লোহাগড়ায় বখাটের উৎপাতে অতিষ্ঠ হয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে ছয়দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে মারা গেছে এক শিক্ষার্থী। আত্মহত্যাকারী স্কুলছাত্রীর নাম খাদিজা খানম (১৩)। সে উপজেলার পাংখারচর গ্রামের সেলিম সরদারের মেয়ে। গত শুক্রবার খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সে মারা গেছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে,পুলিশ ঘটনার মূলহোতা ঈমাম শেখকে (১৮) আটক করেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ইতনা ইউনিয়নের উত্তর পাংখারচর গ্রামের সেলিম সরদারের মেয়ে ও শতদল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর মেধাবী ছাত্রী খাদিজা খানমকে স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে একই গ্রামের কামাল শেখের বখাটে ছেলে ঈমাম শেখ প্রায়ই উত্ত্যক্ত করত। এ নিয়ে খাদিজার পরিবার ঈমাম শেখের অবিভাবকের কাছে একাধিকবার নালিশ করেছে। কিন্তু তাতে কোন কাজ হয়নি।
গত রোববার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে খাদিজা বাড়ীর পাশ্ববর্তী পুকুরে পানি আনতে গেলে বখাটে ঈমাম শেখ তার পথরোধ করে উত্ত্যক্তসহ অশ্লীল কথাবার্তা বলে এবং শ্লীলতারহানি ঘটায়। এ ঘটনায় খাদিজা বাড়ি ফিরে নিজ ঘরের ফ্যানের সাথে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। ঠিক পেয়ে পরিবারের লোকজন মুমূর্ষ অবস্থায় দ্রুত তাকে উদ্ধার করে লোহাগড়া হাসপাতালে নিয়ে আসে।
সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ওই দিনই খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয় । সেখানে ছয় দিন আইসিইউতে চিকিৎসাধীন থাকার পর গত শুক্রবার খাদিজার মৃত্যু হয়। ওই দিনই খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার ময়না তদন্ত শেষে বাড়িতে এনে জানাজা শেষে শুক্রবার রাতেই পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এদিকে খাদিজার শ্লীলতাহানির অভিযোগে গত ৩০ ডিসেম্বর তার পিতা সেলিম সরদার বাদী হয়ে বখাটে ঈমাম শেখ ও তার সহযোগী নবীর শেখ ও সজিব শেখকে আসামি করে লোহাগড়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।
ওই দিনই পুলিশ অভিযান চালিয়ে বখাটে ঈমাম শেখকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণ করে। খাদিজার পিতা সেলিম সরদার বলেন, আমি এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন জানান, খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে এবং রাতেই জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে খাদিজাকে দাফন করা হয়েছে। মামলার অপর আসামিদের আটকের চেষ্টা চলছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন