শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৮ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বঙ্গবন্ধুর লাশ পড়ে থাকল কোথায় ছিল এত নেতা

আজও উত্তর খুঁজে পাননি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:০২ এএম | আপডেট : ১২:০৮ এএম, ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৯

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দলের নেতাকর্মীদের প্রশ্ন রেখে বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যা করা হল, এত বড় একটা ঘটনা বাংলাদেশের কি কেউ বা কোন লোক জানতে পারলো না, কোন পদক্ষেপ নিলো না, কেন ওই লাশ পড়ে থাকলো ৩২ নম্বরে? সে উত্তর এখনও আমি পাইনি। এত বড় সংগঠন, এত নেতা কোথায় ছিল? মাঝে মাঝে আমার এটা জানতে ইচ্ছে করে, কেউ সাহসে ভর দিয়ে এগিয়ে এলো না কেন?

গতকাল মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাঝে মাঝে আমার এটা জানতে ইচ্ছে করে যে কেউ সাহস করে এগিয়ে আসতে পারলো না। বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ তো শেখ মুজিবের সঙ্গে ছিলো। এই ব্যর্থতার খেসারত দিয়ে হয়েছে জাতিকে। কারণ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর এ দেশে বারবার ক্যু হয়েছে। ১৮-১৯টা ক্যু হয়েছে এই দেশে। অত্যাচার নির্যাতন চলেছে আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর। সেসময় যদি কেউ সাহস করে দাঁড়াতো তাহলে এত অত্যাচার হতো না, বারবার ক্যু হতো না।
বারবার ক্যু হয়ে দেশকে সম্পূর্ণ ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে দাবি করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, যে বাংলাদেশ হবে উন্নত সমৃদ্ধ সে বাংলাদেশ ধীরে ধীরে ধ্বংসের দিকে চলে গিয়েছিল। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার জাতির পিতা শুরু করেছিলেন, বিচারের হাত থেকে রেহাই দিয়ে তাদের বসানো হয়েছিল ক্ষমতায়।

শেখ হাসিনা আরো বলেন, আমার মাঝে মাঝে অবাক লাগে সে নয়টা মাস, একাকী পাকিস্তানের কারাগারে বন্দী। একটি বৈরী পরিবেশ, বৈরী আবহাওয়া, সেখানে যেমন গরম তেমন শীত, তাকে কীভাবে রেখেছিল, কী খেতে দিয়েছিল সেটা কল্পনাও করা যায় না। যাকে তারা ফাঁসি দিয়ে হত্যা করবে তাকে তারা কত কষ্ট দিতে পারে সেটা চিন্তা করে দেখেন। কিন্তু তার ভেতরে যে বিশ্বাস ছিল সে আত্মবিশ্বাস তাকে সেই ভাবে দৃঢ় করে রেখেছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাত্র সাড়ে তিনটা বছর তিনি হাতে সময় পেয়েছিলেন। এই সাড়ে তিন বছরের তিনি যুদ্ধের ভয়াবহতা কাটিয়ে বাংলাদেশকে স্বল্প উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে দিয়ে গিয়েছিলেন। কি না করে দিয়েছিলেন, প্রতিটি কাজের ভিত্তি গড়ে দিয়ে গিয়েছিলেন। একটি সংবিধান পর্যন্ত তিনি আমাদের দিয়ে গিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য বাংলাদেশ যখন যুদ্ধবিদ্ধস্ত অবস্থা কাটিয়ে অর্থনৈতিক অগ্রগতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল ঠিক সেসময় তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হলো। আসলে তাকে একা নয় শুধু। আমাদের পরিবারের সকলকে আমাদের আত্মীয় পরিজন, আমাদের মেজ ফুফুর বাড়ি সেজো ফুফুর বাড়ি, ছোট ফুফুর বাড়ি সব বাড়িতেই তারা হানা দিয়েছে।

এসময় তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ইঙ্গিত করে বলেন, আমাদের লক্ষ্য আমরা দারিদ্র মুক্ত করবো, দারিদ্রের হার আমরা নামিয়ে আনবো। যে দেশ বলেছিলো বাংলাদেশ স্বাধীন হলে একটি তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত হবে। সেদেশের দারিদ্রের হার ১৮ শতাংশ, আমার লক্ষ্য হচ্ছে ওই হার ১৮ শতাংশ থেকে এক শতাংশ হলেও কম করব।
বাংলাদেশ সব সময় পাকিস্তানের আগে থাকবে জানিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, পাকিস্তান থেকে আলাদা হয়ে বাংলাদেশকে আমরা স্বাধীন করেছি। অর্থনৈতিকভাবে, সামাজিকভাবে, নীতি আদর্শিকভাবে যেভাবেই হোক ওই পাকিস্তানের ওপর আমরা থাকবোই। সত্যি আজ আমরা তা আছি। সকলের থেকে ভালো অবস্থানে আমরা আছি আজ। কিন্তু এটা ধরে রাখতে হবে।

এসময় তিনি সতর্ক করে বলেন, নইলে ওই পাকিপ্রেমী যারা বিদেশেই থাক আর জেলখানাতেই থাক তাদের চক্রান্ত কিন্তু থাকবেই। আমাদের জাতির পিতার সেই কথাটি মনে রাখতে হবে, ৭ কোটি বাঙালিকে কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবা না। আর এখন তো আমরা ১৬ কোটি। মুষ্টিমেয় দালাল হয়তো থাকতে পারে কিন্তু এই বাঙালিকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারেনি, পারবে না।
স্বাধীনতার জন্য মুক্তি সংগ্রামে আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ১৭৫৭ সালে পলাশীর আম্রকাননে নবাব সিরাজ-উদদৌলাকে কূটচালে লর্ড ক্লাইভ পরাজিত করে এবং বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হয়। ঠিক সেই সূর্য উদিত করার জন্যই ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন ঢাকার রোজ গার্ডেনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা লাভ করে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
ash ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১:১৭ এএম says : 0
ORA TOKHON ............................... SILO !
Total Reply(0)
** হতদরিদ্র দিনমজুর কহে ** ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১১:১৫ এএম says : 0
প্রতিবাদ করার হিম্মত দেখায়নি।এখন ও তারা ই পদ পদবীতে আসিন।এই সুযোগ সন্ধ্যানী নেতাদেরই বাড়বাড়ন্ত।এদের চিনতে হবে।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন