কোলন বা মলাশয়ের ক্যান্সারকেই কোলন ক্যান্সার বলে । কোলন ক্যান্সার সব দেশেই পরিচিত অসুখ। এই ক্যান্সার অন্যান্য ক্যান্সারের মতই একটি জটিল রোগ। প্রতিবছর অনেকেই এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এবং দুর্ভাগ্যজনকভাবে মৃত্যুবরণ করছে। সাধারণত পুরুষেরা এই রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। বয়স বাড়লে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। সাধারণত ৪০-৫০ বছর বয়সী রোগীদের ক্ষেত্রে এই ক্যান্সার বেশী দেখা যায়। এছাড়া ৪০ বছরের নিচেও কোলন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
অতিরিক্ত লাল মাংস খাওয়া, খাদ্যতালিকায় আঁশজাতীয় খাবারের অনুপস্থিতি, ধূমপান ও মদ্যপান কোলন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ায়।
প্রাথমিকভাবে কোলন ক্যান্সার নির্ণয় করা একটু কঠিন। প্রথমদিকে রোগটির তেমন কোনো উপসর্গ বোঝা যায় না। কোলন বা মলাশয়ের কোন জায়গায় ক্যান্সার রয়েছে তার উপর ভিত্তি করে উপসর্গের বিভিন্নতা দেখা যায়। কোলন ক্যান্সার লক্ষণ হতে পারে পায়খানার সঙ্গে রক্ত যাওয়া। বয়স্ক মানুষের হঠাৎ করেই এরকম শুরু হলে কোলন ক্যান্সারের কথা মাথায় রাখতে হবে। পেটে ব্যথা থাকতে পারে। অধিকাংশ রোগী প্রথম এই সমস্যা নিয়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। মলত্যাগের অভ্যাস পরিবর্তন, ডায়রিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, রক্তশূন্যতা, দূর্বলতা, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি উপসর্গ নিয়েও রোগী আসতে পারে। ওজন কমে যায় এই ক্যান্সার হলে।
কোলন ক্যান্সার ডায়াগনোসিসের জন্য কোলন্সকোপি করে বায়োপসি করা হয়। বায়োপসির মাধ্যমে ক্যান্সার নির্ণয়ের পর সিটি স্ক্যান করে ক্যান্সারের ধাপ নির্ণয় করা হয়। রক্তে এন্টিজেন (ঈঊঅ) এর পরিমাণ নির্ণয় করেও ক্যান্সারের অবস্থা বোঝা যায় ।
কোলন ক্যান্সারের চিকিৎসায় অপারেশন করতে হয়। অপারেশনের আগে বা পরে কেমোথেরাপি দেওয়া হয়। কারও যদি কোলনে পলিপ থাকে তবে সেখান থেকেও ক্যান্সার হতে পারে। তাই প্রথম অবস্থায়ই সতর্ক হতে হবে। কারো যদি ইনফ্ল্যামেটরি বাওয়েল ডিজিজ যেমন আলসারেটিভ কোলাইটিস থাকে সেখান থেকেও ক্যান্সার হতে পারে। তাই যাদের দীর্ঘদিন ধরে রক্ত পায়খানা হয় এবং পেটে ব্যথা হয় তাদের পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে। ধূমপান কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই অবশ্যই ধূমপান ত্যাগ করতে হবে। যারা বেশি মদ্যপান করেন তাঁদের কোলন ক্যান্সার বেশি হয়। লাল মাংস কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায় । তাই লাল মাংস ত্যাগ করতে হবে। ফলমূল শাকসবজি বেশি খেতে হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন