‘কুয়ালালামপুর সামিট-২০১৯’এ অংশ নিতে মালয়েশিয়া পৌঁছেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ড. হাসান রুহানি। দেশটির প্রধানমন্ত্রী ডা. মাহাথির মোহাম্মাদের আমন্ত্রণে এ সফর করছেন তিনি। বুধবার রাতে মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে পৌঁছান হাসান রুহানি। চারদিনের এ সম্মেলনে মুসলিম বিশ্বের সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মতবিনিময়ের কথা রয়েছে। সম্মেলনে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগান ও কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আলে সানি ও ইন্দোনেশিয়ার জুকো উইদোদোও অংশ নেবেন।
১৮ থেকে ২১ ডিসেম্বর ‘কুয়ালালামপুর সামিট-২০১৯’ নামে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনের এজেন্ডা হিসেবে গুরুত্বসহকারে থাকছে উন্নয়ন ও সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা ও সুশাসন, সংস্কৃতি ও পরিচয়, ন্যায়বিচার ও স্বাধীনতা, শান্তি-সুরক্ষা ও প্রতিরক্ষা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ এবং প্রযুক্তি ও ইন্টারনেট ব্যবস্থাপনা এ সাতটি বিষয়।
কুয়ালামপুর সম্মেলনের জন্য কোনো এজেন্ডা ঘোষণা করা না হলেও এখানে মধ্যপ্রাচ্য ও কাশ্মীরের পুরনো বিরোধগুলো, সিরিয়া ও ইয়েমেনের যুদ্ধ, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিমদের অবস্থা এবং শিংজিয়াংয়ের উইঘুর মুসলিমদের নিয়ে চীনের শিবির পরিচালনা করার মতো বিষয়গুলোর পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী ইসলামভীতি ছড়িয়ে পড়া রোধকল্পে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তা নিয়েও আলোচনা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গত মাসে ‘কুয়ালালামপুর সামিট-২০১৯’ নামে তুরস্ক, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া এবং কাতারকে সঙ্গে নিয়ে নতুন এক পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছিলেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মাদ।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের এ সম্মেলনে অংশ নেয়ার কথা থাকলেও গতকাল জানিয়েছেন, তিনি সম্মেলনে অংশ নিতে পারছেন না।
একটি সূত্র জানিয়েছে, সৌদি আরবের চাপের মুখে কুয়ালালামপুর সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন না ইমরান খান। ওই সম্মেলনে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের শীর্ষ নেতৃত্ব আমন্ত্রিত না হওয়ায় এই দু'টি দেশ ক্ষুব্ধ হয়েছে।
সূত্রটি আরও বলছে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী এই সম্মেলনে অংশ নিতে রাজি হওয়ায় সৌদি আরব অসন্তোষ প্রকাশের পর ইমরান খান রিয়াদ সফরে যান। সৌদি থেকে ফিরেই তিনি কুয়ালালামপুর সম্মেলনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত জানান।
কুয়ালালামপুর সামিটকে সৌদি সরকার শুরু থেকেই ভালোভাবে দেখছে না বলে জানা গেছে। এই সামিট মুসলিম বিশ্বে রিয়াদের প্রভাব আরও হ্রাস করবে বলে সৌদি আরব মনে করছে।
মালয়েশিয়া ওআইসি’র বিকল্প শক্তি গড়ে তুলতে চাইছে, সৌদি আরবের পক্ষ থেকে এমন প্রচারণা চালানো হয়েছে । তবে এ ধরণের সব জল্পনাকে উড়িয়ে দিয়েছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মাদ।
বিশ্বের ১৭৫ কোটি মুসলিমের ইস্যু নিয়ে আলোচনার জন্য এই সম্মেলন সঠিক ফোরাম নয় বলে দাবি করেছে সৌদি আরব।
এসব ইস্যু ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) মাধ্যমে আলোচিত হওয়া উচিত, মঙ্গলবার এক ফোনালাপে সৌদি বাদশা সালমান বিন আবদুল আজিজ মাহাথিরকে এমনটি বলেছেন বলে জানিয়েছে সৌদির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা এসপিএ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন