মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের ৩টি নৌযান ক্রয় কোন দুনীতি হয়েছে কিনা তা তদন্তের নিদেশ দিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার (তদন্ত) এ এফ এফ আমিনুল ইসলাম । মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় অনুষ্ঠিত গণশুনানী শেষে এই তদন্তের নিদেষ দেন । এসময় তিনি বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে চাই। জনগণই আমাদের প্রতিনিধি। জনগণ যেখানে দুর্নীতি দেখবে সেখানেই প্রতিরোধ ও প্রতিবাদ করবে। আমাদের একটি টোল ফ্রি ১০৬ হটলাইন আছে। সেখানে গত দুই বছরে ৩৫ লাখ অভিযোগ পেয়েছি।
গণশুনানীতে সরাসরি মুখোমুখী অবস্থানে অংশ নেয় সেবা গ্রহীতা ও সেবাপ্রদানকারী প্রতিষ্ঠান । এ গনশুনানীতে উঠে আসে সেবা প্রদানকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দূর্নীতি অনিয়ম ও হয়রানীর নানা চিত্র। বিশেষ করে বন্দর কর্তৃপক্ষের ক্রয়কৃত হাই স্পীট বোর্ড, জলযান, ইকুপমেন্ট, ড্রেজিং সহ কাষ্টমর্সের বিভিন্ন অনিয়মও আলোচনায় আসে । আর উত্থাপিত ওই সকল অনিয়ম প্রসঙ্গে বাস্তব অবস্থার ব্যাখা প্রদান করেন বন্দরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা।
গণশুনানীতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আফসানা ইয়াসমিন, বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মোঃ মামুনুর রশিদ, দুদক খুলনার পরিচালক মোঃ আব্দুল গফ্ফার, মংলা কাস্টম্স কমিশনার সুরেশ চন্দ্র বিশ্বাস ও বাগেরহাটের পুলিশ সুপার পঙ্কজ চন্দ্র রায়। এছাড়া মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ’র সদস্য প্রকৌশলী মোঃ আলতাপ হোসেন, উপজেলা চেয়ারম্যান আবু তাহের হাওলাদার, প্রকৌশলী শওকত হোসেন, মংলা প্রেসক্লাব সভাপতি এইচ এম দুলাল বক্তব্য রাখেন।
গণশুনানিতে মংলা বন্দরের ট্রাফিক বিভাগ কর্তৃক ষ্টিভেডর লাইসেন্স প্রদান বন্ধ, সিবিএ কর্তৃক নিয়োগ বানিজ্য, অর্থ ও হিসাব বিভাগের উৎকোচ গ্রহণ, সিভিল ও হাইড্রোলিক্স বিভাগ কর্তৃক ঠিকাদারী কাজে ঘুষ গ্রহণ, যান্ত্রিক ও তড়িৎ বিভাগ কর্তৃক মোবাইল হারবার ক্রেন ক্রয়ে দুর্নীতি, স্পীড বোট ক্রয়ে দুর্নীতি, কাস্টম্স কর্তৃক কনটেইনারের কায়িক পরীক্ষায় বিভিন্ন ধাপে ঘুষ গ্রহণসহ বিভিন্ন দপ্তরের দুর্নীতি এবং অনিয়মের ২৭টি অভিযোগ উত্থাপিত হয়। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রধানগণ অভিযোগের জবাব দেন। দুদক কমিশনার এ এফ এম আমিনুল ইসলাম অভিযোগের বিষয় তাৎক্ষণিক দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।
শুনানী শেষে দুদক কমিশনার (তদন্ত) এএফ এম আমিনুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, আমাদের দেশের সাধারণ মানুষ সহজসরল। আর এ সহজসরল মানুষ যাতে যাতে সচেতন করতে এ শুনানীর আয়োজন করা হয়েছে। এতে সেবা প্রত্যাশীরা হয়রানী ছাড়াই নিজেরাই নিজেদের দৈনন্দিন কাজ করতে উদ্ভুদ্ধ হবেন। বন্দরের বিভিন্ন নৌযান ক্রয় দূর্নীতির বিষয় তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে । এ লক্ষে কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনীয় নথি তলব সহ আগামী জানুয়ারীর মধ্যে সুস্পষ্ট ব্যাখা চাওয়া হয়েছে বলেও জানান দুদকের এ কর্মকর্তা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন