পৃথক দুটি ঘটনায় দুই জনপ্রতিনিধিকে নগ্ন করে নারীদের সাথে মেলামেশার অশ্লীল ভিডিও ধারণের অভিযোগে সাতক্ষীরা-২ আসনের সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবির অ্যাম্বাসেডর (আমার এমপি ডট কম) ও জয়যাত্রা টেলিভিশনের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি আকাশ ইসলামকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় বাংলাদেশ প্রতিদিনের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি মনিরুল ইসলাম মনি, এশিয়ান টিভির সাতক্ষীরা প্রতিনিধি স ম তুহিনসহ মোট পাঁচজনের নামে পর্নোগ্রাফি আইনে দুটি মামলা হয়েছে।
গ্রেফতার আকাশ সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সাতক্ষীরা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্টেট আদালতে নগ্ন ভিডিও ধারণের পর ব্লাক মেইলিংয়ের দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে।
মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন, সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাদিকুর রহমান সাদিক ও সম্প্রতি পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত দীপ।
আদালত সূত্র জানায়, সাতক্ষীরা থানায় পর্নোগ্রাফি আইনে দায়ের করা ২৮নং মামলার বাদী একজন জনপ্রতিনিধি। তিনি দায়েরকৃত মামলার এজাহারে বলেন, আসামিরা তাকে এমটি রুমে ঢুকিয়ে নগ্ন করে নারী দিয়ে ভিডিও করে জোরপূর্বক টাকা আদায়ের চেষ্টা করে। এই মামলায় উক্ত ৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
অপর মামলার বাদীও একজন জনপ্রতিনিধি। এই মামলার ঘটনায়ও একইভাবে ঐ জনপ্রতিনিধিকে নগ্ন করে ভিডিও করার অভিযোগ করা হয়েছে এবং ঐ ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তার কাছে থেকে ৪ লাখ টাকা আদায় করা হয়। এই মামলার আসামি আকাশ ও সাদিক। এই মামলায় আকাশ আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার) ইলতুৎমিশ জানান, গ্রেফতারকৃত আসামি আকাশ ইসলামের নিকট থেকে বেশকিছু পর্নোগ্রাফি উদ্ধার করা হয়েছে। তারা দীর্ঘদিন ধরে জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণির মানুষকে প্রতারণার মাধ্যমে ভিডিও ধারণ করে অর্থ আদায় করে আসছিল। আকাশ ইসলাম আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে বলে তিনি জানান ।
এদিকে, একটি বিশ^স্ত সূত্র জানিয়েছে, নগ্নভিডিও ধারণ করে ব্লাক মেইলিংয়ের একটি চক্রটি ইতোমধ্যে জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে ফাঁদে ফেলে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
অর্থ লোভে দেশের বিভিন্ন এলাকাকে নারীদের ভাড়া করে আনতো তারা। এমনকি নিজেদের বউকেও লেলিয়ে দিত টার্গেটেড জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ব্যবসায়ীদের দিকে। এরপর সুবিধামত সময়ে ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাঁস করে দেওয়ার নামে চাইতো মোটা অংকের টাকা।
এসব কিছুর প্রামাণ্য তথ্য উপাত্ত এখন পুলিশের হাতে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন