গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, আজকাল বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় দেখা যাচ্ছে, শিক্ষকগণ প্রশাসনের বিভিন্ন পদ পদবী পাওয়ার লোভে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রমে ঠিকমতো অংশ না নিয়ে বিভিন্ন লবিং নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। অনেকে আবার নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করতেও পিছপা হন না। ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক ভুলে গিয়ে পারস্পারিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট লেনদেনের সম্পৃক্ত হোন, এটা অত্যন্ত অসম্মানের ও অমর্যাদাকর। এসব দেখে বিশ^বিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর হয়ে আমাকে মর্মাহত করে। শনিবার বিকেল ৫ টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ কামাল স্টেডিয়ামে আয়োজিত বিশ্ববিদ্যালয়ের একাদশ সমাবর্তনে তিনি এসব কথা বলেন তিনি। সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
এ সময় তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের উদ্দেশে বলেন, ‘মনে রাখবেন, আপনারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। সাধারণ মানুষ আপনাদেরকে সম্মান ও মর্যাদার উচ্চাসনে দেখতে চায়। তাই ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়ার জন্য নীতি ও আদর্শের সাথে আপোষ করবেন না। আপনাদের মর্যাদা আপনাদেরকে সমুন্নত রাখতে হবে। ব্যক্তি স্বার্থের কাছে আদর্শ যাতে ভূলুণ্ঠিত না হয় সে দায়িত্ব আপনাদেরকে নিতে হবে। আপনারা রাজনৈতিকভাবেও খুবই সচেতন ব্যক্তিত্ব। রাজনৈতিক মতাদর্শ ও চিন্তা-চেতনার একজন আরেকজনের পার্থক্য থাকতেই পারে। কিন্তু এর নেতিবাচক প্রভাব যেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের উপর না পরে তাও নিশ্চিত করতে হবে।’
এ সময় গ্রাজুয়েটদের উদ্দেশে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘তোমরা গ্রাজুয়েটরা দেশের উচ্চতর মানবসম্পদ। দেশের ভবিষ্যৎ উন্নয়ন ও অগ্রগতি নির্ভর করছে তোমাদের ওপর। তোমাদের তারুণ্য জ্ঞান মেধা ও প্রজ্ঞা হবে দেশের উন্নয়নের প্রধান চালিকাশক্তি। দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ থেকে একজন গ্র্যাজুয়েট হিসেবে সব সময় সত্য ও ন্যায়কে সমুন্নত রাখবে। নৈতিকতা দিয়ে দুর্নীতি ও অন্যায়ের প্রতিবাদ করবে।’
তোমরা কখনো অর্জিত ডিগ্রির মর্যাদা ব্যক্তিগত সম্মানবোধ আর নৈতিকতাকে ভূলুন্ঠিত করবে না। বিবেকের কাছে কখনো পরাজিত হবে না। মনে রাখবে, এদেশের খেটে খাওয়া মানুষ তাদের শ্রম ও ঘামের বিনিময়ে তোমাদের শিক্ষার ব্যয়-ভার বহন করছে। তাদের কাছে তোমরা ঋণী। এখন সময় এসেছে সেই ঋণ পরিশোধ করার। তোমরা তোমাদের মেধা, কর্ম ও সততা দিয়ে দেশ ও জনগণের কল্যাণ করতে পারলে এই ঋণ কিছুটা হলেও শোধ হবে।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মলয় কুমার ভৌমিকের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক রঞ্জন চক্রবর্তী।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন