিক ইতিহাস থাকে। *খিঁচুনি সমস্ত শরীরব্যাপি (এবহবৎধষরংবফ) হয়ে থাকে। শরীরের শুধু বিশেষ কোনো অংশে আলাদাভাবে হয় না।* জ¦র > ১০২ºফা এর ওপর গেলেই এই খিঁচুনি হয়ে থাকে। * এই খিঁচুনি অল্প সময় স্থায়ী হয়, সাধারণত ২০ মিনিটের কম স্থায়ী হয়। * এই খিঁচুনি সাধারণত দিনে একবার (অর্থাৎ জ¦র > ১০২ºফা থাকলেও ২৪ ঘন্টায় একবার ) হয় । * এই খিঁচুনির জন্য শরীর বা ¯œায়ুতন্ত্রের স্থায়ী কোনো ক্ষতি হয় না। কী করবেন :- সব মা-বাবাই জ্বরের কারণে খিঁচুনিতে আক্রান্ত শিশুকে নিয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন । মনে রাখবেন , এটি শিশুদের কোনো বিশেষ রোগ নয় । জ্বরের কারণে শিশুর শরীরের অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া মাত্র। তাই আতঙ্কিত না হয়ে দ্রুত জ্বর কমাতে নিচের ব্যবস্থা গুলো নিন:- শিশুর শরীর থেকে সব জামা-কাপড় খুলে ফেলুন । * ভেজানো তোয়ালে বা গামছা দিয়ে সারা শরীর বারবার মুছতে হবে। * এই সময়ে শিশুকে খোলামেলা বাতাস পূর্ণ ঘরে এক দিকে কাত করে রাখা যেতে পারে। * দ্রুত শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। * প্রয়োজনে কাছের হাসপাতাল, ক্লিনিক বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে। তাদের দেয়া জ্বর কমানোর ওষুধ এবং খিঁচুনি রোধি ওষুধ ব্যবহার করবেন। শিশুদের খাদ্য-শিশুদের খাদ্য নরম ও তরল হলে ভাল হয়। যা সহজে খেতে পারে এবং হজম হয়। শিশুদের খাদ্য প্রোটিন যুক্ত হওয়া উচিত যেমন দুধ, মাখন, ডিম, মাংসের ঝোল, পাতলা ডাল, ফলের রস এবং শাকসবজির ঝোল ইত্যাদি

চিকিৎসক-কলামিস্ট।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন