মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

মহানগর

রাজশাহী নগরীতে স্বাভাবিক হয়নি বিদ্যুৎ সরবরাহ

প্রকাশের সময় : ২৫ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

রাজশাহী ব্যুরো : রাজশাহীর বিদ্যুৎ বিপর্যয় এখনো স্বাভাবিক হয়নি। নগরীর বেশিরভাগ এলাকা রয়েছে প্রায় বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা একেক এলাকা বিদ্যুৎবিহীন ছিল। কখনো বিদ্যুৎ এসেছে যেন ক্ষণিকের অতিথি হয়ে। প্রায় বিদ্যুৎ ছাড়া মানুষ দুটোদিন পার করছে। জনজীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ। রমজান মাসে স্মরণকালের ভয়াবহ বিদ্যুৎ বিপর্যয় সমস্ত কিছুকে বিপর্যস্ত করে ফেলেছে। এর সাথে ভ্যাপসা গরম পরিস্থিতিকে আরো অসনীয় করেছে। পানির সংকট চরম আকার ধারন করেছে।
নগরীতে পানি বলতে ওয়াসার পানি সরবরাহ। সেই ওয়াসার পাম্পগুলো ঠিকমত চালানো যাচ্ছে না বিদ্যুতের অভাবে। সেহেরী ইফতার তারাবীহ কোন সময়ে স্বস্তি মিলছে না। মসজিদে ওযুর পানি সংকট দেখা দিচ্ছে। মানুষ গোসলসহ গৃহস্থালি কাজের জন্য পানি পাচ্ছে না। গতকাল শুক্রবার ছুটির দিনেও স্বস্তি মেলেনি। দুরাত ধরে নির্ঘুম রাত পার করছে মানুষ। এসি আইপিএস কোন কিছু কাজে আসছে না। আইপিএসের চার্জ শেষ হয়ে যাওয়ায় আর রিচার্জ হয়নি। মোবাইল ল্যাপটপ ব্যবহারকারীদের অবস্থাও একই। আর মোবাইল ফোন কোম্পানী সিটিসেল দু’দিন ধরে নেটওয়ার্ক সমস্যার মধ্যে রয়েছে। ফলে এর গ্রাহকরা পড়েছেন বিপাকে। ঈদ বাজারে মন্দা চলছে। নগরীর প্রধান বাজার সাহেব বাজার এলাকায় গতকাল সকাল থেকে বিদ্যুৎ ছিল না। ছুটির দিন ভেবে যারা কেনাকাটায় এসেছিলেন তারাও পড়েন বিপাকে। গ্যাস চেম্বার হিসাবে খ্যাত আরডিএ মার্কেটের অবস্থা ছিল আরো খারাপ। একজন মহিলা ক্রেতাকে অসুস্থ হয়ে যেতে দেখা যায়। অন্ধকার আর গুমোট গরমের কারণে মার্কেটগুলোয় ঢোকা দায় ছিল। বিদ্যুৎবিহীন অবস্থা আর গুমোট গরমের কারণে ঘরে বাইরে কোথাও স্বস্তিতে ছিল না মানুষ। নগরীতে চলাচলের অন্যতম মাধ্যম ব্যাটারী চালিত অটো ও অটোরিক্সা। চার্জের অভাবে এগুলো সব রাস্তায় নামতে পারেনি। যা নেমেছিল তারা সুযোগ বুঝে ভাড়া আদায় করেছে বেশী। দর্জি বাড়ির কাজ কর্মে বিঘœ ঘটে। তাদের কাজ দু’দিনে অনেক পিছিয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বুধবার সন্ধ্যায় নগরীর উপকণ্ঠে কাটাখালি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে গ্রীডের ডিপ ইন্সুলেটর ও পর্টেন্সিয়াল ট্রান্সফরমার বিস্ফোরণ হয়। এরপর থেকে বন্ধ হয়ে যায় বিদ্যুৎ সরবরাহ। গত বৃহস্পতিবার দিনভর মেরামতের পর বিকেলের দিকে কিছু কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু হয়। তা ছিল অল্পক্ষণের জন্য। এ এলাকায় কিছুক্ষণ ও এলাকায় কিছুক্ষণ বিদ্যুৎ সরবরাহ করে পরিস্থিতি সামাল দেবার চেষ্টা করা হয়। সবচেয়ে বেশী বিপাকে ছিল হাসপাতাল পাড়া বলে খ্যাত ল²ীপুর এলাকা। চিকিৎসা ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়।
বেসরকারী হাসপাতাল ক্লিনিকগুলোতে অপারেশন হয়নি। ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোয় হয়নি পরীক্ষা-নিরীক্ষা। ফলে রোগীরা পড়ে ভোগান্তিতে। বিদ্যুতের এমন বেহালদশায় ক্ষুব্ধ নগরীর মানুষ। তাদের ক্ষুব্ধ মন্তব্য ছিল বিদ্যুৎ সেক্টরে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের পর কেন এ অবস্থা। টানা চব্বিশ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ এটা অকল্পনীয় ব্যাপার। এজন্য অব্যস্থাপনা ব্যবহার অনুপযোগী যন্ত্রপাতি পুরাতন তারকে দায়ী করছে বিজ্ঞজনরা।
বিদ্যুৎ বিভ্রাট শুধু নগরীতে নয়। আশপাশের উপজেলাগুলোর মানুষকে ভোগাচ্ছে। পল্লী বিদ্যুৎ চাহিদামত বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে না পারায় সেখানেও চলছে বিদ্যুতের যাওয়া আসার খেলা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন