ভোলার দৌলতখানে নদী ভাঙনে ভিটেহারা আড়াইশ’ পরিবার পেল নতুন ঠিকানা। ভবানীপুর ইউনিয়নের কালিয়া হাজারীর গুচ্ছগ্রামে মাথা গোঁজার ঠাঁই হলো এসব পরিবারের। মেঘনার প্রবল ভাঙনে ভিটেমাটি হারিয়ে পথে বসেছিলো এসব পরিবারগুলো। সেখানে তাদেরকে সরকারীভাবে পুনর্বাসন করা হয়েছে। দৌলতখানের ভবানীপুর ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত কালিয়া হাজারী মৌজাটি মেঘনার প্রবল ভাঙনে বিলীন হলে গেলে গৃহহীন হয়ে পড়ে অনেক পরিবার। একসময় কালিয়া হাজারী মৌজায় জেগে ওঠে নতুন চর। দীর্ঘ ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ভূমিদস্যুদের দখলে থাকা চরটি স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ আলী আজম মুকুল’র নির্দেশে ভবানীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম নবী নবু উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় ২০১৫ সালের শেষ দিকে চরটি দখলমুক্ত করে। সম্প্রতি সেখানে সরকারের আবাসন প্রকল্প-২ এর আওতায় ৫’টি গুচ্ছ গ্রাম নির্মাণ করা হয়। যেখানে মাথা গোঁজার ঠাঁই হলো বাস্তুহারা আড়াইশ’ পরিবারের ।
ভবানীপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা জয়নাল আবেদীন জানায়, ‘মেঘনার ভাঙনে ভিটেমাটি হারিয়ে আশ্রয়হীন পড়ি। কোথাও মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিল না। গুচ্ছগ্রামে ঘরের ব্যবস্থা হওয়ায় এখন পরিবার নিয়ে সুখে আছি।’ একই ইউনিয়নের ফরিদউদ্দিন জানায়, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের জন্য ঘরের ব্যবস্থা করেছে। গুচ্ছগ্রামে ঘর না পেলে পরিবার নিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করতে হত।আমরা প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোয়া করি।’ স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবী এখানে, প্রাথমিক বিদ্যালয়, কমিনিউটি ক্লিনিক, রাস্তা ও পুল কালভার্ট নির্মাণ করা জরুরী। এখনও স্থানীয় ভূমিদস্যুরা চরটি দখলে নিতে তৎপরতা চালাচ্ছে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দারা।
ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম নবী নবু বলেন, ‘দৌলতখানের ঐতিহ্যবাহী ইউনিয়ন হিসেবে পরিচিত ভবানীপুর । এখানে ৭০’র পর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কালিয়া হাজারী মৌজার জিরো পয়েন্টে এসে বেড়িবাঁধের কাজ উদ্বোধন করেন। সেই থেকে ভবানীপুর কালিয়া হাজারীর মৌজাটি ঐতিহ্য বহন করে। এখন সেখানে জাতির জনকের কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গৃহহীন পরিবারের জন্য ঘরের ব্যবস্থা করেছেন। তিনি বলেন, গুচ্ছ গ্রামে বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশনের ব্যবস্থা আছে। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় চরের বাসিন্দারা আতংকের মধ্যে থাকে । সেখানে সাইক্লোন শেল্টার নেই। একটি সাইক্লোন শেল্টার ও কমিউনিটি ক্লিনিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ করা হলে নিরাপদে থাকবে চরের বাসিন্দারা। ’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জীতেন্দ্র কুমার নাথ বলেন, ‘চরের মানুষের নিরাপদে বসবাসের জন্য সরকারীভাবে সবধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যাতে বাসিন্দারা সেখানে নির্বিঘ্নে বসবাস করতে পারে।’
স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ আলী আজম মুকুল ইনকিলাবকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের আমলে কোনো মানুষ গৃহহীন থাকবে না। যাদের ঘর নেই, সরকার তাদেরকে পুনর্বাসনের জন্য কাজ করছে। চরের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সেখানে খুব শিগগিরই কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করা হবে। ইতোমধ্যে চরাঞ্চলের মানুষের স্বাস্থ্যসেবার জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে একটি নৌ-এ্যম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করা হয়েছে। নদীর তলদেশে সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপনের মাধ্যমে জাতীয় গ্রিড থেকে চরের বাসিন্দাদের বিদ্যুৎ সুবিধা দেওয়া হবে। পর্যায়ক্রমে সবধরনের নাগরিক সুবিধা পাবে চরাঞ্চলের মানুষ। ’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন